আজ থেকে ক্যারিবিয়ানে টেস্ট সিরিজ ধোনিদের
ফিডেলের হুঙ্কার, বিজয়ের চোটে ওপেনারহীন ভারত
ক দিকে চোট-আঘাতে জেরবার বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল। অন্য দিকে সাবাইনা পার্কের বাউন্সি পিচে চিন মিউজিক শোনানোর হুঙ্কার ছেড়ে রাখলেন ক্যারিবিয়ান পেসার ফিডেল এডওয়ার্ডস। সব মিলিয়ে লারার দেশে প্রথম টেস্ট খেলতে নামার আগে আচমকা ধোনির টিমের মাথার উপর মেঘলা আকাশ।
মুনাফ পটেলের চোট নিয়ে দুশ্চিন্তা তো ছিলই। এর মধ্যে আবার প্রথম নেট সেশনেই ডান হাতের আঙুলে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন ওপেনার মুরলী বিজয়। তাঁর আঙুলের এক্স-রে করা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, ধোনি প্রাক-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ঘোষণা করে দিয়েছেন, “বিজয় খেলতে না পারলে ওপেন করবে পার্থিব পটেল।” ভারতীয় দল প্র্যাক্টিস পিচ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশও করেছে। তাদের তিনটে প্র্যাক্টিস পিচ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার দুটোতে অসমান বাউন্স ছিল বলে ভারতীয় শিবিরের অভিযোগ। এর মধ্যে একটা পিচেই স্থানীয় বোলারের বলে চোট পান বিজয়। তার পর স্থানীয় বোলারদের আর নেটে বল করতে দেওয়া হয়নি।
ও দিকে টেস্টের জন্য অতিরিক্ত পেসার অভিমন্যু মিঠুন ভিসা-সমস্যায় আটকে পড়ে এখনও পৌঁছতে পারেননি। ধরে নেওয়া হচ্ছে, মুনাফ রাতারাতি দারুণ উন্নতি ঘটিয়ে ফিট হয়ে উঠতে না পারলে প্রবীণ কুমারের টেস্ট অভিষেক হতে যাচ্ছে। তিনি এবং ইশান্ত শর্মাই সম্ভবত সাবাইনা পার্কের পেস-সহায়ক উইকেটে নতুন বলের জুটি হতে যাচ্ছেন। ইশান্ত হালফিলে ফর্মে ফেরার লক্ষণ দেখালেও এখনও বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কার্যকর তাঁকে দেখাচ্ছে না।
নতুন ফিল্ডিং কোচ পেনির সামনে ধোনিরা।-এপি
এর মধ্যেই আবার বাউন্সি পিচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের শর্ট-পিচ্ড বলের বিরুদ্ধে চিরাচরিত দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিরিয়ে এনেছে ফিডেল এডওয়ার্ডসকে। প্রায় দু’বছর চোটের জন্য ক্রিকেট থেকে বাইরে থাকা এডওয়ার্ডস এ দিন হুঙ্কার ছেড়ে রাখলেন, “সাবাইনা পার্ক-কে আমি সব সময় আমার দ্বিতীয় ঘর বলে এসেছি। ভারতীয়দের শর্ট পিচ্ড বলের বিরুদ্ধে সমস্যার কথা সবার জানা। বছরের পর বছর ধরেই এটা সবাই দেখে আসছে। শেষ সিরিজে দেখে মনে হল ওরা শর্ট বলে উন্নতি করেছে কিন্তু এখনও এটাকে অস্ত্র করার জায়গা রয়েছে আমাদের।” এখন পর্যন্ত ৪০ টেস্টে ১২২ উইকেট নিয়েছেন এডওয়ার্ডস। চলতি সিরিজে ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে জায়গা হয়নি বলে তাঁর হতাশাও গোপন রাখেননি ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার। “আমি খুব খেলতে চেয়েছিলাম। দলে জায়গা না পাওয়ায় খুব হতাশ হয়েছিলাম। যাই হোক আমি এখন সে সব ভুলে টেস্ট সিরিজটায় পারফর্ম করতে চাই। গত দু’মাস ট্রেনারের সঙ্গে খুব খেটেছি। আমি এখন দারুণ ফিট।” সাবাইনা পার্কের উইকেট নিয়ে এডওয়ার্ডস বলছেন, “উইকেটটা দেখে বেশ ভাল লাগছে। প্রথম বার যখন এখানে খেলেছিলাম তখন ভাল পেস আর বাউন্স ছিল। আশা করব এ বারও আমাকে পিচ সাহায্য করবে।” অ্যামব্রোজ আর ওয়ালশের সঙ্গে কথা বলে প্রচুর পরামর্শও তিনি পেয়েছেন বলে জানাচ্ছেন। আর বলছেন, ভারত টেস্টের এক নম্বর হলেও ইংল্যান্ডও একই রকম ভাল দল। “ভারত এক নম্বর হলেও ওদের প্রথম টিমের অনেক প্লেয়ার এখানে নেই। সেটা আমাদের পক্ষে যাওয়া উচিত।”
আগুন ঝরাতে তৈরি ফিডেল।-এপি
সচিন নেই। সহবাগ নেই। গম্ভীর নেই। বোলিংয়ে জাহির খান নেই। এই অবস্থায় ভারত অন্তত শর্ট বলের মোকাবিলার জন্য সবথেকে বেশি করে তাকিয়ে দুই সিনিয়রের দিকে। রাহুল দ্রাবিড় এবং ভিভিএস লক্ষ্মণের দিকে। যাঁরা দু’জনে মিলে ২৭০ টেস্ট অভিজ্ঞ এবং মিলিত ভাবে যাঁদের টেস্টে কুড়ি হাজারের উপর রান রয়েছে। অধিনায়ক ধোনির উপস্থিতি অবশ্যই শক্তি মনোবল দুই-ই বাড়াবে টিমের। কিন্তু প্রথম টেস্টে ভারতের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে তরুণ ক্রিকেটাররা কেমন খেলেন তাঁর উপর। একসঙ্গে তিন জনের অভিষেক হচ্ছে ধরে রাখা যায়। ওপেনার অভিনব মুকুন্দ, মিডল-অর্ডারে বিরাট কোহলি এবং বোলিংয়ে প্রবীণ কুমার। ওয়ান ডে সিরিজে অমিত মিশ্রের সাফল্যের পর তিনি এবং হরভজন সিংহ হতে যাচ্ছেন দুই স্পিনার।
সাবাইনা পার্কে ভারত
প্রথম টেস্ট: ১৯৫৩-ড্র। পঙ্কজ রায় দু’ ইনিংসে ৮৫ ও ১৫০।
দ্বিতীয় টেস্ট: ১৯৬২-ইনিংস ও ১৮ রানে হার। চাঁদু বোরডে প্রথম ইনিংসে ৯৩।
তৃতীয় টেস্ট: ১৯৬২-হার ১২৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে সোবার্স ৫-৬৩।
চতুর্থ টেস্ট: ১৯৭১-ড্র। প্রথম ইনিংসে ৫-৭৫ থেকে দিলীপ সরদেশাই ২১২।
পঞ্চম টেস্ট: ১৯৭৬-হার দশ উইকেটে। লয়েডের চার পেসারের আক্রমণে হাসপাতালে গায়কোয়াড়, বিশ্বনাথ, ব্রিজেশ পটেল। দ্বিতীয় ইনিংসে বেদী ও চন্দ্রশেখর ভয়ে ব্যাট করতেই নামেননি।
ষষ্ঠ টেস্ট: ১৯৮৩-হার ৪ উইকেটে। রবার্টস দু’ইনিংসে ৪-৬১ ও ৫-৩৯।
সপ্তম টেস্ট: ১৯৮৯-হার ৭ উইকেটে। প্রথম ইনিংসে সিধু ১১৬, ওয়ালশ দু’ইনিংসে ৬-৬২ ও ৪-৩৯।
অষ্টম টেস্ট: ১৯৯৭-ড্র। কুম্বলে ৫-১২০। লক্ষ্মণ ৬৪, দ্রাবিড় ৫১ ন.আ.।
নবম টেস্ট: ২০০২-হার ১৫৫ রানে। লক্ষ্মণ ৬৫, সচিন ৮৬, ডিলন ৫-৭১।
দশম টেস্ট: ২০০৬-জয় ৪৯ রানে। দ্রাবিড় ৮১ ও ৬৮। হরভজন ৫-১৩।
পেসারদের চোট-আঘাত নিয়ে উদ্বিগ্ন ধোনি বলেছেন, টেস্ট ক্রিকেটের জন্য পেসারদের ফিট থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। “এটা চার ওভার বা দশ ওভার বল করার ব্যাপার নয়। সারা দিনে পঁচিশ ওভার বল করতে হতে পারে। তুমি পেসার হও বা স্পিনার, অন্তত সত্তর থেকে আশি শতাংশ ফিট না থাকলে সেটা করা সম্ভব নয়।” ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণ যে বেশ ভাল সেটা স্বীকার করেছেন ভারত অধিনায়ক। তেমনই তিনি জাহির, শ্রীসন্থের মতো পেসারদের পেলেন না চোটের জন্য। ধোনি অবশ্য বরাবরের মতো সমস্যার মধ্যেও ঠান্ডা থাকার চেষ্টা করছেন, “তরুণদের জন্য এটা ভাল সুযোগ। টেস্ট ক্রিকেট অনেক কঠিন পরীক্ষা। অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য তরুণদের টেস্টে ভাল খেলা খুব জরুরি।”
First Page Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.