|
|
|
|
শক্তি বাড়ল স্থলেই |
নিম্নচাপের ভোলবদলেই দুর্যোগ চলল রাজ্য জুড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নিম্নচাপের উলটপুরাণ!
সাধারণত স্থলভূমিতে ঢুকে পড়ার পরে কোনও নিম্নচাপ শক্তি হারিয়ে ফেলে। অনুকুল পরিস্থিতি না থাকায়, স্থলভূমিতে তা যত এগোয়, ততই ওই নিম্নচাপের শক্তি কমে যেতে থাকে।
কিন্তু শুক্রবার যে নিম্নচাপটি কলকাতাকে ভাসিয়ে দিল, তার ‘আচরণ’ দেখে আবহবিজ্ঞানীরা হতবাক। সমুদ্রে থাকা গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতেই ঢুকেছিল স্থলভূমিতে। তার পরেই তা হঠাৎ শক্তি বাড়িয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ। শুধু তা-ই নয়, নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে, সাগরদ্বীপ থেকে কলকাতা হয়ে বীরভূমের দিকে সরে গেলেও তার শক্তি কমেনি। স্থলভূমিতে যাত্রাপথেও শক্তি না-কমা এই নিম্নচাপের বৈশিষ্ট্য বলে গোকুলবাবু জানাচ্ছেন। |
|
অশান্ত সমুদ্র, নামেনি ট্রলার। পুরনো দিঘায়। |
নিম্নচাপের এই শক্তিবৃদ্ধির জেরেই কলকাতায় শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভেসেছে হাওড়া, সল্টলেকও। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই অতি গভীর নিম্নচাপটি অবস্থান করছিল বর্ধমানের কাছে। আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া হয়ে ঝাড়খণ্ডে চলে যাওয়ার আগে অতি গভীর নিম্নচাপটি ভাসাতে পারে গোটা দক্ষিণবঙ্গকেই। আজ, শনিবার দুপুর পর্যন্ত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছেন তাঁরা। উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার বেগে বইবে হাওয়া। উত্তাল থাকবে সমুদ্রও। মৎস্যজীবীদের তাই আরও দু’দিন গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কিন্তু কেন স্থলভূমিতে ঢুকে শক্তি বাড়ল নিম্নচাপটির? গোকুলবাবুর ব্যাখ্যা, “সঠিক কারণ অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। অনুকূল বায়ুপ্রবাহ ছাড়াও সমুদ্রের উচ্চ তাপমাত্রা নিম্নচাপের শক্তিবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আর এ বার সমুদ্রে একেবারে তীরের কাছে জলের তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল। সেটাই নিম্নচাপটির শক্তি বাড়ানোর অন্যতম মূল চালিকাশক্তি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।”
|
বিস্তারিত |
এত দিন অস্বস্তিকর আবহাওয়া কাটার আশায় সবাই আকাশের দিকে তাকিয়েছিলেন। আর এ দিন সকাল থেকে প্রশ্ন, জনজীবন বিপর্যস্ত করে দেওয়া বৃষ্টি কবে যাবে? কী বলছে আবহাওয়া দফতর? গোকুলবাবু জানান, অতি গভীর নিম্নচাপটি এ বার পশ্চিমাঞ্চল হয়ে যাবে ঝাড়খণ্ডে। যাওয়ার পথে গোটা দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি দিয়ে যাবে। তাঁর কথায়, “শনিবার রাত থেকে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ পরিষ্কার হবে। যদি ততক্ষণে অতি গভীর নিম্নচাপটি শক্তি কমিয়ে ঝাড়খণ্ডে চলে যায়, তবেই।” অর্থাৎ কত তাড়াতাড়ি নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যায়, তার উপরে নির্ভর করছে কত তাড়াতাড়ি দুর্যোগ কাটবে। তাই যতক্ষণ না নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডে ঢুকছে, ততক্ষণ ভারী বর্ষণের সতর্কতা তুলছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর। |
|
|
|
|
|