আজ ফের তিন শিশুর মৃত্যু হওয়ায় মুজফ্ফরপুরে অজানা জ্বরের প্রকোপে গত এক সপ্তাহে মৃত শিশুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৪-এ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আজ নতুন করে সাতটি শিশু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে মুজফ্ফরপুরে বর্তমানে প্রায় ৪০ জন শিশু ওই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, চার শিশুর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে জাপানি এনসেফেলাইটিসের জীবাণু মিলেছে। তাই প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্য দফতরের ধারণা, অজানা জ্বর আসলে জাপানি এনসেফেলাইটিস। সঞ্জয় কুমার বলেছেন, “আমরা নতুন করে যাতে এই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে, তার উপরেই বেশি জোর দিচ্ছি। সেই কারণে, এক-দু’দিনের মধ্যেই মুজফ্ফরপুরের বিভিন্ন জায়গায় মেলাথিয়ন ছড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেলাথিওন ছড়ানোর জন্য বিশেষ একটি দলকে পটনা থেকে মুজফ্ফরপুরে পাঠানো হয়েছে।” পুণের ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অফ ভেরোলজি এবং পটনার রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল রিসার্চ ইন্সস্টিটিউটের কয়েক জন বিশেষজ্ঞ বর্তমানে মুজফ্ফরপুরেই শিবির করে রয়েছেন। সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, সমস্যা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত পুণের বিশেষজ্ঞের দলটিকে মুজফ্ফরপুরেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের যে বিশেষজ্ঞের দলটি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিল, তাঁরা কালই দিল্লি ফিরে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে আক্রান্তদের শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত ঘরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিল দলটি। যদিও আজ অবধি হাসপাতালগুলিতে আক্রান্তদের জন্য তেমন ঘরের ব্যবস্থা হয়নি।
|
বরাকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পানীয় জলের ব্যবস্থা দেখতে যান আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত, মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত, বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তাঁদের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জল সরবরাহ ব্যবস্থাটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়। বরাকর নদে একটি গভীর নলকূপ বাসানো হয়েছে। সেখানে সাবমার্শিবল পাম্প বসিয়ে নলকূপের জল পাইপের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উচ্চ জলাধারে ভর্তি করা হচ্ছে। তারপর ওই জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যবহার ও হাসপাতালের আবাসনে বসবাসকারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হবে। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় জানান, এই কাজটি পুরসভার তত্ত্বাবধানে করা হচ্ছে। মহকুমাশাসক জানান, স্বাস্থ্য দফতর এই কাজটির জন্য প্রাথমিক ভাবে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, খুব অল্প দিনের মধ্যেই কাজ হয়ে যাবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত জল মিলবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০ বছর পরে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৃথকভাবে জল সরবরাহ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাম্প ও পাইপ লাইন চুরি হয়ে যাওয়ায় পুরনো জল সরবরাহ ব্যবস্থাটি ভেঙে পড়ে। বর্তমানে কুলটি পুরসভা প্রতিদিন দু’টি করে জলের ট্যাঙ্ক এই হাসপাতালে পাঠায়। |