আউশগ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, জখম ১১
তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বোমা-গুলির লড়াইয়ে আহত হলেন ১১ জন। এর মধ্যে আটজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং তিন জনকে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও দলীয় নেতৃত্বের একাংশ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি।
শুক্রবার সকালে আউশগ্রামের উক্তা গ্রামের বাগানপাড়ায় জমা জল বের করে পুকুরে ফেলা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। পুলিশ জানায়, বোমাবাজি হয়, গুলিও চলে। আহতদের শরীরে বোমা ও গুলির ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন। দু’পক্ষই গুসকরা ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
তৃণমূলের এক নেতা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি কার্যত মেনে নিলেও, আর এক নেতার দাবি ঘটনাটি ‘পারিবারিক’। তৃণমূল নেতা নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যারা পুকুরে জল ফেলার কাজ করছিল, তারা আমাদের দলের লোক। তাঁদের যারা আক্রমণ করেছে, তারা সিপিএম ছেড়ে হালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে।” তবে গুসকরার তৃণমূল পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াইয়ের দাবি, “এটা পারিবারিক সংঘর্ষ। গ্রামের নিকাশি নালা নিয়ে দু’পক্ষের গোলমালের জেরে এক পক্ষ অপরকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। সিপিএম এক পক্ষকে মদত দিয়েছে।” সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “আমরা এক পক্ষকে মদত দিয়েছি শুনলে ওখানকার মানুষ হাসবেন। গোটা ঘটনাটিই তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে ঘটেছে।”
আহতেরা বর্ধমান মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি শেখ সাত্তার ও শেখ মেহের জানান, তাঁরা আগে সিপিএম করতেন। কিছু দিন আগে স্থানীয় নেতা শেখ টগরের নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দেন। নির্বাচনের সময়ে তাঁরা ওই এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোপে পড়েন। এমনকী দলের কাজ করতে তাঁদের বারণও করে দেন চন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীরা। কিন্তু এই নিষেধ না মেনে তাঁরা গ্রামের জলনিকাশি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে চন্দ্রনাথবাবুর লোকজন তাঁদের উপর চড়াও হয়। সাত্তারের পেটে ও মেহেরের পায়ে গুলি লেগেছে। তবে চন্দ্রনাথবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কোনও ভাবেই ওই ঘটনায় জড়িত নই। যদি থাকতাম, তা হলে আমার নামেই তো এফআইআর হত!” আহতদের দাবি, গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশই লিখিত অভিযোগ থেকে চন্দ্রনাথবাবুর নাম থেকে বাদ দিতে বলেছে। নিজেকে দলের অন্যতম জেলা সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করে নিত্যানন্দবাবু বলেন, “গুসকরা ফাঁড়ির যে অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, গুলি-বোমা ছোড়ায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে না পেরে তিনি নিজের অসহায়তার কথা বলে এসেছেন। দলেরই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে। ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে সমস্ত ঘটনার কথা জানিয়েছি।”
গুসকরা ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত অফিসার নির্মল সরকার অবশ্য অভিযোগ না নেওয়ার ,কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “ওই সংঘর্ষের পরে দু’পক্ষই দু’টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। যাদের নাম রয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু কারও নাম বাদ দিতে হবে বা কাউকে ধরতে পারব না, এ কথা আমরা বলে আসিনি।” আউশগ্রাম থানার আইসি অমিতাভ চন্দ বলেন, “তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে ওই সংঘর্ষের পরে দু’তরফের দায়ের করা অভিযোগে প্রায় ১৫ জনের নাম রয়েছে। তারা পলাতক। তবে কোনও বড় মাপের নেতার নাম নেই।”
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.