|
|
|
|
মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্স পার্কিং নিষিদ্ধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ কোনও গাড়ি পার্কিং করা যাবে না বলে নির্দেশ জারি করলেন কর্তৃপক্ষ। আগেই অস্থায়ী দোকানদারদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ বার নজর পড়ল ‘অবৈধ’ পার্কিংয়ে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্যাম্পাসের মধ্যে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করায় রোগীর পরিজনেরা সমস্যায় পড়তেন। এ নিয়ে অভিযোগও আসছিল। আগেও এক বার গাড়ি পার্কিংয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করেই অনেকে ক্যাম্পাসের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ অন্য গাড়ি পার্কিং করতেন। কিন্তু এ বার নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নতুন নির্দেশের জেরে অধিকাংশ অ্যাম্বুল্যান্স ক্যাম্পাসের বাইরে রাস্তার ধারে পার্কিং করা হচ্ছে। ব্যস্ত রাস্তায় সেটাও যদিও সমস্যাই। কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স অবশ্য সেই হাসপাতাল চত্বরের ভিতরেই থাকছে। নির্দেশ অমান্য করে অ্যাম্বুল্যান্স ক্যাম্পাসের মধ্যে পার্কিং করা হলে, তার নম্বর নথিভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সুপার রামনারায়ণ মাইতির সাফ কথা, “রোগীর পরিজনেদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছিল। তাই ক্যাম্পাসের মধ্যে পার্কিংয়ের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।” |
|
হাসপাতালের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুল্যান্স। নিজস্ব চিত্র। |
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢোকার মুখেই এত দিন গাড়ি পার্কিং করা হত। সার দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকত। জরুরি বিভাগের অদূরেও অনেক সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স পার্কিং করা হত। ফলে সমস্যায় পড়তেন রোগীর পরিজনেরা। ক্যাম্পাসের মধ্যে দালাল-চক্রও ‘সক্রিয়’ ছিল অভিযোগ পেয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। পরিজনেদের বক্তব্য, কোনও রোগীকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে জানতে পারলেই দালালরা সংশ্লিষ্ট রোগীর পরিজনেদের কাছে পৌঁছে যেত। অনেক সময়ে অতিরিক্ত ভাড়াও দাবি করা হত। দাবি মতো বাড়তি ভাড়া দিতে অস্বীকার করলে দালালেরা বেঁকে বসত। জানিয়ে দিত, অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যাবে না। তখন অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজে পরিজনেদের দুর্ভোগে পড়তে হত।
রাজ্যে পালাবদলের পরেই মেডিক্যালের ক্যাম্পাস পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুধু অস্থায়ী দোকান সরালেই হবে না, পাশাপাশি অবৈধ ভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে কোনও বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে না। এ বার থেকে নিয়মিত আবর্জনা সাফাইয়ের উপরেও বাড়তি নজর দেওয়া হবে। এ দিকে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের মধ্যে। তাঁদের অধিকাংশের বক্তব্য, ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের পক্ষে অনুপম নায়েক বলেন, “ক্যাম্পাসের মধ্যে পার্কিং করতে দেওয়া না-হলে তো রোগীর পরিজনেরাই অসুবিধায় পড়বেন। জরুরি সময়ে অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়বেন। বরং ক্যাম্পাসে একটি নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়া হোক। আমরা সেখানেই পার্কিং করব।”
হাসপাতালের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “আমরা এমনও প্রস্তাব দিয়েছি যে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের মালিকরা তাঁদের মোবাইল নম্বর দিন, আমরা সেই নম্বর কাগজে প্রিন্ট করে ক্যাম্পাসে সাঁটিয়ে দেব। ফলে প্রয়োজন হলেই রোগীর পরিজনেরা অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর পেতে পারবেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে সাড়া মেলেনি। ক্যাম্পাসের মধ্যে গাড়ি পার্কিং করার অনুমতি কিন্তু কোনও মতেই দেওয়া হবে নয়।” |
|
|
|
|
|