বটানিক্যালে মন্ত্রী যাওয়ায় বন্ধ হল দূষণকারী কারখানা
পাঁচিলের গায়ে একটা গর্ত। টিন আর মাটি দিয়ে তা বন্ধ করার চেষ্টা হলেও ফাঁকফোঁকর দিয়ে স্রোতের মতো ঢুকছে বেগুনি রঙের রাসায়নিক বর্জ্য। গিয়ে জমছে বাগানের অগভীর খালে। বটানিক্যাল গার্ডেন পরিদর্শনে গিয়ে বৃহস্পতিবার খোদ পরিবেশমন্ত্রী নিজের চোখেই দেখলেন, লাগোয়া কাপড় রং করার কারখানার রাসায়নিক বর্জ্যে কী ভাবে দূষিত হচ্ছে বাগানের পরিবেশ ও গাছপালা।
বহু দিন ধরেই এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন বটানিক্যাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী নিজে যাওয়ার পরে নড়েচড়ে বসল পুলিশ। মন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ সুপার নিজে গিয়ে বন্ধ করে দিলেন কারখানাটি। এর পাশাপাশি বটানিক্যালের পাঁচিলে গর্ত করে যাতে কেউ আর বর্জ্য বা আবর্জনা ফেলতে না পারে, তার জন্য পুলিশ পাহারাও বাড়ানো হয়েছে বাগানে।
বুধবারই বটানিক্যাল গার্ডেনের পরিবেশ রক্ষায় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল, বাগানের পরিবেশ উন্নয়নে পর্ষদ যে সমস্ত নির্দেশ দিয়েছে, তা কার্যকর নয়। পর্ষদের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। কার্যত এর পরেই এ দিন দুপুরে পর্ষদের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিনয় দত্তকে সঙ্গে নিয়ে বটানিক্যালে যান রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার। সেখানে হাজির ছিলেন হাওড়া জেলার পুলিশ সুপার রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং বট্যনিক্যাল সার্ভের যুগ্ম অধিকর্তা শিব কুমার। মন্ত্রী এবং অন্যদের নিয়ে তাঁরা ব্যাটারিচালিত গাড়িতে বাগান ঘুরে দেখেন।
বটানিক্যাল পরিদর্শনে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
পরিবেশমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় গার্ডেনের পশ্চিম প্রান্তে, পাঁচিলের গায়ে ওই গর্তের সামনে। চোখের সামনে কারখানার বর্জ্য ঢুকে বাগানের পরিবেশ এ ভাবে দূষিত হতে দেখে উত্তেজিত সুদর্শনবাবু পুলিশ সুপারকে তখনই ওই কারখানা বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেন। সঙ্গে সঙ্গেই ওই কারখানায় ছুটে যান পুলিশ সুপার। বন্ধ করে দেওয়া হয় কারখানাটি।
গার্ডেনের যুগ্ম অধিকর্তার কাছে এ দিন মন্ত্রী জানতে চান, দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবে দেওয়াল ভেঙে বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রিত জল ও আবর্জনা ফেলার ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও তাঁরা ব্যবস্থা নেননি কেন? গার্ডেনের তরফে তাঁর কাছে অভিযোগ জানানো হয়, ওই কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার পুলিশকে বলা হয়েছে। বারবার পাঁচিল সারিয়ে ফেলার পরেও পাঁচিল যে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, সে কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
এই অভিযোগ শুনে সুদর্শনবাবু সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে গার্ডেনে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। যারা পাঁচিল ভাঙছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে। রবীন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন, তিনি নতুন এসেছেন। কিছু জানতেন না। তবে, এ বার এই সব কাজ হবে বলে দাবি করেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “এই গার্ডেনটি জাতীয় সম্পত্তি। এর জীববৈচিত্র রক্ষা করতে রাজ্য সরকার সব সময়ে সচেষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই চান গার্ডেনের পরিবেশের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। এক মাস পরে ফের এখানে এসে দেখব, কী কী উন্নতি হল।” পাশাপাশি সুদর্শনবাবু জানান, গার্ডেনের ভিতরে পুরসভার যে নিকাশি নালার আবর্জনা পড়ে, তা অবিলম্বে সাফ করা এবং পাঁচিলের গায়ে বেআইনি জবরদখল উচ্ছেদ করার জন্য তিনি হাওড়া পুরসভাকেও চিঠি দেবেন।
First Page Jibjagat Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.