‘অন্তঃসত্ত্বা’ নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে ফের পরীক্ষা
ষা দুর্লভকে নিয়ে বিতর্ক নতুন করে জটিল হওয়ার মধ্যেই প্রায় একই রকম আরেকটি ঘটনায় আবার অস্বস্তিতে নদিয়ার স্বাস্থ্যকর্তারা। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে ভর্তি উষা দুর্লভের পেটে প্রথমে শুধু ‘গ্যাস’ আছে বললেও গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরাই আবার দাবি করেছেন, তাঁর পেট থেকে চার মাসের মৃত ভ্রূণ মিলেছে! আর নাকাশিপাড়ার আরুফা বিবির ক্ষেত্রে প্রসবের সম্ভাব্য দিন পার হয়ে গিয়েছে বলে তাঁকে সেই কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে পাঠান বেথুয়াডহরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক। অথচ, বৃহস্পতিবার রাতে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে দেখেন, পেটে আদৌ কোনও বাচ্চা নেই। বাড়ির লোককেও তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পুরোটাই মহিলার মনের বিকার যাকে চিকিৎসার ভাষায় ‘সিউডোসায়াসিস’ বলা হয়। এই মানসিক অসুখে রোগিণী নিজের মনেই ভেবে নেন যে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা এবং সেই রকমই আচরণ করতে থাকেন।
গোটা ঘটনায় প্রাথমিক ও ব্লক প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যকাঠামোর ভঙ্গুর রূপ আরও এক বার প্রকট হয়েছে। আরুফা বিবি প্রথমে কুবেরনগর উপস্বাস্থকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা বিনা শারীরিক পরীক্ষায় শুধু রোগিণীর মুখের কথাতেই মাতৃত্ব সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করেন ও কার্ড দিয়ে দেন বলে জানা গিয়েছে। কার্ডের মধ্যে শিশুর জন্মের সম্ভাব্য দিন ২ জুন বলেও লিখে দেওয়া হয়। অন্তঃসত্ত্বাদের প্রয়োজনীয় সব রকম টিকাও নেন আরুফা। জননী সুরক্ষা যোজনার প্রথম দফার ৫০০ টাকাও পেয়েছেন তিনি।
আরুফা বিবি। নিজস্ব চিত্র।
কী করে বিনা পরীক্ষায় কাউকে গর্ভবতী বলে দেওয়া যায় তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি স্বাস্থ্যকর্তারা। নাকাশিপাড়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জীবেশ বাইন জানিয়েছেন, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ স্বীকার করেছেন প্রাথমিক, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, মূত্র, রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। তার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। বেথুয়াডহরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রেফারল টিকিটেও স্পষ্ট লেখা রয়েছে আরুফা বিবি অন্তঃসত্ত্বা। আরও লেখা আছে, তাঁর প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ থেকে ১৩ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। যে জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার টিকিট লিখে আরুফাকে সদর হাসপাতালে রেফার করেছিলেন সেই সুতপা বিশ্বাস বলেন, “ওঁর কাছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের যা কাগজ ছিল সবই এক জন প্রসূতির কাগজ। কিন্তু পেটে হাত দিয়ে কিছু বুঝতে পারছিলাম না। তাতে মনে হয়েছিল শিশুর বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া মহিলার পেটে ব্যথা ও রক্তপাত শুরু হয়। তাই তাঁকে রেফার করি।”
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরী বাচ্চা না-থাকার কথা জানানোর পরেও বিশ্বাস হচ্ছিল না আরুফা বিবির। হাসপাতালের বারান্দায় বসে বলে চলেছিলেন, “এত ডাক্তারেরা দেখলেন, তাঁরা সবাই বললেন বাচ্চা আছে। ইঞ্জেকশন নিলাম, পেটের ভিতর বাচ্চাটা নড়ল। আর এখন পেটের একটা ছবি তুলে ডাক্তার বলছেন বাচ্চা নেই। সব মিথ্যে বলছেন। আমি মানি না।” তাঁর বিভ্রান্তি দূর করতে শুক্রবার আরও একবার আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.