|
|
|
|
রাস্তায় গাছ ফেলে পরপর বাসে ডাকাতি, গ্রেফতার ৮ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মাজদিয়া |
রাস্তার উপরে গাছের গুঁড়ি ফেলে বুধবার রাতে কন্যাযাত্রীর গাড়ি সহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে যাত্রীদের জিনিসপত্র লুঠপাট হয়েছে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ডাকাতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেখানে মহিলাদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই দিন রাতেই পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের পরিচয় নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কৃষ্ণগঞ্জ থানা চত্বরে দেখা যায় সিপিএম ও তৃণমূলের একাধিক স্থানীয় নেতাকে। জেলা পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়ি থামিয়ে লুঠপাট করা হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ গিয়ে আট জনকে গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে ৭ জনকে শনাক্তও করেছেন অভিযোগকারীরা। লুঠ করা গহনাও উদ্ধার করা হয়েছে।” ওই সাত জনের মধ্যে দু’জন স্থানীয় এক তৃণমূল নেত্রীর আত্মীয়। |
|
এই গাছ ফেলেই আটকানো হয়েছিল রাস্তা। নিজস্ব চিত্র। |
মাজদিয়া ও বগুলা এলাকায় ওই দিন একাধিক বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। কন্যাযাত্রী ও আমন্ত্রিতদের বেশ কয়েকটি গাড়ি মাজদিয়া থেকে গাজনা ভায়া খাটুরা রাস্তা ধরে যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, সেই গাড়িগুলি ওই রাতে একই রাস্তা দিয়েই ফিরবে বলে বুঝতে পেরেছিল দুষ্কৃতীরা। তাই রাত সাড়ে বারোটার পর থেকে কৃষ্ণগঞ্জ থানার খাটুরা পিরতলা এলাকায় ফাঁকা মাঠের মাঝখানে রাস্তার উপরে গুঁড়ি ফেলে সেই গাড়িগুলোকেই থামিয়ে লুঠপাট ছিল উদ্দেশ্য। সাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময় সেই গাছে আটকে যান গাজনার সমর বিশ্বাস। তিনি বলেন, “বাঁক ঘুরতেই দেখি সামনে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ। তারপরে কয়েকজন দুষ্কৃতী আমাকে ঘিরে ধরে মারধর করে সব টাকা, মোবাইল কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।” বগুলায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন কৃষ্ণগঞ্জের টুঙির বাসিন্দা দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাস্তা আটকে যাওয়ায় আমিও গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ি। তারপরেই কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে আমার গাড়ির কাচ ভেঙে স্ত্রী ও মা’কে মারধর করে গয়নাগাটি কেড়ে পালিয়ে যায়।” বগুলার বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে স্বর্ণখালির মনোরঞ্জন মণ্ডলের গাড়িও আক্রান্ত হয়। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই দুষ্কৃতীরা পালায়। তখন প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে দুষ্কৃতীদের চেহারার বর্ণনা শুনে পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরী বলেন, “ধৃতদের বেশ কয়েকজন সিপিএম নেতাদের ঘনিষ্ঠ। আর বাকিরা মোটেই দুষ্কৃতী নন। পুলিশ ইচ্ছে করে ধরে এনেছে।” সিপিএম নেতা গৌরী বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, “প্রথমে শুনেছিলাম পুলিশ নিরীহ আদিবাসীদের গ্রেফতার করেছে। তাই থানায় যাই। পরে অভিযুক্তেরা শনাক্ত হয়েছে বুঝতে পেরে চলে আসি।” তাঁর বক্তব্য, “অভিযুক্তদের দু’জন তৃণমূলের এক জেলা পরিষদের সদস্যের আত্মীয়।” তৃণমূলের ওই জেলা পরিষদ সদস্যের বক্তব্য, “আমার আত্মীয়দের ফাঁসানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|