রাজ্যের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ, শনিবার তাঁর দিল্লি যাওয়ার কর্মসূচি স্থগিত করে দিলেন। শুক্রবার রাতে মহাকরণ ছাড়ার আগে তিনি বলেন, “রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। শনিবার আমার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। আমি যাচ্ছি না। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে সোমবার দিল্লি যাব।”
মমতা বলেন, “দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য কলকাতা পুরসভা সব অফিসারের ছুটি বাতিল করেছে। ছুটির দিনে কাজ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে মৎস্য, সেচ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা, বিদ্যুৎ দফতরের পদস্থ কর্তাদেরও। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করছি।”
শনিবার বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূমে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এ দিন মহাকরণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তাকে। তার উল্লেখ করে মমতা বলেন, “ডিভিসি-কে এখন জল ছাড়তে বারণ করা হয়েছে।” প্রাকৃতিক দুর্যোগে কলকাতা এবং হাওড়া যেমন ভেসেছে, তেমনই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু জায়গায় নদীবাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। এই ব্যাপারে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। ওই এলাকায় পরিস্থিতির সামাল দিতে তাঁর দফতর কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা-ও মমতাকে জানান সেচমন্ত্রী। মানসবাবু জানান, নামখানা, বাসন্তী, গোসাবা ও সন্দেশখালিতে বেশ কিছু জায়গায় নদীবাঁধে ফাটল ধরেছে। কোথাও কোথাও বসে গিয়েছে নদীবাঁধ। কোলাঘাটের কাছে প্রায় ১২ ফুট নদীবাঁধে ফাটল ধরেছে। নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমায় কিছু কাঁচা বাড়ি ধসে গিয়েছে। দিঘা ও শঙ্করপুরে সমুদ্রে জল বাড়ছে। পরিস্থিতি বিচার করে সেচ দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ময়ূরাক্ষী, কংসাবতী এবং ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না-হলেও সেচ দফতরের পক্ষ থেকে ওই সব জলাধারের কর্তৃপক্ষকে এখন জল ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। জল ছাড়ার যথেষ্ট আগে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে বলে জানান সেচমন্ত্রী। মানসবাবু বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের অফিসেই থাকতে বলা হয়েছে। জেলাশাসকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করেন। মহাকরণে সেচ দফতরের একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। নম্বর ২৩২১৮৩৪১। মানসবাবু বলেন, “সেচ দফতর কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে কী ব্যবস্থা নেবে, তার একটি রিপোর্ট আমি এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছি। পরিস্থিতি জানিয়েছি।” |