আমাদের চিঠি

এখনও শোনান সত্যপিরের গান
কারও নাম মরাই খুটি, কারও গিরিধারী। পদবি ‘বাউরি’, থাক হল ‘গোবরা’। নিবাস ছিল বাঁকুড়ার থুমপাথর গ্রামে। তাঁরা আজ মৃত। কিন্তু তাঁদের নাম শুশুনিয়া পাহাড়-ঘেঁষা গ্রামগুলির মানুষের মুখে মুখে আজও ফেরে। করেন তাঁরা ছিলেন সত্যনারায়ণ পাঁচালির নামজাদা গায়েন। পুরুষানুক্রমিক ভাবে আজও ছাতনা থানার এই গ্রামটিতে সত্যনারায়ণ বা সত্যপিরের গানের চর্চা অব্যাহত। মাত্র পাঁচশো টাকা পেলেই সাত-আট জনের একটি দল চলে আসেন সত্যপিরের গান গাইতে। কিছু মুড়ি আর অতিরিক্ত হিসেবে কিছু বিড়ি পেলে তাঁরা আরও খুশি! সাধারণত এঁদের দলের ডাক পড়ে গাইয়ের বাচ্চা হলে বা বন্ধ্যত্ব দূর করার মানত পরিশোধ করতে। আগে পশ্চিম রাঢ়ের প্রায় সব জনপদেই এঁদের ডাক পড়ত শ্রাদ্ধবাড়ি ও পূর্ণিমাতিথি পালনে। অধুনা ক্রমশ কমে আসছে সত্যপিরের কদর! এই চর্চা আর কত কাল চালাতে পারবেন, এ ব্যাপারে তাঁরা নিজেরাই এখন শঙ্কিত!
প্রাচীন বীরস্তম্ভ। থুমপাথর, বাঁকুড়া। ছবি: অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়
থুমপাথর গ্রামে প্রায় চার- সাড়ে চারশো বাউরি জনগোষ্ঠীর মানুষের বাস। শুশুনিয়া অঞ্চলের এই তফসিলি অধ্যুষিত গ্রামটিতে একটিও প্রাইমারি স্কুল নেই, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই (নলকূপ ব্যবহারযোগ্য একটি)। আছে অসহনীয় অভাব, কয়েকটি প্রাচীন প্রত্নসম্পদ ও প্রাণভরা গানের আনন্দ। এই বাউরিদের মধ্যে ৬০-৭০ জন এখনও গায়েন পেশার সঙ্গে যুক্ত। গ্রামটিতে বেশ কয়েকটি সত্যনারায়ণ পাঁচালি গানের দল রয়েছে। প্রত্যেক দলে এক জন করে ‘মূল গায়েন’ আছেন। তাঁদের মধ্যে দিবাকর বাউরি (৬৭) হলেন বয়োজ্যেষ্ঠ। ৪৫ বছর ধরে দিবাকর এই গানের চর্চা করছেন। তাঁর দলে আছেন আরও সাত-আট জন। তাঁর ‘দুয়ারি’ তথা বায়েন আছেন জিড়রা গ্রামের ফটিক বাউরি ও গোপাল বাউরি। তিনি গান শিখেছিলেন বাবার কাছে। দাদু রাজুও এই পেশায় যুক্ত ছিলেন। কোনও সাহেবকে (সম্ভবত বাঁকুড়ার জেলাশাসক আয়েঙ্গার সাহেবকে) রাজু গান শুনিয়ে পুরস্কার পেয়েছিলেন পাঁচ বোতল পানীয়ের দাম। দিবাকরের ‘আশাবাড়ি’টি বহু কালের, সেটি ‘দাদুর দাদুর’ আমলে তৈরি। সেই শ্রীখণ্ডীটি তিনি রাখেন বাখুলের মনসা মেলার কোণে। প্রতি বছর ৩০ ভাদ্র এখানেই পুজো হয় সত্যনারায়ণের। দিবাকরের ভাইপো হরেন (৪২) আর একটি দলের মূল গায়েন। তাঁর বায়েন বিখ্যাত, বৈদ্যনাথ বাউরি (৬৫)। মাদল বাজাতে বাজাতে বৈদ্যনাথ খুড়া কিছু ‘ফ্রি’ স্বরূপ বিয়ের গানও শুনিয়ে দেন ‘বিয়াই কে মারেছ্যে কাড়াতে।/ বিয়াই পড়ে আছে নালাতে।


রেল সংযোগ চাই
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর একটি বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র। এখানে প্রাচীন মল্লরাজাদের নির্মিত বহু মন্দির আছে। তা ছাড়া এখানে আছে দলমাদল, কামান, রাসমঞ্চ, পাথরের রথ এবং মল্লরাজাদের উপাস্য দেবী মৃন্ময়ী মাতার মন্দির। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সৌজন্যে মন্দিরগুলি দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।
কলকাতা থেকে এখানে আসার জন্য রেলপথ আছে। কিন্তু বর্ধমান বীরভূম তথা উত্তরবঙ্গের পর্যটকরা বাঁকুড়া-মশাগ্রাম রেলপথে সরাসরি বিষ্ণুপুরে আসতে পারবেন না, তাদের বাঁকুড়া ঘুরে এখানে আসতে হবে। যদি বাঁকুড়া-মশাগ্রাম রেলপথে পাত্রসায়ের স্টেশনের সঙ্গে বিষ্ণুপুরের রেল সংযোগ করা যায়, তবে ওই সব স্থানের পর্যটকরা সকালে এসে বিষ্ণুপুর দেখে বিকালে ফিরে যেতে পারবেন। অবশ্য রাতে থাকার জন্য এখানে ভাল ভাল লজ আছে। তা ছাড়া, পর্যটকদের আগমনে বিষ্ণুপুরের অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হবে।
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা আবাসনমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, তাঁরা যেন এ বিষয়টা একটু ভেবে দেখেন।



এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে
আমাদের চিঠি, সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১
Previous Item South First Page



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.