|
|
|
|
হাতে নিতে চায় প্রতিরক্ষা পর্ষদ |
আশার আলো রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্তান কেবলস কারখানায় |
সুশান্ত বণিক • আসানসোল |
হিন্দুস্তান কেব্লস-এর রূপনারায়ণপুর কারখানা হাতে নিতে আগ্রহী দেশের প্রতিরক্ষা পর্ষদ অর্ডন্যান্স বোর্ড। পর্ষদের তরফে কর্তৃপক্ষের কাছে এই কারখানার যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। যা ৩০ জুনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের জমা দেওয়ার কথা। তা ছাড়া, শীঘ্রই কারখানা পরিদর্শনে আসবে পর্ষদের প্রতিনিধিদল। তাই কারখানার জমি, পরিবেশ, যন্ত্রপাতি কিংবা শেড যেন তাঁদের পছন্দসই হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
বর্ধমানের এই রুগ্ণ সংস্থার পুনরুজ্জীবন বা সেখানে কোনও সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে উৎপাদন শুরুর জন্য কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করছে ভারী শিল্পমন্ত্রক। আগ্রহপত্র বা ‘এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট’ চাওয়া হয়েছে সংস্থার কাছ থেকে। কিন্তু গত ৮ বছরে অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এরই মধ্যে মাস পাঁচেক আগে কারখানাটি নেওয়ার আগ্রহ দেখায় প্রতিরক্ষা পর্ষদ।
কারখানার সিজিএম গৌতম ঘোষ বলেন, “কারখানার যাবতীয় তথ্য ৩০ জুনের মধ্যে লিখিত ভাবে পর্ষদের কাছে পাঠাতে হবে। তা ছাড়া কারখানা দেখতে আসবেন পর্ষদের বিশেষজ্ঞ দল।” এখন কর্মী সংখ্যা কত, তাঁদের অবসরের সময়, বেতন কাঠামো, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা, আবাসন ও জমির পরিমাণ, কারখানা এলাকার পরিমাণ, যন্ত্রপাতির ধরন, মূলত কী ধরনের কেব্ল তৈরি হত ইত্যাদি নানা বিষয়ের খুঁটিনাটি পর্ষদের কাছে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। |
|
হিন্দুস্তান কেব্লস সূত্রের খবর, দেশের ১২টি জায়গায় ‘ইউনিট’ গড়বে অর্ডন্যান্স বোর্ড। এর জন্য কয়েক হাজার কোটি টাকা লগ্নি করবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এর মধ্যে কেব্লস কারখানার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে গড়া হয়েছে ১০ সদস্যের দল। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা একমত হওয়ার পরই শুরু হয়েছে পরবর্তী প্রক্রিয়া। গৌতমবাবু বলেন, “রিপোর্ট তৈরি করছি। পর্ষদ সবুজ সংকেত দিলে ১১ বছরের দুঃসময় কাটবে।” প্রতিরক্ষা পর্ষদ সূত্রে অবশ্য খবর, বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে শেষ পর্যন্ত হাতে নেওয়া হলে, তা পর্ষদের-ই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
টেলিফোনের জন্য ‘জেলিফিলড্ কেব্ল’ তৈরি করতে রূপনারায়ণপুরের কারখানা গড়া হয় ১৯৫২ সালে। পরে ওই কেব্লের বাজার পড়ে যায়। ’৯০-এর দশক থেকে ধুঁকতে শুরু করে কারখানাটি। ১৯৯৭-এ যায় বিআইএফআরে। ২০০৫-এ এটির ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব বর্তায় ‘বোর্ড ফর রিকনস্ট্রাকশন অফ পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস’ (বিআরপিএসই)-এর হাতে। গত কয়েক বছর ধরেই বন্ধ উৎপাদন। পুনরুজ্জীবন নিয়ে বিআইএফআর ও বিআরপিএসই-র উদ্যোগে ৩০টির বেশি বৈঠক হলেও সমাধান মেলেনি। শেষ বৈঠক হয় ২২ ফেব্রুয়ারি। ৮ মার্চ ফের বৈঠক ডাকা হলেও, বাতিল হয় বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। এ বার প্রতিরক্ষা পর্ষদ আগ্রহ প্রকাশ করায় অবশ্য তথ্য আদান-প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে।
কারখানা সূত্রে খবর, ৯৯ জন অফিসার-সহ এখন কর্মী সংখ্যা ১,০২৭। কারখানার ভিতরে ও বাইরে আছে ৯৬৭ একর জমি। আছে কয়েক হাজার আবাসনও। কিন্তু প্রায় ৮ মাস বেতন পাননি শ্রমিকেরা। তাই এই পরিস্থিতিতে কারখানা হাতে নিতে পর্ষদ আগ্রহ দেখানোয় আশার আলো দেখছেন শ্রমিক-কর্মীরা। |
|
|
|
|
|