|
|
|
|
দুর্গাপুর-লাউদোহা রাস্তা |
পুলিশি টহল সত্ত্বেও চলছে
ডাকাতি ও ছিনতাই, আতঙ্ক
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
|
|
রাস্তার দু’পাশে ঘন ঝোপঝাড়। সন্ধ্যার পরে সেখানেই আস্তানা দুষ্কৃতীদের। রাস্তাতেও তাদের অবাধ বিচরণ। তাদের দৌরাত্ম্যে সন্ধ্যা ৭টার পরে যাতায়াত করা আতঙ্কের হয়ে উঠেছে দুর্গাপুর থেকে লাউদোহা হয়ে পাণ্ডবেশ্বর ও উখড়া যাওয়ার রাস্তায়, জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, এই রাস্তায় গত এক মাসে প্রায় ১৫টি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও ফল হয়নি বলে দাবি তাঁদের। গত দিন দশেক পুলিশ বিশেষ নজরদারি শুরু করলেও তাতে বিশেষ সুরাহা হয়নি। কারণ, এর মধ্যেই তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, ছিনতাই বন্ধে চেষ্টা চলছে। সে জন্য রাস্তার ধারের ঝোপগুলি কেটে ফেলা হচ্ছে।
দুষ্কৃৃতীদের হাত থেকে রেহাই পেতে ইচ্ছাপুর বাইপাস থাকা সত্ত্বেও মানুষজন সন্ধ্যার পরে অন্য ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যেতে বাধ্য হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইচ্ছাপুর, ওএনজিসি ও সরপির মাঝখানে সম্পূর্ণ ফাঁকা এলাকা। সেখানে দু’দিক থেকে দড়ি টেনে রেখে যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে এবং বাইপাস রাস্তায় ঝোপ বা পুকুরের ধার থেকে আচমকা উঠে এসে সর্বস্ব ছিনতাই করে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এলাকার কয়েক জন জানান, আমলোকা, খাঁদরার মাঝামাঝি জায়গা এবং সরপি মোড়ের কাছেই শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় একাধিক দুষ্কৃতী দল থাকে। তারা ইচ্ছাপুর ঢোকার মুখে যাত্রীদের দেখে নেয় এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় থাকা সঙ্গীদের খবর দিয়ে দেয়। এ ভাবে গত এক মাসে প্রায় ১৫-১৬টির মতো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।৫ জুন শ্মশানের কাছে সরপির এক বাসিন্দার টাকা ছিনতাই হয়। তার দু’দিন পরেই জামাইষষ্ঠী সেরে উখড়া থেকে বাড়ি ফিরছিলেন দুর্গাপুরের দম্পতি প্রতীক রজক ও বিদিশা রজক। তাঁদের অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় হঠাৎ কয়েক জন গাড়ি আটকায়। তাড়াতাড়ি সব জিনিসপত্র দিয়ে দিতে বলে তারা। বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা। নিয়ে যায় ফল-মিষ্টির প্যকেটও। এক ট্রাক চালক বলেন, “সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তা দিয়ে টাকা-পয়সা নিয়ে যেতে খুব ভয় হয়।” তিনি জানান, আগে পুলিশ থাকতই না। এখন থাকে, তবে টর্চ হাতে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতেই দেখা যায় তাঁদের।”
এলাকাবাসীর দাবি, ছিনতাইকারীদের দাবি মতো জিনিস দিতে অস্বীকার করলে মহিলাদের কানের দুল, হার টেনে ছিঁড়ে নেয় তারা। অনেকে অবশ্য থানায় অভিযোগ দায়েরও করেন না। তবে বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও পর দিন আবার ডাকাতি-ছিনতাই হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরে ওই রাস্তায় দৌরাত্ম্য বেড়েছে কয়েকটি নতুন দুষ্কৃতী দলের। এখনও তাদের পাকড়াও করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। মাঝে এই সব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েক জনকে আটক করলেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রাস্তার পাশের ঝোপগুলি সাফ করার ব্যাপারে উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। শুধু ঝোপঝাড় কেটে যে এই দুষ্কর্ম রোখা সম্ভব নয়, তা স্বীকার করে নিয়ে লাউদোহা থানার ওসি তাপস পাল বলেন, “ওদের আস্তানাগুলি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সক্রিয়। এ ব্যাপারে এখনই আর কিছু বলা যাবে না।” |
|
|
|
|
|