|
|
|
|
সজলধারা নিয়ে বিবাদ, পাঁচ বাড়ি ভাঙচুর কালনায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা |
সজলধারা প্রকল্প পরিচালনার ভার পাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে হামলা হল পাঁচটি বাড়িতে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কালনা ২ ব্লকের মহেশ্বরপুর গ্রামে। তৃণমূলের অভিযোগ, বেছে বেছে তাদের সমর্থকদেরই বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য সিপিএমকেই দায়ী করেছে তারা। সিপিএমের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, দুই গ্রামের বিবাদেই এমন ঘটেছে। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাস পাঁচেক আগে মহেশ্বরপুর গ্রামে একটি সজলধারা প্রকল্প গড়ে ওঠে। পাশের গ্রাম মোমিনপুরের বাসিন্দারাও এই প্রকল্পের জল পান। প্রকল্পের জন্য গড়া কমিটিতে রয়েছেন দুই গ্রামেরই প্রতিনিধি। মোমিনপুরের হান্নান মণ্ডল নামে এক বাসিন্দা এই প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় প্রকল্পের ব্যাপারে মহেশ্বরপুরে একটি বৈঠক বসে। সেখানে ঠিক হয়, হান্নান মণ্ডলের বদলে এ বার থেকে প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে মহেশ্বরপুরের একটি ক্লাব। এ নিয়েই দুই গ্রামের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।
মহেশ্বরপুরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পরে এ দিন সকালে মোমিনপুরের কিছু লোকজন সংলগ্ন দফরপুর গ্রামের কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে এসে পাঁচটি বাড়িতে হামলা চালায়। বুধবারের বৈঠকে হাজির থাকা মহেশ্বরপুরের তৃণমূল কর্মী গোপীকিশোর কুমারের অভিযোগ বলেন, “আমার বাড়ির জানলা-দরজা ভাঙচুর করেছে। আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। প্রায় আড়াইশো লোক এসেছিল হামলা করতে।” তিনি দাবি করেন, বৈঠকে বাদানুবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
এ দিকে, তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের নেতৃত্বেই এমন হামলা হয়েছে। বেছে বেছে তাদের সমর্থকের বাড়িতেই হামলা করা হয়েছে। কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায় বলেন, “ওই বৈঠকে আমাদের লোকজন সিপিএমের দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছিল। আনুখাল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম উপপ্রধান আলিম মণ্ডল গাছ বিক্রির এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা আটকে রেখেছেন। এ ব্যাপারে সরব হওয়াতেই সিপিএমের লোকজন আমাদের কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়েছে।” আনুখাল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম উপপ্রধান আলিম মণ্ডল, বর্তমান উপপ্রধান আবদুল্লা শেখের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সিপিএমের কালনা ১ পূর্ব লোকাল কমিটির সম্পাদক মহম্মদ আলি অবশ্য বলেন, “কাল যে বৈঠক হয় সেখানে আমাদের দলের দুই প্রতিনিধি ছিলেন। কিন্তু পরিচালনার দায়িত্বের হাতবদলে তাঁরা চাপের মুখে রাজি হন। মোমিনপুর গ্রামের লোকজন এই সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না। দুই গ্রামের মনোমালিন্যেই এমন ঘটনা ঘটেছে।” তাঁর দাবি, “ঘটনাটি অরাজনৈতিক। বাড়ির দরজা-জানলায় ধাক্কা দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। ভাঙচুরের অভিযোগ মিথ্যা।” আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।” অভিযুক্ত আবদুল্লা শেখ বলেন, “ঘটনার সময়ে আমি এলাকাতেই ছিলাম না।” তিনি পাল্টা দাবি করেন, তৃণমূলের অর্ন্তদ্বন্দ্বেই এমন ঘটনা। আলিম মণ্ডল বলেন, “কাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।” টাকা আটকে রাখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কে গ্রামের দু’জনের নামে একটি অ্যাকাউন্টে গাছ বিক্রির টাকা রাখা আছে। আমি কোনও টাকা আটকে রাখিনি।”
কালনা থানার পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তদন্ত চলছে। |
|
|
|
|
|