|
|
|
|
ফের গন্ডার খুন অসমে, এ বার পবিতরা অরণ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা• গুয়াহাটি |
প্রায় পাঁচ বছর পরে, অসমের পবিতরা অভয়ারণ্যে ফের গন্ডার হত্যার ঘটনা ঘটল। কাল রাতে চোরাশিকারিরা একটি পূর্ণবয়স্ক গন্ডারকে গুলি করে মেরেছে। পবিতরার রেঞ্জার মুকুল তামুলি বলেন, “রাত ন’টা নাগাদ আমরা দু’বার গুলির আওয়াজ পাই। তল্লাশি চালিয়ে পবিতরার সীমানায় নেকড়াহাবি গ্রামের লাগোয়া শিবিরের কাছে গন্ডারটির দেহ মেলে। তার খড়্গটি কেটে নিয়ে গিয়েছে চোরাশিকারিরা। গন্ডারটির বয়স আনুমানিক ২৮ বছর।”
আজ ঘটনাস্থলে থ্রি নট থ্রি এবং দোনলা বন্দুকের কার্তুজের খোল মিলেছে। ডিএফও এস কে শীল শর্মা জানান, ১০ থেকে ১১ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল শিকারিরা। গন্ডারের শরীরে ৬টি গুলি লাগে। যে ভাবে এতগুলি গুলি চালিয়ে গন্ডারটি মারা হয়েছে, তাতে শিকারিদের হাত কাঁচা বলেই অনুমান বনকর্তাদের। খড়্গটিও আনাড়ি হাতে কাটা। পবিতরা অভয়ারণ্যের বৈশিষ্ট্য হল, এর চারিপাশে ‘বাফার’ এলাকা নেই বললেই চলে। প্রায় ২০টি গ্রাম পবিতরাকে ঘিরে রেখেছে। পবিতরার গন্ডাররা প্রতিদিন ‘কোর’ এলাকা থেকে বের হয়ে গ্রামের চারণভূমিতে ঘোরে। ৩৮.৮১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত পবিতরায় ৮৪টি গন্ডার রয়েছে। ঘনত্বের বিচারে, বিশ্বে যা পয়লা নম্বর। ১৯৮৭ সালে,পবিতরাকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। |
|
পবিতরায় নিহত গন্ডার। উৎপল শর্মার তোলা ছবি। |
বছর ছয়েক ধরে রেঞ্জার মুকুল তামুলি পবিতরার দায়িত্ব নিয়েছেন। শুরু থেকেই স্থানীয় গ্রামবাসীদের সামিল করে গন্ডার সংরক্ষণে উদ্যোগী হন তিনি। এর আগে ২০০৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ বার পবিতরায় গন্ডার হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। গন্ডার শিকারিদের অন্তত ২০ জনের দল আত্মসমর্পণ করে এখন বনরক্ষার কাজে হাত মিলিয়েছেন। প্রতি বন্যায়, গন্ডার ও স্থানীয় গবাদি পশুরা পবিতরার উঁচু তৃণভূমিতে একসঙ্গে আশ্রয় নেয়। চোরাশিকারের প্রভূত সুযোগ থাকলেও দীর্ঘদিন তা ঘটেনি। গত বছর এই কারণে পবিতরা ও পবিতরার রেঞ্জার রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন। সেই অরণ্যেই কাল রাতে এমন কাণ্ডে স্তম্ভিত বনবিভাগ।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বহিরাগত শিকারিরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজিরাঙায় প্রহরা কড়া হওয়ার ফলেই পবিতরার দিকে নজর পড়েছে তাদের। তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাহায্য ছাড়া শিকারিরা এই ঘটনা ঘটাতে পারত না। তাই, বনবিভাগ ও পুলিশ আশপাশের গ্রামে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। কালকের ঘটনা নিয়ে এ বছরে অসমে মোট ৬টি গন্ডার চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ দিল। এর মধ্যে কাজিরাঙায় চারটি, ওরাংয়ের একটি। |
|
|
|
|
|