চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় ক্ষোভ
দ্দেশ্য, এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া। প্রায় চার বছর আগে আগে বিধায়কের এলাকা উন্নয়নের টাকায় দুবরাজপুর পুরসভার ৭নং ওয়ার্ডে বাড়িটি তৈরি হয়েছিল। দুবরাজপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য সমবায় সমিতি ওখানে বাড়ি তৈরির আবেদন জানিয়েছিল। তাদের আবেদনে বিধায়ক কোটার টাকা এলেও, কাজটি দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল পুরসভা। কিন্তু বাড়ি তৈরি হয়েই পড়ে রয়েছে। বছর দুয়েক আগে দিন কয়েকের জন্য দু’এক জন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বসলেও বর্তমানে তা তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে ইতিমধ্যে বাড়িটিতে ঘুন ধরতে শুরু করেছে।
কী জন্য বাড়িটির নির্মাণ হল, কেনই বা সেটি বন্ধ হয়ে গেল তার সদুত্তর এলাকাবাসীর কাছে নেই। তবে তাঁদের একটাই দাবি, এ ভাবে এত টাকা ব্যয়ে যখন বাড়িটি তৈরিই হল সেটি যেন মানুষের উপকারে লাগে।
দুবরাজপুর পুরসভার প্রধান পীযূষ পাণ্ডেও বলেছেন, “এ ভাবে বাড়িটিকে তালাবন্ধ করে ফেলে না রেখে সমবায় সমিতি যদি পুরসভাকে দিয়ে দেয়, তা হলে পুরসভার পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার একটি কেন্দ্র হিসাবে এটিকে কাজে লাগানো যাবে।” তা হলে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? পুরপ্রধানের দাবি, “সমিতির সম্পাদককে বহু বার এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সেটা গ্রাহ্য করেননি।”
এ ভাবেই পড়ে রয়েছে চিকিৎসাকেন্দ্র। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
সমিতিই বা সেটা চালু করছে না কেন? প্রশ্নের উত্তরে দুবরাজপুর স্বাস্থ্য সমবায় সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী জগদীশ ঘোষের নেতৃত্বে বহু বছর আগে এই স্বাস্থ্য সমবায় সমিতির জন্ম। বর্তমানেও ওই সমিতির তরফে দুবরাজপুর ধর্মশালায় নামমাত্র পয়সায় একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষেবা চালু আছে। তাদের দাবি, ৯৪ জন সদস্যযুক্ত ওই সমিতি বর্তমানে আর্থিক সংকটে ভুগছে। মোট তিন জন কর্মীও যৎসামান্য পারিশ্রমিক পান। কিন্তু ২০০০ সালের আগে দুবরাজপুরের তৎকালীন বিধায়ক ভক্তিভূষণ মণ্ডলের কাছে একটি উন্নততর স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তখনও আর্থিক পরিস্থিতি ততটা খারাপ হয়নি। ভক্তিভূষণ মণ্ডলের পরে তাঁর জামাই ভক্তিপদ ঘোষ যখন বিধায়ক ছিলেন তখন দু’দফায় ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িটি সম্পূর্ণ হওয়ার পর উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার যে পরিকল্পনা সমিতির ছিল সেটি বাস্তবায়িত হয়নি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ওই সমিতির বর্তমান সম্পাদক বিশ্বনাথ দে। তিনি বলেন, “বর্তমানে ওই বাড়িটিতে একটি উন্নত প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব তৈরির খসড়া পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, সেটি মঞ্জুর হবে।” কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়াই এ ভাবে বিধায়কের কাছে অর্থ সাহায্য চাইলেন কেন? এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে বিশ্বনাথবাবুর জবাব, “আমি ২০০৮-এ সম্পাদকের পদে এসেছি।”
পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডের অভিযোগ, “২০০৪ সালে বাড়িটি তৈরি হওয়ার পর থেকে কার্যত পড়েই আছে। ২০০৯-এর লোকসভা ভোটের আগে ঘটা করে আরও এক বার উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই।” পীযূষবাবুর যুক্তি, “যদি সমিতির আর্থিক সমস্যা থাকে তা হলে পুরসভাকে দায়িত্ব দিক। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবাই দেওয়া হবে। উপকৃত হবেন এলাকার মানুষ।”
পীযূষ পাণ্ডের বক্তব্য অবশ্য মানেননি সমিতির সম্পাদক বিশ্বনাথ দে। তিনি বলেন, “প্রথমত ২০০৯-এ পুরসভা বাড়িটি আমাদের হস্তান্তর করেছিল, ২০০৪-এ নয়।” বিশ্বনাথবাবুর পাল্টা দাবি, “আমাদের সমিতির আর্থিক সমস্যার জন্য বারবার আমরা (পরিচালন সমিতির সদস্য এবং সম্পাদক) পুরসভায় দরবার করেছি। পুরপ্রধানের কাছে প্রথম চাহিদা ছিল স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করার ব্যাপারে যদি অর্থসাহায্য করেন। দ্বিতীয় চাহিদা ছিল, পুরসভা ওই বাড়িতে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই তা করতে পারে। কিন্তু পুরপ্রধানই তাতে রাজি হননি। তবে এখন যদি উনি সেই একই প্রস্তাব দেন আমি বার্ষিক সাধারণসভা ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।” দুবরাজপুরের দায়িত্বে থাকা সমবায় আধিকারিক প্রাণতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি দুবরাজপুরের অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। তবে যত দূর জানি বর্তমান বোর্ড চেষ্টা করছে যাতে ওই বাড়ি থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করা যায়।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.