|
|
|
|
ভাসল হাওড়া, রেলের উপরে দায় চাপালেন মেয়র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
একটানা বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমার দায় রেলের ঘাড়ে চাপালেন হাওড়া পুরসভার মেয়র।
মেয়র মমতা জয়সোয়াল শুক্রবার অভিযোগ জানান, হাওড়ার মূল নিকাশি রানি ঝিলের উপর নির্ভরশীল। তা পরিষ্কারের দায়িত্ব রেলের। কিন্তু রেল নিয়মিত তা করে না। হাওড়ার তিন দিকে রেললাইনের পাশের নিকাশি খালগুলিও সাফ করেনি তারা। জমা জল না বেরোনোয় বিপর্যস্ত জনজীবন। রেলের পাল্টা বক্তব্য, ওই ঝিল সংস্কার রেল ও রাজ্যের যৌথ দায়িত্ব। রেল নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। এর পরেও পুরসভা কী করে তাদের ঘাড়ে দায় চাপায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রেল। |
|
বৃষ্টি মাথায় দীর্ঘ প্রতীক্ষা। শুক্রবার, হাওড়ার জেটি ঘাটে। রণজিৎ নন্দী |
বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টিতে এমন জায়গাও ডুবেছে যেখানে গত ২০ বছরে জল জমেনি। বন্ধ রাখতে হয় বহু স্কুল-কলেজ। সত্যবালা হাসপাতাল, জয়সোয়াল হাসপাতাল ও হাওড়ার ‘লাইফ লাইন’ জিটি রোড ছিল প্রায় দু’ ফুট জলের নীচে। যান চলাচল বিপর্যস্ত হয় পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস রোড, বেলগাছিয়া রোডে। পুরসভার সংযুক্ত এলাকাগুলিতে রাস্তার জমা জল অনেক বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়।
বাদ যায়নি শিবপুর, মল্লিক ফটক, নেতাজি সুভাষ রোড। স্থানীয়েরা জানান, ১৯৭৮-এর বন্যার পরে শুক্রবার ফের জল জমল দাশনগরে। তাঁদের অভিযোগ, দাশনগর স্টেশন সংলগ্ন ঝিল বেআইনি ভাবে বুজিয়ে ফেলায় এই দুর্ভোগ।
হাওড়ার ডিআরএম পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, “রেল ও রাজ্যের যৌথ ভাবে রানি ঝিল সংস্কার করার কথা। বছর দুয়েক আগে রেল সাত কোটি টাকা খরচ করে সংস্কার করেছে। কিন্তু ফের পৌরসভা এলাকার যাবতীয় নিকাশি ও বর্জ্য ফেলায় ঝিল বুজে গিয়েছে। এর পরে পুরসভা কী করে রেলকে দোষ দেয়?” তিনি আরও জানান, রেললাইনের পাশের নিকাশি খালগুলির সংস্কার শুরু হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “রেলের জন্য হাওড়া ডুবেছে, এ অভিযোগ ঠিক নয়।”
মেয়র অবশ্য জানান, শুধু রেল নয়, রাজ্যের পুর-দফতরের বিভিন্ন প্রকল্প ও সেচ দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে খাল সংস্কার না হওয়ায় এই দুর্ভোগ। তবে আচমকা এমন বৃষ্টিতে নিকাশি নালা থেকে পলি না তুলতে পারার কথাও স্বীকার করেছে পুরসভা।
জমা জল সরাতে হাওড়া পুরসভা এ দিন সকাল থেকে পাঁচটি পাম্প চালায়। সন্ধ্যায় আরও কিছু পাম্প চলে। মেয়র বলেন, “বিপর্যয় মোকাবিলার দলকে কাজে লাগানো হয়েছে। পুরসভায় একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।”
জল জমায় সমস্যায় পড়েন বালি পুর-এলাকার বাসিন্দারাও। জিটি রোড-এর জয়সোয়াল মোড়, লালাবাবু সায়র রোড, গুহ রোড-সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় বালি থেকে হাওড়া ও ধর্মতলামুখী বাসের সংখ্যাও ছিল কম। জল জমে থাকে বালি, বেলুড় ও লিলুয়ার নিচু জায়গাগুলিতেও। জল জমে কয়েকটি স্কুলেও। তবে জমা জল বার করতে পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বালির চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ী অবশ্য বলেন, “গঙ্গার পাড় থেকে বালি পুর-এলাকা নিচু হওয়ায় জমা জল পাম্প করে গঙ্গায় ফেললে তা ফের এলাকায় ঢুকবে। তাই পাম্প চালানো যাচ্ছে না। কিছু নিকাশি নালা সংস্কার বাকি থাকায় কিছু এলাকায় জল নামতে সময় বেশি লাগছে।” একই ছবি বালি জগাছা ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতেও। ঝড় বৃষ্টিতে বালির দু’নম্বর জাতীয় সড়কে রিফিল পেট্রোল পাম্পের সামনে একটি বড় গাছ পড়ে যায়। |
|
|
|
|
|