|
|
|
|
স্বাস্থ্য নিয়ে বিরক্ত বিধায়ক |
খাদ্য দফতরে কর্তা, তখন হাজির মোটে ৫ |
সুব্রত সীট • দুর্গাপুর |
সরকারি দফতরে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। হঠাৎ হঠাৎ নিজেই হাজির হয়ে যাচ্ছেন কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে। কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ডান-বাম, সব কর্মী সংগঠনের কাছেই সহযোগিতা চাইছেন।
অথচ দুর্গাপুরের গ্রামীণ এলাকার কিছু হাসপাতালে পরিদর্শন করে পরিস্থিতি এখনও তথৈবচ বলেই মনে হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দু’টি সরকারি দফতর পরিদর্শন করে একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনারও।
সম্প্রতি কাঁকসা ব্লকের আমলাজোড়া ও মলানদিঘি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে যান নিখিলবাবু। তিনি জানান, ভোটের প্রচারে গিয়েই তিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বেহাল দশার কথা শুনেছিলেন। তাই ভোটে জেতার পরেই তিনি সেগুলির হাল প্রত্যক্ষ করতে যান। বিশেষত যেহেতু ওই এলাকার বহু মানুষই সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল।
অথচ বিধায়ক দেখেছেন, সারা দিনে খুব অল্প সময়ের জন্যই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি খোলা থাকে। চিকিৎসকেরা নিয়মিত আসেন না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও সকলে এক সঙ্গে কাজে আসেন না। কাজের সময় নিয়ে নিজেদের মধ্যে ‘বোঝাপড়া’ করে নিয়েছেন তাঁরা। দুপুরের পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়। অথচ সরকারি নিয়মে তা খোলা থাকার কথা। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও মেলে না। পরিদর্শনের পরে একটি রিপোর্ট তৈরি করে তা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েও দিয়েছেন তিনি। নিখিলবাবুর কথায়, “মহকুমার স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরাতে যা যা করার, তা করতে হবে।”
অন্য দিকে, কর্মসংস্কৃতির হাল দেখতে দিন কয়েক আগে মহকুমা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরে হঠাৎ হাজির হয়েছিলেন জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা। প্রশাসন সূত্রের খবর, সকাল ১০টা ১০ নাগাদ অফিসে পৌঁছে তিনি দেখেন, ৩২ জন কর্মীর মধ্যে উপস্থিত মাত্র ৫ জন। ঘণ্টাখানেক পরে লোক পাঠিয়ে তিনি ফের উপস্থিতির সংখ্যা জানতে চান। জানা যায়, তখন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। বাকিরা ওই দিন আর অফিসেই আসেননি।
এক সঙ্গে এত জন কর্মীর গরহাজির কেন, কেনই বা কর্মীরা সময় মতো আসেন না, তা জানতে মহকুমা খাদ্য নিয়ামক বাপ্পাদিত্য চন্দ্রকে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন জেলাশাসক। বাপ্পাদিত্যবাবু জানান, ইতিমধ্যেই তিনি গরহাজির কর্মীদের শো-কজ করেছেন এবং জেলাশাসককে তা জানিয়েও দিয়েছেন। জেলাশাসক জানান, সমস্ত সরকারি অফিসে কর্মীরা যাতে সময় মতো হাজির হন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তাঁর কথায়, “এখন কর্মসংস্কৃতির যা হাল, তা চলতে দেওয়া হবে না।”
কর্মীদের দেরিতে আসা, গরহাজিরা বা সরকারি অফিসে গিয়ে পরিষেবা পাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করে অপেক্ষা সাধারণ মানুষের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিধায়ক ও জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে তাই খুশি দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।
যদিও ক’দিন এই উদ্যোগ চলে, দু’দিনের চমকের বদলে সত্যিই কোনও ‘দীর্ঘমেয়াদি’ ফল হয় কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। |
|
|
|
|
|