রাস্তা তৈরির পরে দু’বছরও পেরোয়নি, শুরু হয়ে গিয়েছে দখলদারি। অভিযোগ উঠেছে, এর জন্য দমদমের বিমানবন্দরের নিরাপত্তায়ও সমস্যা হতে পারে। কিন্তু রাস্তার দায়িত্ব কার তা নিয়ে চলছে চাপান-উতোর।
২০০৮-এ দমদমের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের সময় ৯১ নম্বর বাসরুটের রাস্তাটি অধিগ্রহণ করা হয়। তার পাশে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার ৫, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়। নতুন রাস্তার দু’দিকেই রয়েছে উঁচু পাঁচিল। রাস্তার পাশে
প্রায় ৪ মিটার চওড়া খালি জমি। পুরসভা সূত্রে খবর, এখানে পরে পাকা নর্দমা এবং ফুটপাথ তৈরির পরিকল্পনা আছে। সেই জমিতেই শুরু হয়েছে দখলদারি। তৈরি হয়েছে ঝুপড়ি, দোকানপাট। খুঁটি পুঁতে জায়গা দখলও চলেছে।
কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাস রাস্তাটি পরিবহণ দফতরের অর্থে কেএমডিএ তৈরি করেছে। রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা পরিবহণ দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, পরিবহণ দফতর রাস্তাটি পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করেনি। ফলে রক্ষণাবেক্ষণ ও দখলদার উচ্ছেদ কে করবে তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এই রাস্তার সঙ্গে সলুয়াগামী ও আটঘরাগামী দু’টি রাস্তা যুক্ত হয়েছে। ৯১ নম্বর বাস ছাড়াও অনেক ছোট-বড় গাড়ি যাতায়াত করে। নিত্যযাত্রীরা জানান, সন্ধ্যার পরে বেশ কিছু বড় মালবাহী গাড়িও রাস্তার ধারে পার্ক করা থাকে। এতে নিরাপত্তার সমস্যা হতে পারে। তাঁদের দাবি, বিমানবন্দর লাগোয়া এই রাস্তা নিরাপত্তার কারণেই খালি থাকা বাঞ্ছনীয়। |
কেএমডিএর জনসংযোগ আধিকারিক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরিবহণ বিভাগের অর্থে ওই রাস্তার নির্মাণ শেষ করে পরিবহণ বিভাগকে কমপ্লিশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। এখন ওই রাস্তার কোনও দায়িত্ব আমাদের হাতে নেই।” উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌরীন দাস বলেন, “রাস্তার দখলদারি উচ্ছেদের দায়িত্ব পরিবহণ দফতর নিতে পারে না। ওই রাস্তা যদি পূর্ত দফতরের হাতে হস্তান্তর না হয়ে থাকে তবে পুরসভাকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।” পূর্ত বিভাগের বারাসত হাইওয়ে ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার দেবাশিস ঘোষ বলেন, “ওই রাস্তা সরকারি ভাবে আমাদের হাতে আসেনি। তাই দায়িত্ব আমরা নিতে পারি না।”
রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিমানবন্দরের উপদেষ্টা সমিতির সঙ্গে বৈঠকেই বিষয়টি তুলব। পূর্ত দফতর ও কেএমডিএ-র সঙ্গেও কথা বলব।” উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “বিমানবন্দরের দেওয়ালের ধারে যাতে কোনও মালবোঝাই গাড়ি না দাঁড়ায় তার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। দখলদারি উচ্ছেদের জন্য পূর্ত দফতর উদ্যোগী হলে আমরা প্রয়োজনীয় সাহায্য করব।” |