এর মধ্যেই অতিবৃষ্টির কারণে তিলপাড়া, দেউচা ও বৈধরা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের বহরমপুর ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস দত্ত অবশ্য বলেন, “ব্যারেজ থেকে যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে, তাতে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। জলের অভাবে নদীগুলি শুকিয়ে ছিল। ফলে অবিরাম বৃষ্টিতে ও ব্যারেজের ছাড়া জলে নদীগুলি ভরে উঠেছে মাত্র।” তবে জেলার বিভিন্ন নদী বাঁধ সারাইয়ের যে কাজ চলছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আশিসবাবু জানান।
|
এদিকে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চাননতলা যাওয়ার রাস্তার বেশ কয়েকটি জায়গায় পিচের চাদর উঠে গিয়ে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন থেকে পথচারীদের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। একই ভাবে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বহরমপুর স্টেশন যাওয়ার রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চাননতলা যাওয়ার রাস্তা সংস্কারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পিচের কাজ করা যাচ্ছে না। আবহাওয়া একটু ভাল হলেই ওই রাস্তার কাজ শুরু হবে।” তবে বহরমপুর স্টেশন যাওয়ার রাস্তাটি মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের অধীনে। পুরপ্রধানের অভিযোগ। তাঁর কথায়, “পুরসভাকে ওই রাস্তাটি হস্তান্তর করে দেওয়ারও দাবি জানাই। কিন্তু তাঁরা কোনও কথা শুনতে চান না। পুরবাসিন্দাদের স্বার্থে এর আগেও ওই রাস্তা সংস্কার আমরা করেছি। এবারও হয়তো ওই কাজ আমাদেরই করতে হবে।” জেলাপরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সিপিএমের সোমনাথ সিংহ রায় বলেন, “ওই রাস্তা জেলাপরিষদের এমন কোনও রেকর্ড গত তিন বছরে দেখিনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে ওই রাস্তা জেলাপরিষদের অধীনে থাকলে অবিলম্বে রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হবে।” বহরমপুরের মহকুমাশাসক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলখানার পাঁচিল তৈরির কাজ কিছুটা হলেও বিঘ্ন ঘটেছে। বহরমপুর মহকুমা এলাকায় বেশ কিছু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে খবর পেয়েছি।”
এদিকে ঝাড়খণ্ড এলাকার বৃষ্টির জলে সুতি-১ ব্লকের বহুতালি এলাকার বিভিন্ন জমিতে জল জমতে শুরু করেছে। তেমনি জলমগ্ন হয়েছে ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার ৭টি ওয়ার্ডের সমস্ত নিচু এলাকা। রঘুনাথগঞ্জ ও জঙ্গিপুর শহরের ৫টি বস্তি এলাকাতেও জল জমেছে। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রঘুনাথগঞ্জ ম্যাকেঞ্জি পার্ক ময়দানে জল জমে থাকার কারণে সার্কাস চালু হতে পারেনি। জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক এনাউর রহমান বলেন, “মহকুমা এলাকার বেশ কিছু জায়গায় জল জমলেও পরে তা নেমেও যায়। কিছু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল ও ত্রাণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিডিওদের।”
|
কান্দি পুরসভা এলাকার ঘড়িখানায়, পুরসভা কার্যালয়ের সামনে ও ৬, ৮, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বৃষ্টির জল জমে। অতিবৃষ্টিতে কান্দি-ডাকবাংলা রাজ্য সড়কে পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে। ওই রুটের বহড়া এলাকায় প্রায় দুটি পৃথক জায়গায় প্রায় তিনশো মিটার রাস্তায় জল জমে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার উপর দিয়েই চলছে পণ্যবাহী লরি ও যাত্রীবাহী বাস। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ত দফতরের কান্দি মহকুমার আধিকারিক শ্যামল দাস বলেন, “রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু নিকাশি নালা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। রণগ্রাম সেতুর কাজও দু-দিন বন্ধ ছিল।” |