স্কুলভোটে জোট বিজেপি-সিপিএমের
স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল বিজেপি। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকও। ঘটনাটি ময়ূরেশ্বর থানার লোকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির ক্ষমতায় আছে সিপিএম। আগামী ২৬ জুন সেখানে পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধির ৬টি আসনে নির্বাচন। শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন। এ দিন কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের তরফে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। অন্য দিকে, এ দিনই সিপিএমের স্থানীয় ষাটপলশা লোকাল কমিটির কার্যালয় থেকে সিপিএমের ময়ূরেশ্বর জোনাল কমিটির সদস্য গৌরগোপাল মণ্ডল এবং বিজেপি-র ঢেকা অঞ্চল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিলীপ মণ্ডলের নেতৃত্বে মিছিল করে স্কুলে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন ওই জোটের ৬ জন প্রার্থী। ছিলেন ফব নেতৃত্বও। প্রার্থীদের মধ্যে বিজেপি-র অঞ্চল কমিটির প্রাক্তন সভাপতিও রয়েছেন। ফব অবশ্য কোনও প্রার্থী দেয়নি।
ঘটনা হল, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বিজেপি-র সঙ্গে জোট করেই সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল ফব। সংশ্লিষ্ট ঢেকা পঞ্চায়েত ও ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় রয়েছে এই মিলিজুলি জোটই। স্বাভাবিক ভাবেই স্কুল পরিচালন সমিতিতে এ হেন সমীকরণে ক্ষুব্ধ বিজেপি এবং ফব-র কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। তাঁদের কথায়, “সিপিএম-বিরোধী হিসাবেই আমরা পঞ্চায়েতে ফব কিংবা বিজেপিকে সমর্থন করেছিলাম। এখন স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে সেই সিপিএমের সঙ্গেই হাত মেলানো কী করে মানা সম্ভব?” একই ভাবে ক্ষুব্ধ সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের একাংশও।
স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের অঞ্চল কমিটির সভাপতি বামাপদ ভল্লার কটাক্ষ, “বিজেপি-কে বরাবর সাম্প্রদায়িক দল হিসাবে আখ্যা দেন সিপিএম নেতারা। এখন স্কুলের ক্ষমতা দখলের জন্য সেই বিজেপি-র সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধায় সাধারণ মানুষ তো বটেই, সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরাও ভাল ভাবে নেবেন না।” বিজেপি-র ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক (মণ্ডল) সভাপতি তামাল মণ্ডলও বলেছেন, “এমন জোট কাম্য নয়। আমরা দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে বলেছিলাম, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে ভাল। না হলে একাই ৬টি আসনে লড়তে। তা সত্ত্বেও কেন এমন হল, তা তদন্ত করে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত পাল বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে আমরা স্থানীয় মানুষের চাহিদা মেনে ফব এবং বিজেপি-র সঙ্গে জোট করেছিলাম। কিন্তু বিধানসভা ভোটের ফলে স্পষ্ট, সিপিএম তথা বামফ্রন্টের পাশাপাশি মানুষ বিজেপি-কেও চান না। তাই দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই আমরা স্কুল ভোটে শুধুমাত্র কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছি।”
বিজেপি-র সঙ্গে তাঁরা ‘নীতিগত’ ভাবে কোনও রকম জোট করার বিরুদ্ধে জানিয়েও সিপিএমের জোনাল সদস্য গৌরহরিবাবুর যুক্তি, “আমরা স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থেই স্থানীয় জনমতের ভিত্তিতে প্রগতিশীল প্রার্থীদের নিয়ে জোট করেছি। কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হয়নি।” ফব নেতা শিবনাথ মুদি জানান, তাঁরা কেবল প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীদের সমর্থন করছেন।
অন্য দিকে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লাভপুর কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটির পরিচালন সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। ৪৬ প্রতিনিধির ওই সমিতিতে শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। জোটের প্রার্থীরা ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন দেননি বলে ওই কৃষি সমবায় সূত্রে জানা গিয়েছে। ১৯৯৫ সালে ওই সমিতিতে শেষবার নির্বাচন হয়েছিল। সে বার ক্ষমতায় দখল করে ফব-কংগ্রেস জোট। প্রতি তিন বছর অন্তর নির্বাচনের নিয়ম থাকলেও এত দিন তা তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। সমিতির সভাপতি অশোক মণ্ডল জানান, নানা জটিলতায় এতদিন ভোট করা যায়নি। তবে, এ বার ৪৬টি আসনেই কংগ্রেস-তৃণমূল জোট জয়ী হয়েছে।
Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.