|
|
|
|
বৃষ্টি আর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শিল্পাঞ্চলে বিপর্যস্ত জনজীবন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যারাকপুর |
অবিশ্রান্ত বৃষ্টি আর বিদ্যুৎবিভ্রাটের জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বিপর্যস্ত ব্যারাকপুর-কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের জনজীবন। একদিকে আকাশ ভাঙা বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাস্তা-ঘাট, অন্যদিকে প্রায় ২৪ ঘন্টা একটানা বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
বর্ষার আগে অনেকটা সময় পেলেও শিল্পাঞ্চলের পুর এলাকাগুলোতে নিকাশি সমস্যা যে অবহেলিতই থেকে গিয়েছে দু’দিনের বৃষ্টি তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো শুক্রবার সকাল থেকে মোবাইল ফোন পরিষেবাও মুখ ঘুরিয়েছে। সব মিলিয়ে বর্ষার শুরুতেই এক নিম্নচাপের ধাক্কায় নাকানি-চোবানি খাচ্ছেন উত্তর শহরতলির দুই শিল্পাঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই বৃষ্টিতেই যদি বেসামাল অবস্থা হয়, তা হলে বড় দুর্যোগের মোকাবিলা কী ভাবে করবে প্রশাসন।
শুক্রবার দিনভর চলা বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে বরাহনগর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত কম-বেশি জলমগ্ন হয়েছে। কামারহাটি ও পানিহাটির অপেক্ষাকৃত নীচু জায়গাগুলোতে শুক্রবার সকাল থেকেই জল থই থই করছে। একই অবস্থা শিল্পশহর ব্যারাকপুরেও। |
|
জলমগ্ন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাস্তা। ছবি: বিতান ভট্টাচার্য। |
ব্যারাকপুর-বারাসত রোড এবং বি টি রোডের সংযোগকারী প্রধান রাস্তা সেন্ট্রাল রোড শুক্রবার সকাল থেকেই জলের তলায় চলে যায়। বেশিরভাগ স্কুলেই ‘রেইনি ডে’র ছুটি ঘোষণা করা হয়। বরাহনগর, খড়দহ, ব্যারাকপুর, কাঁকিনাড়া ও কাঁচরাপাড়ায় রাস্তার উপরেই গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় যান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। প্রবল বৃষ্টিতে নিকাশি নালা উপচে যাওয়ায় শহরের বহু বাড়ির একতলায় জল ঢুকেছে।
বৃহস্পতিবার রাতেই মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঙ্গার তীর ঘেঁষা এই শিল্পাঞ্চলের ফেরিঘাটগুলিতে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। মাছ ধরার নৌকাগুলিকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়। সকাল থেকেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জেরে এ দিন শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতেও হাজিরার সংখ্যা ছিল অপেক্ষাকৃত কম। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক অজয় পাল বলেন, “সর্বত্র পাম্প করে জমা জল বের করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বহু জায়গায় বিকল হয়ে যায়। ফলে জল বের করার পাম্প চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। একই অবস্থা ছিল পাশ্ববর্তী নদিয়ার কল্যাণী শিল্পাঞ্চলেও। প্রায় সারাদিনই বিদ্যুৎ ছিল না কল্যাণীতে। এমনিতেই শহরে গভীর নলকূপের অভাব রয়েছে। তার উপর বিদ্যুৎ না থাকায় অথৈ জলেও জলসঙ্কটে পড়েছেন শহরবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা তপন দাস বলেন, বাড়ির রিজার্ভারের জল শেষ হয়ে গেলে কী করব জানি না। এই ভরা বর্ষায় পানীয় জল জোগাড় করতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। |
|
|
|
|
|