|
|
|
|
সিরিজ জয়ের পরে আজ খেলতে পারেন মনোজ-ঋদ্ধিমান |
|
রোহিতদের সাফল্য সিনিয়রদের
চাপে রাখলে ক্ষতি কী
দীপ দাশগুপ্ত |
|
অভূতপূর্ব ছাড়া কী বলব একে?
গুরু গ্রেগের তারুণ্যের স্লোগানে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বিতর্কে দগ্ধ। সাইমন কাটিচের বাদ পড়া নিয়ে এমন তীব্র কোলাহল শুরু হয়ে গিয়েছে যে, দেশের মন্ত্রী পর্যন্ত মন্তব্য করে বসে আছেন। নির্বাচকদের ঘিরে গণ-বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ভারতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাদ পড়া-টড়া নিয়ে যা অতীতে হয়েছে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কখনও দেখা যায়নি। আর গুরু গ্রেগ যেখানে এই স্লোগান প্রথম তুলেছিলেন সেই ভারতীয় ক্রিকেটের তরুণরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে দু’ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ জিতে নিচ্ছে।
সত্যি কথা বলতে কী, তৃতীয় এক দিনের ম্যাচটা রায়নার তরুণ দল জিতবে শনিবার রাত বারোটা পর্যন্তও কেউ ভাবেনি। আন্দ্রে রাসেলের (৮৪ বলে ৯২ নট আউট) দুর্ধর্ষ স্লগ ওভার ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২২৫-৮ তোলার পর ২৩ ওভারের মধ্যে ভারত ৯২-৬ হয়ে গিয়েছিল। ক্রিজে রোহিত শর্মা আর হরভজন সিংহ। সেখান থেকে এক বার জীবন পাওয়া রোহিত (৯১ বলে ৮৬ নট আউট), হরভজন (৬৪ বলে ৪১) এবং প্রবীণ কুমার (২৪ বলে ২৫ নট আউট) মিলে ম্যাচ জিতিয়ে দিল। |
|
রোহিত শর্মা: সিরিজ জয়ের নায়ক |
রোহিতদের এই পারফরম্যান্সের পর বলাবলি হওয়া খুব স্বাভাবিক যে, এখানেও ‘কাটিচ-বিতর্ক’ এসে পড়বে কি না? আমার মনে হয়, সেই উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার মতো কিছু এখনই ঘটবে না। গুরু গ্রেগ থাকলে কী হত সেটা অতীত। এখন ভিভিএস লক্ষ্মণ দারুণ পারফর্ম করছে। অবিশ্বাস্য সব টেস্ট ম্যাচ জেতাচ্ছে। সচিন ‘ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার’ হচ্ছে। একমাত্র কথা উঠতে পারে রাহুল দ্রাবিড়ের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে। কিন্তু টেস্ট এবং ওয়ান ডেদু’ধরনের ক্রিকেটেই যাঁর দশ হাজারের উপর রান আছে, তাঁর বিদায় সঙ্গীত নিশ্চয়ই একটা-দু’টো সিরিজের ফর্ম দিয়ে লিখবেন না নির্বাচকরা।
বরং আমি বলব, রোহিত-বিরাট কোহলিদের অগ্রগতিতে সিনিয়রদের উপর পরোক্ষে চাপ তৈরি হয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের মঙ্গলই হবে। হরভজন সিংহকে দেখলে সেটা সবথেকে ভাল বোঝা যাবে। হরভজন এখন জানে, ঘাড়ের কাছে দু’তিন জন উঠতি স্পিনার নিঃশ্বাস ফেলছে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আছে। ওকে যার জন্য আরও মরিয়া, আরও দায়বদ্ধ দেখাচ্ছে। শুধু দারুণ বোলিংই করছে না, ব্যাটেও অবদান রাখছে। অ্যান্টিগায় শনিবার রোহিত শর্মার সঙ্গে ওর পার্টনারশিপটা সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। যেখানে আর সব সিনিয়র বিশ্রাম নিয়েছে এই সিরিজ থেকে, সেখানে হরভজন শুধু খেলছেই না, জান লড়িয়ে পারফর্ম করে যাচ্ছে। এটা অন্যদের ক্ষেত্রেও হলে তো ভারতীয় ক্রিকেটেরই লাভ। রাহুল দ্রাবিড় যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামবে তখন যদি কোনও রোহিত শর্মার পারফরম্যান্স চিরপ্রতিজ্ঞ রাহুলের প্রতিজ্ঞা আরও বাড়িয়ে দেয় ক্ষতি কী?
আরও একটা ইতিবাচক ছবি উঠে আসছে চলতি এক দিনের সিরিজ থেকে। ভারতে যখন সিনিয়রদের বিদায় জানানোর লগ্নটা আসবে তখন অস্ট্রেলিয়ার মতো বিপর্যস্ত মনে হয় দেখাবে না। রোহিত শর্মা বুঝিয়ে দিয়েছে, অতীতের শৃঙ্খলাহীন, অলস মনোভাব ঝেড়ে ফেলে কঠোর অধ্যবসায়ের ধকল নিতে ও তৈরি। বিরাট কোহলিকে নিয়েও একই বদনাম ছিল। রাতভর পার্টি করে, শৃঙ্খলাপরায়ণ নয়। এখন তো মনে হচ্ছে, বিরাট আর রোহিতএরাই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। |
|
|
|
|
|