বাড়ি ভেঙে কাঁঠাল খেল হাতি
ধান পাকলে বুনো হাতির পাল জঙ্গল থেকে বার হয়ে হানা দেয় গ্রামে। ভুট্টার মরসুমেও হানা দেয় বুনো হাতির পাল। এমনকী, গাছে কাঁঠাল পাকলেও রেহাই নেই বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে ডুয়ার্সের কুমারগ্রামের পুখুরি গ্রামের সুরেশপল্লি এলাকায়। একটি দলছুট বুনো মাকনা ওই গ্রামে হানা দিয়ে তিনটি বাড়িতে ভাঙচুর করে মজুত করা ধান, চালের পাশাপাশি গ্রামের একটি গাছের কাঁঠালও খেয়ে নেয়। শেষ পর্যন্ত তিতিবিরক্ত বাসিন্দারা ভোরের দিকে দল বেঁধে তাড়া দিলে মাকনা হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কুমারগ্রাম রেঞ্জের অফিসার জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “হাতির হানা ঠেকাতে চেষ্টা হচ্ছে।
ছবিটি তুলেছেন রাজু সাহা।
কুলকুলির জঙ্গল থেকে বার হয়ে আসা হাতিটি সুরেশপল্লিতে যে ক্ষতি করেছে, বাসিন্দাদের তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত অবশ্য মনে করেন, জঙ্গলে খাদ্যাভাবের জন্যই এমনটা ঘটছে। তিনি বলেন, “চতুর্দিকে জঙ্গল ধ্বংস হচ্ছে। তাতেই হাতিদের খাবারে টান পড়েছে। চালতা, গাব, কাঁটাল, ঢেড্ডা, পুণ্ডি, মালসা জাতীয় গাছের সংখ্যা কমছে। ফলে হাতিদের খাদ্যাভ্যাসেও বদল হচ্ছে। হাতি-মানুষ সংঘাত বাড়ছে।” বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতাও তেমনই। কালচিনি, রাজাভাতখাওয়া, কুমারগ্রাম এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ইদানিং সারা বছরই গ্রামে ঢুকছে বুনো হাতির পাল। একটি বুনো হাতির দল বক্সা ছেড়ে জলদাপাড়ায় গেলে অন্য একটি দল ঢুকছে। দিনভর জঙ্গলে কাটানোর পরে রাত নামলেই বুনো হাতির পাল বার হয়ে আসছে গ্রামে। বর্ষার এই মরসুমে ঘরে মজুত ধান ছাড়া কৃষকের সম্বল তেমন কিছু নেই। বুনো হাতির পাল গ্রামে ঢুকে ঘর ভেঙে ওই ধান খেয়ে নিচ্ছে। তার সঙ্গে গ্রামের গাছ থেকে ছিঁড়ে খাচ্ছে কাঁঠাল। সুরেশপল্লি গ্রামের বাসিন্দা নেপাল বর্মন বলেন, “রাতে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও বেড়া ভাঙার আওয়াজ শুনেই বুঝে যাই বুনো হাতি ঢুকেছে। কোনও রকমে বউ, ৩ ছেলেমেয়েকে ঘুম থেকে তুলে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাই। নিমেষের মধ্যে মাকনা হাতিটা আমার ঘরের দেড় মণ ধান খেয়ে নিল। ভাইয়ের গাছ থেকে কাঁঠাল খেল। শেষে গ্রামের লোকেরা মশাল নিয়ে আসার পরে হাতিটা পালাল।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামে বুনো হাতি ঢোকার পরে বন দফতরে খবর দেওয়া হলেও বনকর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না। তাঁদেরই রাতভর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হাতি তাড়ানোর কাজ করতে হয়। এলাকার বাসিন্দা তন্ময় দাস বলেন, “বুনো হাতি গ্রামে ঢুকলে আমরা অসহায় হয়ে যাই। বনকর্মীরা না-এলে হাতি তাড়াতে গিয়ে প্রাণহানির ভয় থাকে। শীঘ্রই আমরা এই ব্যাপারে বনমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।”
First Page Jibjagat Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.