|
|
|
|
ত্রিপুরা মেডিক্যালে ভর্তি-পদ্ধতির বদল দাবি |
আশিস বসু • আগরতলা |
ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিয়ে প্রচলিত পদ্ধতির পরিবর্তন চাইছে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস। রাজ্য বিধানসভায় পরিষদীয় নেতা তথা বিরোধী দলনেতা রতনলাল নাথ দেশের একমাত্র বামশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে চিঠি লিখে ভর্তির ক্ষেত্রে দুই মেডিক্যাল কলেজে একই নীতি গ্রহণ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন। আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজটি সরাসরি সরকার পরিচালনাধীন। আর ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজটি একটি সোসাইটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দুটি মেডিক্যাল কলেজই সরকারি টাকায় পরিচালিত হলেও ভর্তির ক্ষেত্রে দু’টি আলাদা নিয়ম চালু রয়েছে। আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয় ত্রিপুরা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে। অন্য দিকে, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সম্পন্ন হয় কমন এন্ট্রান্স টেস্ট (ক্যাট) -এর মাধ্যমে।
১০ জুন ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। মোট ১০০ আসনের মধ্যে ৫৫টি আসন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীর, বাকি ৪৫টি আসন সংরক্ষিত থাকে অন্য রাজ্যের ছাত্রছাত্রীর জন্য। এ দিকে, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মোট ১০০ আসনের ৮৫টি ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রীর জন্য নির্দিষ্ট থাকে, বাকি ১৫টি আসন বরাদ্দ থাকে ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ দু’টিই সরকারি টাকায় নিয়ন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও দু’টি কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া ও আসন বন্টন ব্যবস্থা ভিন্ন রকম হয় কী করে? তিনি জানান, দু’টি মেডিক্যাল কলেজে দু’ রকম ব্যবস্থা চালু থাকতে পারে না। তাঁর দাবি, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের ১৫টি আসন ‘সেন্ট্রাল পুলের’ জন্য সংরক্ষিত রেখে বাকি ৮৫টি আসনই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট রাখতে হবে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী রয়েছে, মেডিক্যাল কলেজে আসনের অভাবে তারা অন্য রাজ্যে ক্ষমতা থাকলে চলে যাচ্ছে। আর না হলে, সুযোগের অভাবে ডাক্তারি পড়তে পারছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন, উভয় মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হবে ত্রিপুরা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মেধা-তালিকার মাধ্যমে। ‘এ ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিয়ে সরকারি দ্বিমুখী (‘ডবল স্ট্যান্ডার্ড’) নীতির মান্যতা স্বীকার করা হবে না। এখনও সরকারি স্তরে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দু’-তিন দিনের মধ্যেই কংগ্রেসের তরফ থেকে এ বিষয়ে পথেঘাটে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। জনস্বার্থে আমাদের আন্দোলন চলবে’, তিনি আজ জানান।
রতনলালবাবু বলেন, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছিল প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের মাধ্যমে। সরকারের সঙ্গে একটি বেসরকারি সংস্থার চুক্তির মাধ্যমে এই কলেজটি চালু হয়। বিধানসভায় এ বিষয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে বিরোধীদল আপত্তিও করে। কিন্তু সে সময়ে কোনও কাজ হয়নি। বেসরকারি সংস্থা বছর দু’য়েক আগে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যায়। তখন থেকেই ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজটি একটি সোসাইটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সোসাইটির ম্যানেজিং কমিটি ভর্তি সংক্রান্ত নিয়মকানুন ঠিক করে, কিন্তু কলেজ পরিচালনের ক্ষেত্রে আথির্ক সাহায্য আসে সরকারি বাজেট বরাদ্দ থেকে, জানালেন ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিসেস, সত্যরঞ্জন দেববর্মন। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী অনিল সরকারকে, মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রভর্তি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সরাসরি বলেন, ‘মেডিক্যাল কলেজের ভর্তির বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রাণাধীন। কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’ |
|
|
|
|
|