|
|
|
|
দুই শ্রমিক সংগঠনে বিরোধ, অবরুদ্ধ যশোহর রোড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
পেট্রাপোল বন্দর থেকে ট্যাক্সিতে যাত্রী তোলা নিয়ে ফের বিরোধ বাধল সিটু এবং এআইটিটিইউসি-র। যাত্রী তুলতে গেলে এআইটিটিইউসি-র কর্মীরা বাধা দিচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরের কাছে হরিদাসপুরে প্রায় ৪ ঘণ্টা যশোহর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় সিটু। এর ফলে, বন্দর দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সূত্রপাত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে। নির্বাচনের আগে বন্দর থেকে যে সব ট্যাক্সি যাত্রীদের কলকাতা নিয়ে যেত, সেই সব ট্যাক্সির চালকেরা মূলত সিটু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে বন্দরের বহু ট্যাক্সিচালক সিটু ছেড়ে এআইটিটিইউসি-তে যোগ দেন। নির্বাচনের আগে সিটুর সঙ্গে ৩২ জন ট্যাক্সিচালক ছিলেন। এআইটিটিইউসি-র সঙ্গে ছিলেন ৭ জন। কিন্তু বর্তমানে এআইটিটিইউসি-র সঙ্গে রয়েছেন ৩৬ জন ট্যাক্সিচালক, সিটুর সঙ্গে রয়েছেন ৬ জন। নির্বাচনের পর থেকেই যাত্রী তোলা নিয়ে দুই সংগঠনের ট্যাক্সিচালকদের মধ্যে বিরোধ বাধে। সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয় মহকুমা প্রশাসন। |
|
ছবি: পার্থসারথি নন্দী। |
গত ১৬ জুন মহকুমাশাসক দু’টি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতি মাসের প্রথম ১৫ দিন এআইটিটিইউসি-র ৬টি ট্যাক্সি যাত্রী তোলার পরে সিটুর একটি ট্যাক্সি যাত্রী তুলবে। তার পরের ১৫ দিন আবার এআইটিটিইউসি-র সাতটি ট্যাক্সি যাত্রী তোলার পরে সিটুর একটি ট্যাক্সি যাত্রী তুলবে। পাশাপাশি, এই নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য দু’পক্ষের চার জনকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ওই কমিটি বন্দরে কর্মরত ট্যাক্সিচালকদের সব রকম সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে।
সিটুর অভিযোগ, মহকুমাশাসকের দফতরে ওই সিদ্ধান্ত মানছে না এআইটিটিইউসি। সিটু নেতা গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, “আমাদের চালকেরা যাত্রী তুলতে গেলে ওরা বাধা দিচ্ছে। ওরা চায়, বন্দর থেকে সিটুর অস্তিত্ব মুছে দিতে। যত ক্ষণ না সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ওরা যাত্রীদের জিনিসপত্র বহনের কাজও পুরোটা নিয়ে নিয়েছে।”
সিটুর অভিযোগ মানতে চায়নি এআইটিটিইউসি। তারা পাল্টা সিটুর বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো যাত্রী তোলার অভিযোগ তুলেছে। সংগঠনের পক্ষে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আমরা চাই না কোনও ট্যাক্সিচালক কাজ না পেয়ে অনাহারে থাকুক। মহকুমা প্রশাসনের বৈঠকের সিদ্ধান্তে আমরা সহমত ছিলাম। কিন্তু ওরা নিজেদের ইচ্ছামতো যাত্রী তুলছে। অশান্তি বাধানোর চেষ্টা চলছে।”
পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বহু বাংলাদেশি এ দেশে আসেন চিকিৎসা করাতে। সিটুর অবরোধের জেরে এ দিন তাঁরা নাকাল হন। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এর আগেও অনেকবার বৈঠক হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। ফের দু’পক্ষকে ডেকে আলোচনা করা হবে।” |
|
|
|
|
|