|
|
|
|
তুমুল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে। ইতিমধ্যেই বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের অলিগলি তো বটেই বেশ কয়েকটি বড় রাস্তাতেও জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। দুই শহরেই নিকাশি বেহাল। আর তার জেরেই ভোগান্তির অন্ত নেই বাসিন্দাদের।
টানা বৃষ্টি শুরু হতেই দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই জেলার বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। শিলাবতী, কেলেঘাই, কপালেশ্বরী-সহ বহু নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের তরফে সবং, নারায়ণগড়, ঘাটাল, কেশপুর, কেশিয়াড়ি, দাঁতন-সহ বন্যাপ্রবণ প্রতিটি ব্লককেই হঠাৎ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলা করার জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে। |
|
তবে এই বৃষ্টিতে সব্জি চাষে সামান্য ক্ষতি ছাড়া বড় ধরনের ক্ষতির কোনও সম্ভাবনা নেই বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে। কিন্তু আরও কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হলে বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিতে পারে। তাতে আউস ধানের বিপুল ক্ষতি হবে। কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “এখন মাঠে সামান্যই সব্জি রয়েছে। সেই সঙ্গে আউস ধান লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে স্বাভাবিক ভাবেই চাষে ক্ষতি হবে।” |
|
জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮১.৯ মিলিমিটার। শুক্রবার সারাদিনই টানা বৃষ্টি হয়েছে জেলায়। বৃষ্টিপাতের গড় হিসেব বলছে, জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয় ৫০১.২ মিলিমিটার। এ বছরের হিসেব বলছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের জেলায় এ বছরে বৃষ্টির গড় দাঁড়িয়েছে ৩৭১.১ মিলিমিটার। আরও কয়েক দিন নাগাড়ে বৃষ্টি চললে অন্য বছরের গড় ছাপিয়ে যাবে।
একটানা তুমুল বৃষ্টিতে মেদিনীপুর-খড়্গপুর দুই শহরেই জনজীবন বিপর্যস্ত। একাধিক রাস্তা জলমগ্ন। বেহাল নিকাশির জেরে দুই শহরেই নর্দমার জল রাস্তা দিয়ে বইছে। সেই জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। খড়্গপুরের নিউটাউন, সারদাপল্লি, কৌশল্যা, মেদিনীপুর শহরের বিবেকানন্দপল্লি, সূর্যনগর, রাজাবাজার, দ্বারিবাঁধ-সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট সুনসান। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই পথে বেরোননি। যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁরা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। |
|
মেদিনীপুরের বড়বাজার, খড়্গপুরের গোলবাজারের মতো সদা ব্যস্ত এলাকাও এ দিন ছিল একেবারে ফাঁকা। ফুটপাতে দেখা মেলেনি হকারদেরও। দুর্যোগ উপেক্ষা করেই সাতসকালে বহু কচিকাচা স্কুলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। তাদের পথে নিয়ে বেরিয়ে রীতিমতো ভোগান্তিতে পড়েন অভিভাবকরা। রাস্তায় বাস ও অন্য গাড়ির সংখ্যা তুলনায় অনেকটাই কম ছিল এ দিন। ফলে, ভোগান্তিতে পড়ে বাধ্য হয়ে পথে বেরনো মানুষজন। গন্তব্যে পৌঁছতে অনেককেই দীর্ঘ পথ জল পেরিয়ে যেতে হয়। এ দিকে, দুর্যোগ কাটার কোনও খবর শোনাতে পারেনি আবহাওয়া দফতর। উল্টে তারা জানিয়েছে, নিম্নচাপের এই বৃষ্টি চলবে। সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। এই পূর্বাভাস জেলাবাসীকে যথেষ্ট আশঙ্কায় রেখেছে। |
শহরের জল-ছবি। শুক্রবার মেদিনীপুরে ছবি তুলেছেন কিংশুক আইচ, সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ। |
|
|
|
|
|