|
|
|
|
আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ, শো-কজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কেতুগ্রাম |
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠল কেতুগ্রামের বিল্লেশ্বর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ওই পঞ্চায়েতে গিয়ে বেশ কিছু অনিয়ম নজরে পড়ে বিডিও-র। তিনি এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে শো-কজের চিঠিও পাঠান। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, শো-কজের উত্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান জানান, বিডিও-র প্রশ্নের জবাব পাঠানো হয়েছে। এর বেশি আপাতত আর কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুন বিল্লেশ্বর পঞ্চায়েতে যান কেতুগ্রাম ২ বিডিও হেমন্ত ঘোষ। সেখানে পঞ্চায়েতের নথিপত্র খতিয়ে দেখেন তিনি। এর পরে ৬ জুন তিনি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠান। তাতে জানানো হয়, পঞ্চায়েতের বেশ কিছু আর্থিক অস্বচ্ছতা ও অনিয়ম তাঁর চোখে পড়েছে। আট দফায় সেই সব অস্বচ্ছতার কথা উল্লেখ করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে ‘শো-কজ’ করেন তিনি। এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে চিঠিতে জানিয়ে দেন বিডিও। ওই চিঠির প্রতিলিপি মহকুমাশাসক ও জেলাশাসককে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
ওই চিঠিতে বিডিও জানান, পঞ্চায়েতের মাস্টার রোলে দেখা গিয়েছে, নলকূপ সংস্কারের কাজ করার জন্য বিশ্বজিৎ গুপ্ত নামে এক ব্যক্তিকে মোটা টাকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ওই কাজেই শ্রমিকেরা নিয়মিত নিযুক্ত ছিলেন বলেও দেখানো হয়েছে মাস্টার রোলে। কিন্তু নলকূপ মেরামতির কাজের নির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া, যে ব্যক্তি পঞ্চায়েতের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নন, তিনি কী করে সরকারি প্রকল্পের টাকা লেনদেনের দায়িত্ব পান, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিডিও চিঠিতে জানিয়েছেন, এ নিয়ে প্রধান ও নির্মাণ সহায়ককে প্রশ্ন করে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, কাজের বিল তৈরি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও পঞ্চায়েত আইন মানা হয়নি। এ সব ব্যাপারে পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট তপন মজুমদারকে প্রশ্ন করে যথাযথ উত্তর মেলেনি। একশো দিনের কাজের একটি চেক বুক এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টের কাছে থাকার কথা। তা দেখতে চাওয়া হলে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি থেকে সেটি নিয়ে আসা হয়। যা কাঙ্খিত নয় বলে জানিয়েছেন বিডিও। তা ছাড়া, একই সঙ্গে তিনটি চেক বুক ব্যবহার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। টেন্ডার সংক্রান্ত নিয়ম ভেঙে কৃষি সমবায় সমিতির কাছে নলকূপের যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। টেন্ডার সংক্রান্ত আরও কিছু বেনিয়মের কথা চিঠিতে বলা হয়েছে।
ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের সুনীল ঘোষের দাবি, “পঞ্চায়েতে দুর্নীতি চলছে। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের ধীরাজ পাল শুধু বলেন, “যা বলার বিডিও-র কাছে পাঠানো জবাবে বলে দিয়েছি।” এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট তপনবাবু অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শো-কজের উত্তরে পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন। কেতুগ্রাম ২ বিডিও হেমন্ত ঘোষ বলেন, “শো-কজের উত্তর পেয়েছি। এ ব্যাপারে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।” অভিযোগগুলির বিস্তারিত তদন্ত হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|