বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন, বিপর্যস্ত ট্রেনও
বৃষ্টিভেজা শহরে ভোগান্তির তালিকায় রেল এবং বিমানও। নিম্নচাপের তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে শুক্রবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বিমান ওঠানামা এবং ট্রেন চলাচল দুই-ই বিপর্যস্ত হয়। বিভিন্ন বিমান ঠিক সময়ে কলকাতায় নামতে না-পারায় এবং দমদম থেকে অনেক বিমান যথাসময়ে না-ছাড়ায় সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। প্রবল বৃষ্টিতে কোথাও ওভারহেড তারে গাছ ভেঙে পড়ায়, কোথাও বা লাইন ডুবে যাওয়ায় বিভিন্ন শাখায় বিঘ্নিত হয় রেল পরিষেবাও। অবশ্য দুর্যোগের শহরে যাত্রীর সংখ্যা ছিল কমই।
বৃষ্টির দাপট নয়, মূলত হাওয়ার প্রবল ঝাপটায় শহরে নামতে পারেনি ১১টি বিমান। এ দিন সকাল থেকে কলকাতার উপরেই ছিল নিম্নচাপের মেঘ। এমনিতে একটানা বৃষ্টিতে বিমানের ওঠানামায় অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু রানওয়ের উপর দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে সমানে হাওয়া বয়ে যাওয়াতেই বিপত্তি বাধে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে হাওয়ার প্রকোপ ছিল সব চেয়ে বেশি।
কলকাতা বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, “প্রবল আড়াআড়ি হাওয়ায় বিমান নামার চেষ্টা করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।” তাই বাধ্য হয়ে কলকাতার উপরে এসেও মুখ ঘুরিয়ে চলে যায় বেশ কিছু বিমান। হাওয়ার দাপট কমার পরে সেগুলি শহরে ফিরেছে। বিমানবন্দরের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা বি কে মণ্ডল জানান, হাওয়ার গতিবেগ কখনও আচমকা বেড়েছে, কখনও কমে গিয়েছে। অভ্যন্তরীণ ভবনে বিমান সংস্থার এক্স-রে মেশিনের পাশে ছাদ থেকে চুইয়ে জল পড়ায় সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। জল ঢুকেছে আন্তর্জাতিক ভবনেও। সকাল থেকে কমবেশি সব উড়ানই গড়ে তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ফলে বিমানবন্দরে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী ছিল কম।
কিংফিশারের একটি বিমান সকালে কলকাতায় নামতে না-পেরে ভুবনেশ্বরে ফিরে যায়। বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ থেকে আসা বিমানও চলে যায় ভুবনেশ্বরে। মুম্বই ও চেন্নাই থেকে আসা স্পাইসজেটের দু’টি বিমান আগরতলা ও গুয়াহাটিতে গিয়ে নামে। দিল্লি ও জয়পুর থেকে আসা ইন্ডিগোর দু’টি বিমানও ভুবনেশ্বর উড়ে যেতে বাধ্য হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার শিলচর উড়ান ফিরেছে আগরতলায়।
আগরতলা ও মুম্বই থেকে আসা জেটের দু’টি বিমান গুয়াহাটি উড়ে যায়। পটনার বিমান ফিরে যায় পটনায়। ব্যাঙ্কক থেকে তাই বিমান সংস্থার বিমান কলকাতায় নামতে না-পেরে চলে যায় ঢাকায়।
এ দিকে, প্রবল বর্ষণে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ মেন, বনগাঁ ও দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বাগবাজার ও প্রিন্সেপ ঘাট স্টেশনের মধ্যে লাইন জলমগ্ন হয়ে পড়ায় চক্ররেলেও ট্রেন বন্ধ ছিল সারা দিন। ওই রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী জানান, এ দিন প্রথমে সমস্যা হয় শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার শাখায়। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ বারাসত-হাসনাবাদ শাখার বসিরহাট ও চম্পাপুকুর স্টেশনের মধ্যে গাছ ভেঙে পড়ে ওভারহেড তারের উপরে। ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিয়ালদহ-ক্যানিং শাখাতেও চম্পাহাটি ও ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনের মধ্যে বেলা ১২টা নাগাদ ওভারহেড তারে গাছের ডাল পড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তুমুল বৃষ্টিতে শিয়ালদহ স্টেশনের ২, ৪-এ এবং ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে লাইনে জল জমে যাওয়ায় তিনটি প্ল্যাটফর্ম প্রায় সারা দিনই বন্ধ রাখতে হয়। বেলা বাড়ার পরে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি ভাল হলেও দেড়টা নাগাদ ফের নতুন সমস্যা শুরু হয় বালিগঞ্জ স্টেশনে লাইনে জল জমে যাওয়ায়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে অবশ্য তেমন সমস্যা হয়নি। তবে টিকিয়াপাড়া ও হাওড়া কারশেডে জল জমে যাওয়ায় হাওড়া-খড়্গপুর শাখার কিছু লোকাল ট্রেন দেরিতে চলেছে বলে জানান ওই রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার।
Previous Story Rajya Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.