|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা
রুদ্ধ সরণি |
টার্মিনাসের জটে |
প্রসেনজিৎ পাঠক |
রাস্তায় যানজট। কারণ, রাস্তা লাগোয়া বাস টার্মিনাস। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, নাগেরবাজারের ২২১ নম্বর বাস টার্মিনাসের জন্য প্রতি দিনই কার্যত রুদ্ধ হয়ে পড়ছে লাগোয়া নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের প্রবেশ পথ। জট ছাড়ানোর জন্য থাকছেন না পুলিশ বা পুরসভার কর্মী।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দমদম স্টেশন রোডটি প্রায় সমকোণে মিশেছে যশোহর রোডে। এই সংযোগস্থলের উত্তর দিকে রাস্তার ধারেই রয়েছে ২২১ বাস টার্মিনাস। টার্মিনাসের সামনের দিকে রয়েছে দমদম রোড আর পিছনে যশোহর রোড। যশোহর রোডের দিক থেকে বাসগুলি টার্মিনাসে প্রবেশ করে। বেরোয় দমদম রোডের দিক দিয়ে। |
|
এই টার্মিনাস থেকে ২২১ নম্বর রুটের ৩৪টি গাড়ি, ২০২ নম্বর রুটের ৩৩টি গাড়ি এবং হাওড়াগামী কিছু মিনিবাসও ছাড়ে। কিন্তু এতগুলি বাসের জন্য রয়েছে মাত্র ৫টি চ্যানেল। এই ৫টি চ্যানেলে এক সঙ্গে দশটির বেশি গাড়ি দাঁড়াতে পারে না। তা ছাড়া জেএনএনইউআরএম অনুমোদিত বাসগুলি আয়তনে বড়। ফলে স্থানসংকুলানে সমস্যা বাড়ে। এখান থেকে বাস ঢোকা-বেরনোর সময়েই যানজট হয়।
প্রতি বার যশোহর রোডের দিক থেকে টার্মিনাসে ঢোকার জন্য বাসগুলিকে ব্যবহার করতে হয় নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের মুখ। ফলে যান আটকে যায়। এক সঙ্গে বেশি বাস এলে সমস্যা বেড়ে যায়।
নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের উত্তর দিকে গোরাবাজার, সেন্ট্রাল জেল এবং আর এন গুহ রোডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এই রাস্তায় প্রায় সারা দিনই চাপ থাকে। প্রচুর সাইকেল, বাইক আর রিকশাও চলে। অনেক সময়ে বাসের সংখ্যা বাড়লে রাস্তার উপরেই বাস দাঁড়িয়ে যায়। তখন চলাচলের উপায় থাকে না।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, প্রতি দিন সকালে বাসগুলি টার্মিনাসে পৌঁছলেই নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ে আটকে যায়। সারাদিনই দফায় দফায় এ রকম চলে। টার্মিনাসের উত্তর দিকে নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের মুখে রয়েছে নাগেরবাজার উড়ালপুল নির্মাণকারী সংস্থার গুদাম। দিনের মধ্যে বেশ কয়েক বার উড়ালপুল নির্মাণকারী সংস্থার ক্রেন এসে দাঁড়ায় গুদাম থেকে ভারী যন্ত্রপাতি নেওয়ার জন্য। ওই সময়ে টার্মিনাসের মুখে বাসগুলি দাঁড়ালে অবস্থা সঙ্গিন হয়ে ওঠে। অনেক সময় জট ছাড়াতে পথচারীদেরই নামতে হয়। |
|
পথচারী শ্যামল বসুর কথায়: “নরসিংহ অ্যাভিনিউতে ঢোকার মুখে এক দিকে, রিকশাগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। অন্য দিকে, বাসের পিছনের অংশ রাস্তা আটকে থাকে। এই সময় অ্যাম্বুল্যান্স বা দমকলের গাড়িও যেতে পারে না। দিনে বেশ কয়েক বার এই যানজট হয়। টার্মিনাসের অদূরেই নাগেরবাজার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ থাকে। কিন্তু এই টার্মিনাসের যানজট ছাড়াতে পুলিশ বা পুরকর্মীরা থাকেন না। যার জেরে ভোগান্তি হয় নরসিংহ অ্যাভিনিউয়ের অসংখ্য নিত্যযাত্রী আর পথচারীর।” এলাকার চিকিৎসক কৌশিক পাত্র বললেন, “আমি নিজেও বেশ কয়েক বার অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছি।”
২২১ নম্বর রুটের বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক চঞ্চল মণ্ডল বলেন, “সমস্যা মাঝেমধ্যে বড় আকার নেয়। যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য চালকদের বলব।” ২০২ রুটের বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক পার্থ দাস বলেন, “সব ক’টি রুটের কর্মীদের সহযোগিতা নিয়েই কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না দেখছি।” ২০২, ২২১ ও মিনিবাস কর্মী সংগঠনের সম্পাদক বাপি মিত্র বলেন, “২০২ রুট ছোট হয়ে যাওয়ায় অনেকগুলি গাড়ি এক সঙ্গে ঢুকে পরে। ফলে যানজট হয়। যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য কর্মীদের পক্ষে যা করণীয় করব।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন তৃণমূলের অঞ্জনা রক্ষিত বলেন, “টার্মিনাসের যানজট নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। উড়ালপুল নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।” জেলা পুলিশসূত্রে খবর, পুলিশকর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে সমস্যা থাকলেও ওখানে পুলিশের ব্যবস্থা করা কঠিন।
|
ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|