উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার চাতরা একটি বর্ধিষ্ণু অঞ্চল। চাতরার হাটটিও জেলার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। এই হাটের বুক চিরে চলে গিয়েছে তিতুমির সরণি (তেঁতুলিয়া রোড)। এই রাস্তাটি তেঁতুলিয়াতে ইছামতী নদী পেরিয়ে ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার্থে এবং ওই এলাকার মানুষদের একমাত্র রেলস্টেশন মসলন্দপুর পৌঁছবার ক্ষেত্রে এই রাস্তার গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিনিয়ত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ট্রাক এবং ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দর দিয়ে শ’য়ে শ’য়ে পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে। এ ছাড়া যাত্রীবাহী বাস, অটো, ট্রেকার তো রয়েইছে। |
চাতরা হাটে কৃষকদের আনা সব্জি, সব্জিবাহী ভ্যানরিকশা, মোটরভ্যান এবং পণ্যবাহী লরিতে এই রাস্তাটিতে এমন মারাত্মক যানজট সৃষ্টি হয় যে রাস্তাটির অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এখান থেকে সব্জি রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভিন রাজ্যেও সরবরাহ হয়ে থাকে। হাটটি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে। এই হাটটির খুব নিকটেই রয়েছে ছেলে ও মেয়েদের দু’টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতিনিয়ত যানজটের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। গুরুতর অসুস্থ রুগিকে নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোও দুষ্কর হয়ে ওঠে।
হাটটি প্রধান রাস্তা থেকে পদ্মার তীর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে অবস্থিত। শুধু প্রশাসনিক গাফিলতির জন্য সেই এলাকা ছেড়ে হাটটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটিতে বসছে। বিক্রেতাও ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য রাস্তার ধারটাকেই বেশি পছন্দ করে, পণ্যবাহী লরিগুলিও ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে থাকে মাল বোঝাইয়ের জন্য। অস্বাভাবিক যানজটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। রাস্তাটিকে যানজটমুক্ত করার জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা প্রয়োজন। |
বিশ্বায়নের যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম উন্নতি সত্ত্বেও বন্ধ হয়ে গেল উলুবেড়িয়া মহকুমার বাসস্ট্যান্ড ফুলেশ্বর থেকে ৭০বি (উলুবেড়িয়া-গড়চুমুক), ৭০সি (উলুবেড়িয়া-বোয়ালিয়া), ৬২ (উলুবেড়িয়া-হাওড়া), ৬৫ (উলুবেড়িয়া-পাঁশকুড়া) এবং উলুবেড়িয়া-তুলসীবেড়িয়া-র মতো কয়েকটি বাসরুট। প্রাচীরযুক্ত সুবিশাল জায়গা দখল করে আছে কেবলমাত্র ৭০ নম্বর উলুবেড়িয়া-আমতা বাসরুট। এগুলি পুনরায় চালানো বা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। |
বার্নপুরের রাধানগর ও সাঁতা গ্রামের বুক চিরে চলে গিয়েছে ইসকো কারখানার রেললাইন। এই লাইন দিয়েই কারখানার কয়লা, লোহা ইত্যাদি মালপত্র আনা-নেওয়া হয়। মাল চুরি যাতে না হয় তার জন্য সেখানে অতন্দ্র প্রহরায় থাকে সি আই এস এফ কর্মী। আছে গেটম্যানের কেবিন। কিন্তু কারখানার গেট দিয়ে বেরিয়ে লোকো যখন কয়লাভর্তি ওয়াগন নিয়ে যায়, তখন রেললাইনের পাশে গজিয়ে ওঠা বস্তির বেশ কিছু যুবা ও কিশোর ওয়াগনগুলিতে চড়ে ব্যাগে কয়লা ভর্তি করে নীচে ফেলে দিয়ে নিয়ে চলে যায়। এদের সুবিধার্থে মালগাড়ির গতি ইচ্ছাকৃত ভাবে মন্থর হয়ে আসে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী, গেটম্যান, লোকোচালক ও তাঁর সহকারী সব কিছু দেখেও না-দেখার ভান করেন। পুলিশের পেট্রল ভ্যান পথে চলাচল করলেও কারখানার কয়লাচুরিতে হস্তক্ষেপ করে না। তাই এই চুরি অবাধে চলতেই থাকে।
কারখানার রেললাইনকে সাক্ষী রেখে যে রাস্তা চলে গিয়েছে রাধানগর থেকে নিউটাউন, ছোটদিঘারি, মিঠানি, সেই রাস্তা দিয়ে হাজার মানুষের নিত্য যাতায়াত। তাই কয়লা চুরির সাক্ষী প্রতিটি নিত্যযাত্রী। এই চুরির কথা কারখানার কর্তৃপক্ষ জানেন না, তা হতে পারে না। এতে কারখানার কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা যে জড়িত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হলেই এই চুরি বন্ধ করা যায় এবং কারখানার আর্থিক ক্ষতিও রোধ করা যায়। প্রথম ব্যবস্থা হিসেবে লাইনের ধার ঘেঁষে কারখানার জমি দখল করে যে বস্তি গড়ে উঠেছে, তা উচ্ছেদ করা দরকার। দুষ্কর্মে জড়িত কর্মী ও আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনগত কড়া পদক্ষেপই এই চুরি বন্ধে সহায়ক হবে। |