|
|
|
|
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
দুর্নীতিতে নাম জড়াল প্রাক্তন উপাচার্যেরও |
কিশোর সাহা • শিলিগুড়ি |
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় জড়িয়ে গেল প্রাক্তন উপাচার্য পীযূষকান্তি সাহার নামও। ইতিমধ্যেই ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার প্রস্তুতি হিসেবে পুলিশের তরফে তদন্তকারী অফিসার তথা শিলিগুড়ির ডি এস পি সীতারাম সিংহ বর্তমান উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদারকে চিঠি দিয়েছেন। তাতে উপাচার্যকে বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ১৯ ধারায় কোনও পদস্থ সরকারি কর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। চিঠিতে প্রাক্তন উপাচার্য পীযূষকান্তিবাবু ও রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারের বিরুদ্ধে ওই ধারায় ‘চার্জশিট’ দিতে হলে কার অনুমতি নিতে হবে তা জানতে চেয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত প্রায় শেষের পথে। চার্জশিট তৈরির প্রক্রিয়া জোরকদমে চলছে।” পুলিশ সুপার জানিয়ে দেন, যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট পেশের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। |
|
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, পুলিশের পক্ষ থেকে পীযূষবাবু ও দিলীপবাবুর নিয়োগকর্তা বিষয়ক যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা পাঠাতে আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিসার জানান, প্রাক্তন হওয়ায় পীযূষবাবুর ক্ষেত্রে অনুমতি আদৌ দরকার কি না এবং লাগলে কে দেবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। দিলীপবাবুর ক্ষেত্রে কর্মসমিতি কিংবা উপাচার্য যে কোনও তরফে অনুমতি দিলে তা গ্রহণযোগ্য কি না, তারও আইনি ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, পীযূষবাবু প্রাক্তন হলেও অবসরকালীন সুবিধা পান বলে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন মামলার ওই ধারায় চার্জশিট দিতে নিয়োগকর্তার অনুমতি নেওয়া দরকার। বর্তমান উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে বিশদে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেছেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করব।”
৮ বছর ধরে উপাচার্য থাকার পরে এখন আর্থিক দুর্নীতির মামলায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় ‘ব্যথিত’ পীযূষবাবুও। তবে তিনি বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালবাসি। আমি কী করেছি তা সকলে জানেন। যা করেছি, সব নথিপত্র বিশ্ববিদ্যালয়েই আছে। সব সময়ে ন্যায়ের পথেই চলেছি। আমার নামে মামলার কথা জানি না।” মামলার অন্যতম অভিযুক্ত দিলীপবাবু গোড়া থেকে জানাচ্ছেন, তিনি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত নন। ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁকে মামলায় জড়ানো হয়েছে, যা আগামী দিনে প্রমাণ হয়ে যাবে বলেও তাঁর দাবি।
বস্তুত, বছর দেড়েক আগে মামলা রুজু হলেও তার তদন্তে ঢিলেমি নিয়ে নানা মহলে অভিযোগ উঠছিল। মূল অভিযোগ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাকাউন্টের হিসেবে দেড় কোটি টাকার গরমিল রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপা সংক্রান্ত কাজকর্ম হত। সম্প্রতি মামলার তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ পান রাজ্যের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়। তদন্তে গতি আনার নির্দেশ দিয়ে জেলা পুলিশে কড়া বার্তা পাঠান তিনি। |
|
|
|
|
|