|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
আসলে কী নিয়ে এই প্রতিবাদ? |
ক্যালকাটা ক্লাবের সদস্য চুনী গোস্বামী শিল্পী শুভাপ্রসন্নকে তাঁর ব্যক্তিগত অতিথি হিসেবে ক্লাবে নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু শুভাপ্রসন্নর পোশাক বিধিসম্মত ছিল না বলে, সে ব্যাপারে চুনী গোস্বামীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তিনি তাঁকে নিয়ে ক্লাব ছেড়ে চলে যান। এটিও ক্লাবের বিধি। পরের দিন তথাকথিত কয়েক জন বিদ্বজ্জন শহরে বিক্ষোভ দেখালেন। ক্যালকাটা ক্লাব-সহ শহরের আরও একটি অভিজাত ক্লাবের বহু বছরের সদস্য হিসাবে এবং শিল্পপরিচালক ও সাহিত্যিকের সামান্য স্বীকৃতির সুবাদে হয়তো বা বিদ্বজ্জন হিসাবে এ বিষয় নিয়ে আমার মত প্রকাশের কিছুটা যোগ্যতা আছে।
যা নিয়ে আমি বিশেষ আশ্চর্য বোধ করছি, তা হচ্ছে ঠিক কী উদ্দেশ্যে এই প্রতিবাদ। যে পোশাক-বিধির প্রতিবাদ, তা শুধুমাত্র ক্যালকাটা, টলি, বেঙ্গল, স্যাটারডে অথবা আর সি টি সি ইত্যাকার অভিজাত ক্লাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাই নয়, তা অপেক্ষাকৃত কম অভিজাত ক্লাবগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জানি, তা এই দেশের অন্যান্য শহর, প্রতিবেশী বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর প্রায় সব ক’টি দেশের ক্লাবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর যদি আভিজাত্যের কথাই বলা হয়, আভিজাত্য কতগুলি রীতি ও আচরণ-বিধিকে শ্রদ্ধা ও পালন করেই গড়ে ওঠে। এবং পোশাক-বিধি এমন আচরণ-বিধিরই অঙ্গ। শহরের প্রায় প্রত্যেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, এবং যাঁরা এই পোশাক-বিধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন তাঁদের অনেকেই, যাঁরা এই ক্লাবগুলিতে এসেছেন অথবা আসেন তাঁরাও এই ক্লাবগুলির পরিবেশ তথা এমবিয়েন্স সম্পর্কে মুগ্ধতাই প্রকাশ করেছেন। আভিজাত্যের রীতি ও আচরণ-বিধিই এই এমবিয়েন্সের কারণ। আর এই পোশাক সংক্রান্ত বিধি কতগুলি ন্যূনতম আচরণ মাত্র, এই এমবিয়েন্সের প্রয়োজনে যা কোনও ভাবেই ব্যক্তির বিড়ম্বনার কারণ হয় না। পরিবর্তন কি আভিজাত্য খোয়ানো, যা জন্ম দেয় নান্দনিকবোধকে অশ্রদ্ধার প্রবণতার? যে পোশাক শ্লীল, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না-করে এই বিদ্বজ্জনদের উচিত পোশাকে স্বাধীনতার ধ্বজা তুলে যে অশ্লীল পোশাকের সমারোহ হোটেল-রেস্তোরাঁর ড্যান্স ফ্লোরে, এমনকী সিনেমা ও টিভি-র পর্দায়, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এ স্থানগুলি তো পাবলিক প্লেস, অর্থাৎ যেখানে সর্বসাধারণের অধিকার। এবং জনসাধারণের হয়ে প্রতিবাদ জানানোর অধিকারও তাঁদের আছে। |
|
একটা হাস্যকর কথা শোনা গেল, তাঁরা বললেন, এই রীতি ইংরেজ প্রবর্তিত, সুতরাং স্বাধীনতার এত বছর পরেও সে রীতি মানা চলবে না। প্রথমত, পোশাক সম্পর্কে যে রীতি, ইংরেজের আমল থেকে, তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আর সকলের জ্ঞাতার্থে জানাই, যে ক্লাবের সম্মুখে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, সে ক্লাবটি কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইংরেজের ক্লাবে ভারতীয়দের সদস্য না-করার নীতির প্রতিবাদেই। আর যদি ইংরেজ প্রবর্তিত বলেই তাকে পরিত্যাগ করতে হবে, তা হলে, তাদের প্রবর্তিত শিক্ষা, আইনের শাসন, নান্দনিক বোধ, এ সবকেও পরিত্যাগ করতে হয়।
ক্লাবগুলি সর্বসাধারণের জন্য নয়। ক্লাবের সদস্যদের জন্য। ক্লাবের সদস্যরাই ক্লাবের নীতি নির্ধারণ করেন। অনেক বিশিষ্ট জন এই ক্লাবগুলির সদস্য। এবং তাঁরা কখনওই ক্লাবের রীতি-আচরণ নিয়ে বিচলিত বোধ করেন না।
মনে পড়ছে ইতিপূর্বে এই শহরেই একটি ক্লাব থেকে নীনা গুপ্ত-ভিভ রিচার্ডকে রীতি লঙ্ঘনকারী আচরণের জন্য ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ করা হয়েছিল। তাঁরা কোনও প্রতিবাদ না-করে ক্লাব থেকে বেরিয়ে যান। আরও একবার ফিদা হুসেন সেই একই ক্লাবে খালি পায়ে এসেছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল, আপনাকে একটা জুতো দিচ্ছি... তিনি স্মিত হাস্যে উত্তর দিয়েছিলেন, আমারই অন্যায়, আমার খালি পায়ে আসা উচিত হয়নি। তবে আমি তো খালি পায়েই চলি। তাঁকে বলা হয়নি, তিনি নিজেই ক্লাব ছেড়ে বেরিয়ে যান।
আরও একটি কথা, ক্লাবের অতিথি হিসাবে যাঁরা কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেন, ক্লাব তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। সেখানে তাঁদের জন্য পোশাক-বিধি প্রযোজ্য নয়। ইতিপূর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যালকাটা ক্লাবে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে একটি বিতর্ক সভায় যোগ দিয়েছিলেন। এবং হাওয়াই চপ্পল পরেই এসেছিলেন। শুভাপ্রসন্ন যে পোশাকে ক্যালকাটা ক্লাবে এসেছিলেন, দু-তিন বছর আগে সেই পোশাকেই তিনি বেঙ্গল ক্লাবে আমার পরিচালিত একটি অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন।
সুতরাং, কী নিয়ে প্রতিবাদ!
অমিতাভ চৌধুরী। কলকাতা-১৯
|
কী প্রয়োজন |
কলেজে ভর্তির জন্য ফর্মের সঙ্গে মার্কশিট ও অন্যান্য কাগজপত্র অ্যাটেস্ট করে জমা দিতে হয়। অ্যাটেস্ট করাতে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকের নানা ভাবে হয়রান হতে হয়। ভর্তির সময় তো মূল মার্কশিট ও বিভিন্ন কাগজপত্র দেখে নেওয়া হয়। তা হলে অ্যাটেস্ট করার প্রয়োজন কী? শুধুমাত্র বিভিন্ন কাগজপত্রের নকল দিলে অসুবিধা কোথায়? এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। শচীপদ সরকার। ডায়মন্ডহারবার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা |
|
|
|
|
|