|
|
|
|
দুর্যোগের টুকিটাকি |
গাছ ভেঙে অন্ধকার |
বৃষ্টির সঙ্গে আসা ঝড়ে উপড়ে এবং ভেঙে গেল গাছ। একটা বা দু’টো নয়, ৮০টি। শুক্রবার সকাল থেকে পুরকর্মীরা বিভিন্ন রাস্তায় গাছ কাটতে কাটতে গলদ্ঘর্ম। গাছ পড়ে রাস্তা তো আটকে গেলই, অনেক জায়গায় চলে গেল বিদ্যুৎও। কারণ গাছ মাটিতে পড়েছে ওভারহেড তার ছিঁড়ে দিয়ে। ফলে বর্ষার সকালে মহানগরীর অনেক এলাকাই ছিল বিদ্যুৎবিহীন। জলমগ্ন এলাকায় বহু বাড়িতে মিটার বক্সে আগুন লেগে যায় বা ধোঁয়া বেরোতে থাকে। সিইএসসি সূত্রে বলা হয়, এ ধরনের পুরনো বাড়িতে অনেক সময় জল চুইয়ে পড়ার সমস্যা থাকে। তা থেকেই মিটার বক্সে শর্ট সার্কিট হয়। সিইএসসি জানায়, তাদের ১৫০টি ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নামিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়। বৃষ্টিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৭ ডিগ্রি কমে হয় ২৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যান্য দিনে বেলা ২টোয় সিইএসসি-র বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ১৫০০ মেগাওয়াট। শুক্রবার ওই সময়ে তা কমে হয় ১১০০ মেগাওয়াট।
|
বৃষ্টি, সৃষ্টি |
|
জল থইথই মহাকরণে ঢুকছেন মুখ্যমন্ত্রী। |
শুক্রবার বেলা ১২টা ৩৫ মিনিট। মহাকরণের সামনে থইথই জল। সামনের বাঁধানো চত্বরও জলের নীচে। গাড়ি থেকে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোকচিত্রীদের ভিড় পেরিয়ে জল ভেঙেই ঢুকে পড়লেন ভিতরে। খানিকটা এগিয়েই ফিরে এলেন মমতা। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বললেন, “আপনারা অনেকে তো দেখছি ভিজে গিয়েছেন।” জবাব এল “না না ম্যাডাম, ঠিক আছে।” দোতলায় উঠতেই মমতাকে ঘিরে ধরলেন সাংবাদিকেরা। বৃষ্টি ও জল জমা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে চান তাঁরা। মৃদু হেসে মমতা শুধু বললেন, “বৃষ্টি, সৃষ্টি।” মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে তখন কয়েক জন সাক্ষাৎপ্রার্থী দাঁড়িয়ে। ঘরে ঢোকার সময়ে তাঁদের দিকে তাকিয়ে মমতা বলে গেলেন, “আজ প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। সব বাড়ি চলে যান।”
|
নজিরবিহীন |
জল জমে যায় বিধানসভা ভবন চত্বরেও। এটা নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান। অধিবেশনের প্রথমার্ধে তিনি বলেন, “সারা রাজ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের উচিত সভার কাজ বন্ধ করে এলাকায় গিয়ে কাজ করা।” শিল্প ও বাণিজ্য এবং পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমি আনিসুরের সঙ্গে সহমত। গত ৩৪ বছরে স্পিকার এই বিষয়ে কোনও কাজই করেননি। তাই বিধানসভা এলাকার মধ্যেও জল জমেছে।” পার্থবাবু স্পিকারের উদ্দেশে আর্জি জানান, তিনি যেন নিজে দায়িত্ব নিয়ে বিধানসভা এলাকার জল নিকাশির ব্যবস্থা করেন। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “বিধানসভা চত্বরে জল জমলে যদি স্পিকারকে দায়িত্ব নিতে হয়, তা হলে মহাকরণের সামনে জল জমলে কে দায়িত্ব নেবেন? এটা সামগ্রিক সমস্যা। সেই ভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। স্পিকার যদি মনে করেন, দায়িত্ব নিতেও পারেন!” পার্থবাবু তখন বলেন, আমি স্পিকারকে দায়িত্ব নিতে বলছি না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করছি।”
|
জমি বিলি নিয়ে গৌতমের নামে মামলা খারিজ |
হিডকোর চেয়ারম্যানের কোটায় জমি দেওয়া নিয়ে জনস্বার্থের মামলাটি খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার ওই মামলা করেছিলেন। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনকারীর বক্তব্যে কোনও সারবত্তা পায়নি। বেঞ্চের মতে, অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে তেমন কোনও শক্ত ভিত্তি ছিল না। আবেদনকারীর অভিযোগ ছিল, হিডকোর তৎকালীন চেয়ারম্যান গৌতম দেব নিজের কোটায় বহু জমি বিলি করেছেন। বিজ্ঞাপন না-দিয়ে ইচ্ছামতো কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রাজারহাট-নিউ টাউনে জমি দিয়েছেন। যা তিনি পারেন না। ডিভিশন বেঞ্চ সেই সময় রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে বলে। হলফনামায় পূর্বতন বাম সরকার জানিয়েছিল, চেয়ারম্যান কোনও জমি দেননি। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জমি দেওয়ার জন্য কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটিই সব আবেদন খতিয়ে দেখে সর্বস্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জমি দিয়েছে। এ দিন শুনানির সময় অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র বলেন, আবেদনকারীর বক্তব্যের ভিত্তি নেই। আবেদনকারী আরও তথ্য দেওয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ইতিমধ্যেই অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারী মনে করলে নতুন করে মামলা করতে পারেন।
|
মোকাবিলা কমিটি |
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় পরিকাঠামো তৈরির জন্য স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ওই কমিটিতে থাকছেন মৎস্য, সেচ, প্রতিরক্ষা, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিবেরা এবং কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার। থাকছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দায়িত্বে থাকা আইজি। কমিটি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসবে বলে শুক্রবার জানান বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব ইন্দীবর পাণ্ডে। দফতরে ২৪ ঘণ্টার যে-কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, ২২১৪-৩৫২৬ এবং ১০৭০ (টোল-ফ্রি) নম্বরে ফোন করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ
করা যাবে।
|
যেন চানঘরে |
সকালে কলকাতা হাইকোর্টের কাজ শুরু হওয়ার সময় থেকেই দেখা যায়, প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের এজলাসে ছাদ থেকে জল পড়ছে। এজলাসে তখন গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থের মামলা চলছিল। কিন্তু ছাদ থেকে এখানে-ওখানে জল পড়ার বিরাম নেই। প্রধান বিচারপতি বসে বসে জল পড়া দেখতে থাকেন। কিছু পরে তিনি রাজ্যের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার)-কে বলেন, সরকারকে এই বিষয়টা দেখতে বলুন। সেই সঙ্গেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “মনে হচ্ছে, চানঘরে রয়েছি।”
|
হঠাৎ আগুন-আতঙ্ক মহাকরণে |
বৃষ্টির রাতে আগুন-আতঙ্ক ছড়াল মহাকরণের তেতলায়। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। দমকল সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ঘরে হঠাৎ ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বেজে ওঠায় মহাকরণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দমকলের ডিভিশনাল অফিসার তপন ঘোষ জানান, তিনটি ইঞ্জিন গিয়েছিল। তবে ঘরে আগুন লাগার চিহ্ন মেলেনি। একটি সূত্রের খবর, বৃষ্টি থেকে শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থলে যান। |
|
|
|
|
|