ভোট শেষেও শিবির হচ্ছে না, সঙ্কটে ব্লাডব্যাঙ্ক
ভোট মিটলেও রক্তদান শিবিরে এগিয়ে আসছে না রাজনৈতিক সংগঠনগুলি। অন্য দিকে, ক্লাব ও অন্য সংগঠনগুলি তীব্র গরমের জন্য রক্তদান শিবির কমিয়ে দেওয়ায় রক্তের সঙ্কটে ভুগছে বাঁকুড়া ব্লাডব্যাঙ্ক। ব্ল্যাডব্যাঙ্কের মেডিক্যাল ইনচার্জ অজিতকুমার প্রধানের কথায়, “প্রতি মাসে আমাদের প্রায় ১৮০০ থেকে ২০০০ প্যাকেট রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু, মার্চ থেকে গড়ে ৫০০ প্যাকেটেরও কম রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। তাই রক্তের বড় সঙ্কট শুরু হয়েছে।”
ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চে ৯টি শিবির থেকে ৩৮৮টি প্যাকেট, এপ্রিলে ৮টি শিবির থেকে ৬১০ প্যাকেট ও মে মাসে ৮টি শিবির থেকে ৪১৫ প্যাকেট রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ সারা বছর ধরেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে। সে জন্য তারা রক্তদানের ‘ক্যালেন্ডার’ তৈরি করে। সেই অনুযায়ী তারা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। বাঁকুড়া ব্লাড ব্যাঙ্কের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় যত রক্তদান শিবির হয়, তার মধ্যে ৮০ শতাংশ ডিওয়াইএফের আয়োজিত। নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে কোনও রাজনৈতিক ‘ব্যানারে’ কিংবা কোনও রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতিতে রক্তদান শিবিরের উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই কোনও রাজনৈতিক সংগঠন তখন কয়েক মাস রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে পারেনি। কিন্তু, নির্বাচন শেষের পরেও সে ভাবে শিবির হচ্ছে না। ডিওয়াইএফ মে মাসে একটিও শিবির করেনি।
ব্লাডব্যাঙ্কের সামনে অপেক্ষা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
ডিওয়াইএফের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অভয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচনী বিধির কারণে ওই সময়ে আমরা অন্তত ৩৫টি শিবির বাতিল করেছি। তবে, ব্যাক্তিগত ভাবে ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে প্রায় ৪০ জন কর্মী রক্তদান করেছেন। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে শিবির হয়নি। তবে ফের তা চালু করার উদ্যোগ চলছে। ২৯ মে জেলা কমিটির বৈঠকে রক্তদান শিবির করার জন্য জোর দিতে বলা হয়েছে। জুন থেকেই শিবির শুরু হয়েছে।”
এখনও পর্যন্ত ডিওয়াইএফের তরফে ব্লাডব্যাঙ্কে শিবিরের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী, জুনে ১৫টি শিবির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার জায়গায় চারটি শিবির হবে বলে জানানো হয়েছে। জুলাইয়ে ১৩টি হওয়ার কথা থাকলেও পাঁচটি শিবিরের জন্য আবেদন জমা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভয়বাবুর অভিযোগ, “ভোটের পরে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস ও পাত্রসায়রের বহু কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। ফলে, ওই এলাকায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা এখন সম্ভব হচ্ছে না।”
কোতুলপুরের বিধায়ক তথা যুব কংগ্রেসের বাঁকুড়া লোদসভার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বলেন, “রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে ২১ মে বাঁকুড়া, বিষ্ণপুর ও কোতুলপুরে আমরা তিনটি শিবিরের আয়োজন করেছিলাম। রাজ্য ক্ষমতায় আসার পরে দায়িত্ব আরও বেড়েছে। তাই প্রতি মাসে কয়েকটি শিবির করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, “সিপিএম বা ডিওয়াইএফের কারও উপর আক্রমণ হয়নি। কয়েক জন অহেতুক ভয় পেয়ে বাড়িতে থাকছেন না। ডিওয়াইএফ নিশ্চিন্তে রক্তদান শিবির করতে পারে।” একই আশ্বাস দেন বাঁকুড়ার তৃণমূল পুরপ্রধান শম্পা দরিপা। ২২ মে তিনি নিজের ওয়ার্ডে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন। তিনি বলেন, “রক্তের খুব প্রয়োজন। তাই, দলমত নির্বিশেষে সবাই শিবিরের আয়োজন করুন। আমরা পাশে রয়েছি।” তিনি জানান, ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদান দিবস উপলক্ষ্যে পুরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত সন্তানদের জন্য রক্ত নিতে আসা সিমলাপালের প্রতিমা দুলে, বড়জোড়ার রীতা মণ্ডলরা বলেন, “ছেলেমেয়েদের জন্য প্রতি মাসে রক্ত দরকার হয়। রক্তের সঙ্কটের জন্য তাই সব সময় আতঙ্কে থাকি।” তাঁদের আর্তি, সব রকম স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই রক্তদানে এগিয়ে আসুক।
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.