প্রায় রোজই বেশ কিছু মানুষ হারিয়ে যাচ্ছেন। যাঁদের অনেকের আর কোনও খোঁজ মিলছে না। এবং নিখোঁজের সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। তাঁদের সন্ধানে পুলিশি উদ্যোগে ঘাটতির অভিযোগেরও শেষ নেই।
এই সমস্যার দিকে এ বার নজর দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নতুন সরকার। প্রতিটি নিখোঁজ ব্যক্তির হদিস যাতে পাওয়া যায়, সে জন্য জেলায় জেলায় পৃথক ব্যুরো খুলছে রাজ্য পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ নির্দেশে স্বরাষ্ট্র দফতর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে শীঘ্রই সরকারি আদেশনামা জারি হবে বলে মহাকরণ-সূত্রের খবর।
স্বরাষ্ট্র দফতরের হিসেবে, গত দু’বছরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ এলাকা থেকে অন্তত ৩০ হাজার জন নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন। এঁদের সিংহভাগ শিশু ও মহিলা। স্বরাষ্ট্র-সূত্রের আশঙ্কা, নিখোঁজ ওই মহিলাদের অনেকেই আন্তঃরাজ্য নারী পাচারচক্রের খপ্পরে পড়েছেন। পাশাপাশি শিশুপাচার চক্রও সমান সক্রিয়। মুক্তিপণের লোভে শিশু অপহরণের ঘটনাও ঘটছে আকছার।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে মমতা নিরুদ্দেশ ব্যক্তিদের সন্ধানে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র দফতরকে। দফতর এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করে। তার পরে মমতার নির্দেশে দ্রুত কাজ শুরু হয়। নিখোঁজদের তল্লাশি চালাতে প্রতি জেলায় আলাদা ব্যুরো তৈরি হচ্ছে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হলেই তা চলে যাবে ব্যুরোয়। সেখানে থাকবেন ওই কাজের জন্য বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মী ও অফিসারেরা। এ জন্য ২০৭ জনকে নিয়োগ করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র-সূত্রের খবর: এখন শুধু কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য গোয়েন্দা-পুলিশ (সিআইডি)-এর সদরে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান করার জন্য আলাদা স্কোয়াড (মিসিং পার্সনস স্কোয়াড) রয়েছে। জেলা থেকে নিখোঁজ ডায়েরিগুলো বাছাই করে সিআইডি-র স্কোয়াডে পাঠানো হয়ে থাকে। তার পরে সংবাদমাধ্যমে ছবি-সহ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, ‘সময় ও লোকাভাবের’ যুক্তিতে নিখোঁজ ডায়েরি পুলিশের কাছে সে ভাবে গুরুত্ব পায় না। প্রশাসনিক চাপ-প্রভাব বা কোর্টের নির্দেশে কিছু ঘটনার তদন্ত হয়, অধিকাংশ ডায়েরির কিনারা হয় না। স্বরাষ্ট্র-সূত্রের মতে, নতুন মুখ্যমন্ত্রী ব্যাপারটা আগে থেকেই
বিলক্ষণ জানতেন। তাই তিনি এ ব্যাপারে এতটা উদ্যোগী হয়েছেন। নয়া ব্যবস্থায় প্রতিটি নিখোঁজ ডায়েরিকে মামলায় রূপান্তরিত করে তদন্ত করবেন ব্যুরোর প্রশিক্ষিত অফিসারেরা।
আপাতত জরুরি ভিত্তিতে জেলায় জেলায় নিখোঁজ ব্যুরোর পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এসপি-দের কাছে। |
রাজ্যে এখন উচ্চশিক্ষার অবস্থা কী, কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নতি করা দরকার ইত্যাদি বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট দেবে উচ্চশিক্ষা দফতরের উপদেষ্টা কমিটি। তার আগে এ সব ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানাবেন কমিটির প্রত্যেক সদস্য। সেই মতামত বিবেচনা করে একটি সামগ্রিক রিপোর্ট তৈরি করবেন উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান। শুক্রবার বৈঠকে বসে ওই কমিটি। পরে কমিটির চেয়ারম্যান সুনন্দ সান্যাল বলেন, “তিন মাসের মধ্যে উচ্চশিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই ২৪-২৫ দিন কেটে গিয়েছে। অত্যন্ত দ্রুত কাজ করতে হবে।” তিনি জানান, যে-কোনও ধরনের সুপারিশ করতে হলে রাজ্যে উচ্চশিক্ষার চিত্রটা ঠিক কী, তা জানা দরকার। তাই উচ্চশিক্ষা দফতর একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করছে। সেই তথ্য পাওয়ার পরে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ তৈরি করবে উপদেষ্টা কমিটি।
৬ হাই মাদ্রাসায় উচ্চ মাধ্যমিক
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সমস্যা মেটাতে রাজ্যের আরও ছ’টি হাই মাদ্রাসাকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলের ছ’টি স্কুলকে দশম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নীত করা হচ্ছে। শুক্রবার মহাকরণে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে চারটি হাই মাদ্রাসাকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে এ বার ১০টি হাই মাদ্রাসা দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নীত হল। |