জখম ২০ জন, অধ্যক্ষকে ঘেরাও
মালদহ কলেজে ছাত্র সংঘর্ষ
সএফআইয়ের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার মালদহ কলেজ উত্তাল হয়ে উঠল। সংঘর্ষে কলেজের ৫ কর্মী-সহ ২০ জন ছাত্র জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজে র্যাফ নামানো হয়েছে। গোলমালের খবর পেয়ে কলেজে ছুটে যান পুলিস সুপার ভুবন মণ্ডল, সদর মহকুমা শাসক থেকে শুরু করে জেলা পুলিস প্রশাসনের কর্তারা। দলের সমর্থকদের উপর হামলার খবর পেয়ে মালদহ কলেজে ছুটে যান ইংরেজবাজারের কংগ্রেস বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি এবং তাঁর স্ত্রী কংগ্রেস কাউন্সিলর কাকলি চৌধুরি ও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃবৃন্দ। প্রায় ২ ঘন্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসএফআইয়ের হামলার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা কলেজের অধক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। ফের বিক্ষোভের আশঙ্কায় কলেজে পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার ভূবন মন্ডল বলেন, “মালদহ কলেজের বতর্মান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। টাকা জমা নেওয়ার পরেও একজন ছাত্রকে অনার্স কোর্সে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগে মালদহ কলেজের ক্যাশিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরই কলেজের অধ্যক্ষকে ডেপুটেশন দেওয়া নিয়ে দুই বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায়। পার্ট ওয়ানের ইতিহাস অনার্সের ভর্তির টাকা জমা নেওয়ার পরেও তালিকায় নাম না-ওঠায় কংগ্রেস কাউন্সিলর আশিষ কুন্ডুর নেতৃত্বে ছাত্র পরিষদের দুই শতাধিক সমর্থক মালদহ কলেজের ক্যাশিয়ার বুলবুল মন্ডলের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। উত্তেজিত ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা বুলবুল মন্ডলের বাড়িতে এবং গাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে গিয়ে উদ্ধার করে। পরে অভিযোগকারী ছাত্রের বাবা অভিজিত চৌধুরির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ক্যাশিয়ারকে গ্রেফতার করে। এদিকে টাকা নিয়েও অনার্সে ভর্তি না-করানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের একদল সমর্থক। তৃণমূল ছাত্রপরিষদ ও ছাত্র পরিষদের ঘেরাও বিক্ষোভে বহিরাগতরা সামিল হয়েছে অভিযোগ তুলে এসএফআই সমর্থকরা বাঁশ, লাঠি, হাঁসুয়া নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ। নিমিষে মালদহ কলেজ চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশ কম থাকায় দু’দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ থামাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়। পরে পুলিশ লাইন থেকে বিশাল বাহিনী ও র্যাফ জওানরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে সংঘর্ষে এসএফআইয়ের মালদহ কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক প্রসূন রায়-সহ এসএফআইয়ের ৫ জন ও ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ১৫ ছাত্র জখম হন। বিক্ষোভকারীরা কলেজের অধক্ষের ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। ছাত্রদের হামলায় কলেজের ৫ জন কর্মী জখম হয়েছে। কংগ্রেস কাউন্সিলার আশিষ কুন্ডু বলেন, “এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি জয় চক্রবতী ও কলেজের একাংশ কর্মী টাকা নিয়ে বছরের পর বছর অনার্সে ছাত্র ভর্তি করছে। যারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।” কংগ্রেস বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি বলেন, “এসএফআই মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা বাঁশ, লাঠি, ধারাল অস্ত্র নিয়ে আমাদের ছেলেদের উপর হামলা করে। আমরা সময়মতো কলেজে না পৌঁছলে বড় ঘটনা ঘটত।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কাযর্করী সভাপতি উজ্জল শেখ বলেন, “২০ বছর ধরে এসএফআই মালদহ কলেজে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। এ দিকে তাঁর এবং সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে এসএফআই জেলা সভাপতি জয় চক্রবর্তী বলেন, “আমার ও সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আজকে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরাই আমাদের ছেলেদের উপর হামলা করেছে। আমরা হামলা করিনি।” এদিকে ‘ভিত্তিহীন অভিযোগে’ ক্যাশিয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করায় ও বহিরাগতদের হামলায় কলেজের ৫ কর্মী জখম হওয়ায় শিক্ষক, কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
First Page Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.