|
|
|
|
আস্থা বাড়ানোর উপরেই জোর দিল ভারত-পাকিস্তান |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের বাগড়ার মধ্যেও বিদেশসচিবদের বৈঠকে সন্ত্রাস ও অন্য উদ্বেগের বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়েই তুলল ভারত। বৈঠকের পরে প্রকাশিত যৌথ ঘোষণাপত্রেও এই সব সমস্যা নিরসনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, নতুন আস্থাবর্ধক পদক্ষেপের কথা বলে দু’দেশের এই আলোচনা প্রক্রিয়াকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে যৌথ ঘোষণাপত্রে।
ইসলামাবাদে দু’দিনের বৈঠকের শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলেনও সম্পর্ক শোধরানোর লক্ষ্যে আলোচনা প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশসচিব নিরুপমা রাও ও বশির আহমেদ। দু’জনেই জানিয়েছেন, অত্যন্ত খোলামেলা ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। সমস্ত বকেয়া মতভেদ মিটিয়ে ফেলার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলাদা আলাদা আলোচনাও শুরু করা হবে।
মুম্বই হামলার বিচারে পাকিস্তান অনর্থক দীর্ঘসূত্রিতা করছে, এই অভিযোগ বছর খানেক ধরেই তুলে আসছে দিল্লি। পাকিস্তানের মাটিতে ওসামা বিন লাদেনের নিহত হওয়া ও শিকাগোয় দুই জঙ্গি ডেভিড হেডলি ও তাহাউর রহমান রানার বিচারে তাদের সঙ্গে পাক সেনাবাহিনী ও গুপ্তচরদের যোগাযোগের নানা তথ্য উঠে আসার পরে ভারত যে এই বৈঠকে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে, তা বিলক্ষণ বুঝেছিল পাকিস্তান। আর তা আটকাতেই কাশ্মীর নিয়ে বাড়তি হইচই শুরু করেছিল ইসলামাবাদ। এমনকী বৈঠকে অন্য দ্বিপাক্ষিক বকেয়া বিষয় থেকে কাশ্মীর সমস্যাকে আলাদা করে আলোচনার জন্য একটা গোটা সেশন দাবি করে তারা।
কিন্তু অকারণ অনড় মনোভাব নিয়ে আলোচনার পথ বন্ধ করতে চায়নি ভারত। তাদের মাটিতে মার্কিন অভিযানে লাদেনের মৃত্যুর পরে আন্তর্জাতিক মহলে যে ভাবে মুখ পুড়িয়েছে পাকিস্তান, তার পরে কাশ্মীর নিয়ে তাদের বাড়াবাড়িকে মরিয়া মনোভাব বলেই মেনে নিয়েছে দিল্লি। ভারতের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এক দিকে আলোচনা প্রক্রিয়াকে ফের চাঙা করে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে কিছুটা সহজ করা, তার সঙ্গে নিজেদের উদ্বেগের বিষয়গুলি সরাসরি পাকিস্তানের কাছে তুলে ধরা। পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে জঙ্গি-ঘাঁটিগুলি উচ্ছেদে প্রশাসনের গড়িমসি ও জঙ্গিদের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনা ও গুপ্তচর বিভাগের অফিসারদের যোগাযোগের নানা তথ্যপ্রমাণ হাতে আসাতেও ভারত উদ্বিগ্ন। আলোচনায় সেই সব বিষয় গুরুত্ব দিয়েই তুলেছেন রাও।
পাকিস্তানের পরমাণু ভাঁড়ার যাতে জঙ্গিদের হাতে না যায়, তা নিশ্চিত করার বিষয়েও আজ পাক বিদেশসচিব সলমন বশিরের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এই সবগুলি বিষয় নিয়েই দু’পক্ষের আস্থা বর্ধনে বিশেষ আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে যৌথ ঘোষণাপত্রে। ভারতের পাশাপাশি সন্ত্রাসের ভয়াবহ বিপদ নিয়ে এই ঘোষণাপত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানও। ঠিক হয়েছে, সময় সুযোগ মতো এর পরে দিল্লিতে বৈঠকে বসবেন দুই বিদেশসচিব। পাকিস্তানের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গে দেখা করেও এ দিন দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন রাও। |
|
|
|
|
|