|
|
|
|
পেলিঙে আটক শ’পাঁচেক পর্যটক |
বৃষ্টিতে ধস পশ্চিম সিকিমে, ১৬ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রাতভর বৃষ্টিতে পশ্চিম সিকিমের তিনটি এলাকায় ধসে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে পর পর ধস নামে। বিভিন্ন দিকের রাস্তা বন্ধ হওয়ায় পেলিঙে আটকে পড়েন কমপক্ষে ৫০০ পর্যটক। সরকারি সূত্রের খবর, সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে আরও ১০টি এলাকায় ছোট-বড় ধস নেমেছে। তাতে অবশ্য প্রাণহানি হয়নি। ‘ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সম্রাট সান্যাল শুক্রবার বলেন, “টানা বৃষ্টিতে সিকিমের রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপ হয়েছে। পাঁচশোরও বেশি পর্যটক পেলিঙে হোটেল, পর্যটক আবাস, লজে আটকে আছেন। তবে সবাই নিরাপদে আছেন। এ দিন বিকেল থেকে দু’টি রুটে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। সিকিমের বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপদে শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হবে।” |
|
পেলিং-এর কাছে চলছে ধস সরানোর কাজ। শুক্রবার। এএফপি |
প্রশাসন সূত্রের খবর, ধসের জন্য আপার পেলিং এবং লোয়ার পেলিঙের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ গ্যাংটক থেকে পেলিঙের রাস্তা খুললেও খুব কম গাড়ি চলছে। পেলিং থেকে ঘুরপথে শিলিগুড়ি আসার বিভিন্ন রাস্তাগুলি প্রায় গোটা দশেক জায়গায় ধসের জন্য বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় রাস্তায় বড় গাছও ভেঙে পড়েছে। ইয়কসাম রোড, সোরেন-ডেন্টাম হয়ে জোড়বাংলো আসার রাস্তাও বন্ধ রয়েছে। তার উপরে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি নামায় রাস্তা সাফাইয়ের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। মেল্লি এলাকাতেও বৃহস্পতিবার রাতে ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন সকালে তা খোলা হলেও, ছোট গাড়ি চলাচল করছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পেলিঙে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই ঝড়-বৃষ্টি চলছিল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রথম ধস নামে সিকিমের ইয়াংথাং বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত, পেলিং লাগোয়া খোরং বস্তিতে। জনা ২৫ স্থানীয় বাসিন্দা একটি দোতলা বাড়ির ভিতরে কমিউনিটি হলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আচমকা মাটি, পাথর ধসে বাড়িটি পুরোপুরি বসে যায়। চাপা পড়েন ১৪ জন। বাকিরা পালিয়ে বাঁচেন। এ দিন ভোরের আলো ফুটতেই উদ্ধারকার্য শুরু হয়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে লাগোয়া তিকজেক গ্রামে। সেখানে একটি বাড়ি ধসে স্থানীয় এক বাসিন্দা মারা যান। এ ছাড়া, লোয়ার পেলিং এলাকার একটি হোটেল ধসে চাপা পড়ে। সেখানেও এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিচয় জানা যায়নি।
সিকিমের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জিগমি ভুটিয়া বলেন, “টানা বৃষ্টির জেরেই পরপর ধস নেমেছে। তিনটি এলাকা মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬ বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে এক জায়গায় দোতলা বাড়ি ধসে ১৪ জন চাপা পড়েছেন। অন্য দু’টি জায়গায় ২ জন মারা গিয়েছেন।” সিকিম সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত দুই মহিলা এবং একটি দেড় মাসের শিশু-সহ ১০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকার্যে সামিল হয়েছেন সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) জওয়ানেরাও। পশ্চিম সিকিমের জেলাশাসক সান্টা প্রধান বলেছেন, “বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ, এসএসবি তল্লাশি করছে। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা আছেন। তবে পর্যটকেরা নিরাপদেই আছেন।” |
|
|
|
|
|