বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা এক মহিলা ও তাঁর শিশু সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই তড়িদাহত হয়ে মারা গেলেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মধ্য কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিট এবং চৌরঙ্গি লেনের সংযোগস্থলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। নিউ মার্কেট থানার পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কেশরমল গুপ্ত (৫৫)। বাড়ি বেলঘরিয়ার ঋষি বঙ্কিম চ্যাটার্জি রোডে। তিনি চৌরঙ্গি লেনের এক বাসিন্দার গাড়ি চালাতেন। সেখানে যাওয়ার সময়েই এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কিড স্ট্রিটে ‘সেন্ট্রাল ফুড ল্যাবরেটরি’র কর্মী তারকেশ্বর শাহের স্ত্রী সবিতা আড়াই বছরের ছেলে হিতেশকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। হিতেশ চৌরঙ্গির এক স্কুলে নার্সারিতে পড়ে। বৃষ্টিতে চৌরঙ্গি লেন, মার্কুইস স্ট্রিট প্রভৃতি এলাকায় তখন কোমর-জল। সওয়া ১১টা নাগাদ স্কুল ছুটির পরে ছেলেকে কোলে নিয়ে সবিতা মার্কুইস স্ট্রিট ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের বাড়ি সেন্ট্রাল ফুড ল্যাবরেটরির পিছনের একটি অংশে।
সবিতা জানান, চৌরঙ্গি লেনের মুখে তিনি অনুভব করেন, পায়ের তলায় তীব্র জোরে ধাক্কা। ছেলেকে নিয়ে সটান মুখ থুবড়ে পড়ে যান। আর তখনই ফের জোরালো ধাক্কা লাগে তাঁর শরীরে। সবিতার কথায়, “ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় জলের মধ্যে পড়ে রয়েছি আর ‘বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছি। কেউ টেনে তুলতে আসছে না। খানিক পরে দেখি মাঝবয়সী এক ব্যক্তি হাতে ছাতা ধরে আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে গিয়ে পড়ে গেলেন। আর নড়াচড়া করলেন না।” পুলিশ জানায়, স্থানীয় কয়েক জন যুবকই পরে সবিতা ও হিতেশকে উদ্ধার করেন। মা ও ছেলের প্রাথমিক চিকিৎসা হয় কিড স্ট্রিটে। তাঁরা সুস্থ।
প্রত্যক্ষদর্শী রাজেশকুমার শাহ ও মহম্মদ ফিরোজ জানান, এক মহিলা ও তাঁর ছেলে রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে গিয়েছেন দেখে তাঁরা প্রথমে কাঠের একটি ঠেলাগাড়ি জোগাড় করেন। ওই গাড়ি টেনে নিয়ে গিয়ে তা দিয়ে সবিতা ও হিতেশকে ঠেলে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। যেখানে সবিতা পড়ে যান, তার কাছে আসতেই তাঁরা দেখেন কেশরমল ওই মহিলা ও শিশুটিকে তুলতে যাচ্ছেন। এর কয়েক মুহূর্ত পরেই তড়িদাহত হন ওই ব্যক্তি।
এ দিন ভোরে আরও এক ব্যক্তি তড়িদাহত হয়ে মারা গিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম প্রেমচাঁদ মণ্ডল (৫৫)। রাস্তায় তার ছিঁড়ে পড়েছিল। তাতে পা দিয়েই তড়িদাহত হন তিনি। অন্য দিকে, আলিপুর আদালত চত্বরে উপড়ে পড়া গাছ কাটতে গিয়ে গুরুতর জখম হন গ্রিন পুলিশের এক কর্মী। তাঁর নাম সুমন রায় (২৩)। গাছের একটি ডাল গায়ে এসে পড়লে বৈদ্যুতিক করাতটি সুমনের ডান পায়ে লাগে। |