|
|
|
|
জলমগ্ন সেক্টর ফাইভ, বিধাননগর |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শুক্রবারের বৃষ্টিতে ভাসল বিধাননগর ও সেক্টর ফাইভ। বিধাননগরে জল দ্রুত নামলেও পাঁচ নম্বর সেক্টরের অবস্থা ছিল ভয়াবহ। চরম ভোগান্তিতে পড়েন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। পাঁচ নম্বর সেক্টরে নিত্যযাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ জল জমা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
লাগাতার বৃষ্টিতে এসডিএফ, কলেজ মোড়, টেকনোপলিস, উইপ্রো মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় কোথাও হাঁটু সমান কোথাও বা তার বেশি জল জমে ও দীর্ঘক্ষণ জল দাঁড়িয়ে থাকে। যে ইস্টার্ন ড্রেনেজ ক্যানাল দিয়ে এলাকার অধিকাংশ জমা জল ফেলা হয়, মেট্রোর কাজ চলায় সেটি বন্ধ। নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন জল সরাতে পাম্প চালায়নি। সম্প্রতি এই দুই সংস্থা ও নগরোন্নয়ন দফতরের মধ্যে এই সমস্যা নিয়ে বৈঠক হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয়, জল সরাতে প্রয়োজনীয় পাম্প চালানোর ব্যবস্থা থাকবে। যদিও কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের আধিকারিকেরা জানান, সকালে একটি বড় পাম্প খারাপ হওয়ায় এই সমস্যা হয়। পরে চারটি পাম্প চালানোয় জল দ্রুত নামতে থাকে। ১০ জুলাইয়ের পরে ইস্টার্ন ড্রেনেজ খালের এক দিক খুলে দেওয়া হবে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান। |
|
জল ঠেলে যাত্রা। শুক্রবার, সেক্টর ফাইভে।-অর্কপ্রভ ঘোষ |
এ দিকে পাঁচ নম্বর সেক্টরের অপর প্রান্তের জল ফেলা হয় ভেড়িতে। পাঁচ নম্বর সেক্টরের জল ভেড়িতে ফেলতে থাকলে প্রান্তিক এলাকা জলমগ্ন হতে পারে বলে সেখানকার বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বিধাননগরে বিকাশ ভবন চত্বর, করুণাময়ী-সহ অফিসপাড়া এলাকা জলে ভাসে। মেট্রোর কাজ চলায় বহু গালিপিট বন্ধ হয়ে জল জমে। ইস্টার্ন ড্রেনেজ খালের ধারেও সকালে জল ছিল। তবে সকাল থেকে বিধাননগর পুরসভা দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা নেয়। বিধাননগরের ৯টি জল নিকাশি স্টেশনের ৫২টি পাম্প চালানো হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ কোনও এলাকা জলমগ্ন হয়নি। বিকেলে অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি একটু ধরলে জল নামে। ঝড়ে গাছ পড়ে অনেক জায়গায়। বিদ্যাসাগর আবাসনের ভিতরে গাছ পড়ে একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানা বলেন, “বর্ষার জন্য আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। কাজের জন্য কিছু জায়গায় গালিপিট বন্ধ থাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে জল জমেছে। মোটের উপর সল্টলেক জলমগ্ন হয়নি।” চিৎপুর লকগেট খুলে দেওয়ায় গঙ্গার জলে কেষ্টপুর খাল ভরে রয়েছে। ফলত পুর কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা এর পর বৃষ্টি বাড়লে জল ‘ব্যাক ফ্লো’ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে হয়তো বিধাননগরকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। বৃষ্টির জেরে এ দিন বিধাননগর পুরসভার নতুন পুরবোর্ডের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
এ দিকে, দমদম পার্ক, বাঙুর, লেকটাউন, বাগুইআটি ও পাতিপুকুর এলাকাও জলে থই থই। পাতিপুকুরের বসাকবাগানের একতলা বাড়ির ভিতর জল ঢুকতে শুরু করে শুক্রবার দুপুর থেকে। দমদম পার্কের এক নম্বর ট্যাঙ্কের পাশের রাস্তায় কয়েকটা গাছ বিদ্যুতের তারের উপর পড়লে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে যায়। দমদম স্টেশনের আন্ডারপাস ও পাতিপুকুর আন্ডারপাসে জল জমে যায় সকাল থেকেই। এই সুযোগে অটো ও রিকশা যেমন ইচ্ছে ভাড়া হেঁকেছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেমারম্যান অঞ্জনা রক্ষিত অবশ্য বলেছেন, “বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরসভা পাম্প চালানোয় জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে।” |
|
|
|
|
|