মশা
মূলে কুঠারাঘাত
কামান ব্যর্থ। তাই নৌকার শরণাপন্ন কলকাতা পুরসভা। লক্ষ্য মশা দমন।
এক সময় মশা মারার জন্য কামান দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হত। কিন্তু তেমন ফল না মেলায় নৌকা করে কলকাতার বিভিন্ন খালে মশা মারার তেল ছড়াচ্ছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর, কলকাতার ৫৭টি ওয়ার্ড খাল সংলগ্ন। ঠিকমতো সংস্কার না হওয়ায় অধিকাংশ খালই মশার আঁতুর।
চলতি বছরের মার্চ থেকে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট ক্যানেল (সিপিটি) দিয়ে নৌকায় মশা নিধন অভিযান শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। বেহালার চড়িয়াল খাল এক্সটেনশন, পূর্ব কলকাতার লিড চ্যানেল, পচা খাল, বেলেঘাটা ক্যানেল, দক্ষিণ কলকাতার টলি নালা, বোট ক্যানেল, বাঘাযতীন, সন্তোষপুর এবং গড়িয়ার লিড চ্যানেলে ১৪টি দাঁড় টানা নৌকায় করে ছড়ানো হচ্ছে মশা মারার তেল।
পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “খালের পার থেকে এক মিটারের মধ্যে মশা জন্মায় সবচেয়ে বেশি। একটি কিউলেক্স মশা নিজের জন্মস্থান থেকে যে কোনও দিকে পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত রক্তের সন্ধানে যেতে পারে। এই মশা সাধারণত ফাইলেরিয়া বা গোদের জীবাণু বহন করে। তবে খালের মাঝখানে খুব কম মশা জন্মায়। ম্যালেরিয়ার মশা জন্মায় নোংরা জলে।”
মশা মারার জন্য যে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে তার নাম ‘টেমিফস’। মশা মারার তেল খালের দুই পারে ছড়ানোর আগে ওই খালের জলে মশার লার্ভার সংখ্যা কত তা পরীক্ষা করে নেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট ক্যানেলের জলে এই কাজ শুরুর আগে মশার লার্ভার পরিমাণ ছিল ‘ডিপার’ (জল পরীক্ষার পাত্র) প্রতি ৫০০ থেকে ১৪৪৫। তেল ছড়ানোর এক দিন পরে এই খালে মশার পরিমাণ দাঁড়ায় ‘ডিপার’ প্রতি ৯৫ থেকে ৪৪৯। আরও এক সপ্তাহ বাদে এই সংখ্যা হয় ৭০ থেকে ২৫০। দশ দিন পরে লার্ভার সংখ্যা কমে হয় ‘ডিপার’ প্রতি ১৫ থেকে ৪৯।
পুরসভার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (স্বাস্থ্য) এবং উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপনকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে কীটনাশক খালে দেওয়া হচ্ছে তা হল একটি অর্গানো ফসফরাস জাতীয় কীটনাশক। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভাল ফল মেলে। পরিবেশের পক্ষেও এটি নিরাপদ।” দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় কোথাও কোথাও খালের নাব্যতা কমে গিয়েছে। ফলে অনেক জায়গাতেই নৌকা তিন চাকার ভ্যানে তুলে খালে নামাতে হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যকর্মীরা। মশা বাহিত রোগের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছে ‘র্যাপিড অ্যাকশন স্কোয়াড’। খালে মশা মারার তেল ছড়ানোর সময়ে খাল সংলগ্ন বসতি এলাকাতেও ছড়ানো হচ্ছে ওই কীটনাশক।
১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের খাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা নিতাই মাঝির কথায়: “আগের চেয়ে মশার উপদ্রব অনেকটাই কমেছে।” কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, এই প্রক্রিয়ায় খাল সংলগ্ন ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্য ৩৭টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এরই মধ্যে উপকৃত হয়েছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ এই প্রকল্পের কাজ প্রতি বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, এই প্রক্রিয়ায় খরচ অনেক কম হয়। অথচ সহজেই ফল পাওয়া যায়।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ তৃণমূলের অতীন ঘোষ বলেন, “কামানের ধোঁয়ায় লাভ হচ্ছিল না দেখে আমরা মশা নিয়ন্ত্রণের একটি বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করি। আমরা চেয়েছিলাম মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে। সেই লক্ষ্যেই খালে নৌকো চালিয়ে মশা মারার তেল ছড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কামানের তুলনায় এই প্রক্রিয়ায় ভাল সাড়া মিলেছে। তবে খালগুলো পরিষ্কার না থাকায় কাজে কিছু অসুবিধে হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সমস্যার সমাধান করে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”
ছবি: পিন্টু মণ্ডল

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
‘নিঃশব্দ অঙ্গীকার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি কলামন্দিরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়লা দুর্গত মানুষদের সাহায্যের জন্য ২০০৯-এ এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা করেন এক দল চিকিৎসক। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বনবিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং আরও কিছু বেসরকারি সংস্থা। অনুষ্ঠানে সাত জন দুঃস্থ ছাত্রকে বৃত্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ছিল গান এবং নৃত্যানুষ্ঠান।

সঙ্গীতানুষ্ঠান
সম্প্রতি শিশিরমঞ্চে হল ‘কলাবিহার’-এর ১৯তম বার্ষিক অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বে ছিল বৈঠকী রবীন্দ্রসঙ্গীত। গানে ও কথায় রবীন্দ্র নৃত্যনাট্যের কয়েকটি অংশ পরিবেশিত হয়। দ্বিতীয় পর্বে ছিল স্বামী বিবেকানন্দ ও রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে নৃত্য কোলাজ ‘অমৃতলোকে চল যাই’। অনুষ্ঠানটি সহযোগিতা করেছে ‘কলাক্ষেত্রম’।
Previous Story

Kolkata

Next Story

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.