রাজ্য জুড়ে হাড়গোড়, অস্ত্র উদ্ধার চলছেই
মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবারই বিস্ময় আর উদ্বেগের সঙ্গে বলেছিলেন, গত কয়েক সপ্তাহে যে পরিমাণ বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে রাজ্যে, তা বোধহয় যুদ্ধেও হয় না। শুক্রবার ফের প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর ব্লকের মণিদহ, শালবনির ভাতমোড় থেকে। উত্তর ২৪ পরগনার শাসন, বীরভূমের দুবরাজপুর, রামপুরহাট, বর্ধমান থেকেও পাইপগান, কার্তুজ, তরোয়াল, বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। সেই সঙ্গে হাড়গোড় উদ্ধার এবং তার সূত্র ধরে দীর্ঘ দিন ‘নিখোঁজ’ রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থকদের স্বজনের আকুল অনুসন্ধানও সমানে চলছে।
মণিদহ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
মাথার খুলির অংশ ও হাড়গোড় উদ্ধার ঘিরে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের রেঞ্জুড়া গ্রামে। অভিযোগ, ২০০০ সালের ১০ অক্টোবর গ্রামে সিপিএমের হামলার পর থেকে তৃণমূল-কর্মী বলরাম দাসের আর খোঁজ মেলেনি। এ দিন স্থানীয় দুই সিপিএম-কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রামবাসীরা জানতে পারেন, ওই তৃণমূল-কর্মীর দেহ স্থানীয় স্কুলমাঠের পাশে আধপোড়া অবস্থায় পোঁতা হয়েছিল। সেখানেই মাটি খুঁড়ে মাথার খুলির অংশ, হাড়গোড়, পোড়া টায়ার উদ্ধার হয়। দেহাংশ বলরামবাবুর বলে দাবি করেন ভাই অশোক দাস। হিঙ্গু সরেন ও বলাই পণ্ডিত নামে দুই সিপিএম-কর্মীকে আটক করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-১ ব্লকের তপনমোড়েও উত্তেজনা ছড়ায়।
অভিযোগ, ২০০১-এ স্থানীয় এক তৃণমূল-কর্মীকে অপহরণ করেছিল সিপিএমের লোকজন। গ্রামবাসীদের সন্দেহ, ওই তৃণমূল-কর্মীর দেহ কোথাও পোঁতা রয়েছে। স্থানীয় সিপিএম-কর্মীদের বিষয়টি জানাতে হবে বলে দাবি ওঠে। পুলিশ পৌঁছে ৩ সিপিএম-কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-৩ ব্লকের উড়াসাই পঞ্চায়েতের দাসেরবাঁধের কাছ থেকেও বৃহস্পতিবার ফের কয়েকটি হাড় ও চুল উদ্ধার হয়। দেহাংশ দশ বছর আগে ‘নিখোঁজ’ লাগোয়া কেশপুরের এলুনি গ্রামের তৃণমূল-কর্মী সৌমশ্রী মণ্ডলের বলে দাবি করেছেন পরিজনেরা।
শুক্রবার মণিদহ ও ভাতমোড় থেকে সব মিলিয়ে ৪৯টি বন্দুক উদ্ধার হয়। জঙ্গলমহলের এই দুই জায়গায় এমনকী মাওবাদী-জনগণের কমিটির প্রবল সক্রিয়তার পর্বেও নিয়ন্ত্রণ ছিল সিপিএমের। ১৩ মে বিধানসভার ফল ঘোষণার পরে অবশ্য বদলে গিয়েছে ছবিটা। কোণঠাসা সিপিএম। স্থানীয় কয়েক জন সিপিএম-কর্মীকে জেরার সূত্রেই অস্ত্রের সন্ধান মেলে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। পুলিশের উপস্থিতিতে মণিদহের ‘ঘরছাড়া’ সিপিএম-কর্মী নন্দদুলাল পালের পুকুর থেকে ১৫টি এবং সংলগ্ন কাঁসাই নদীর চরে মাটি খুঁড়ে আরও ২৯টি বন্দুক উদ্ধার হয়। ভাতমোড়ে একটি কুয়োর মধ্যে থেকে আরও ৫টি বন্দুক পাওয়া যায়। জেলারই পিংলার করকাইয়ের একটি পুকুর থেকেও একটি পাইপগান ও একটি হাতকামান পাওয়া যায়। উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের ফলতি-বেলেঘাটা এলাকার একটি পাটখেত থেকে পুলিশ উদ্ধার করে একটি পাইপগান, ৭ রাউন্ড কার্তুজ, বেশ কিছু ঢাল-তরোয়াল। বীরভূমের দুবরাজপুরের রসুলপুর গ্রামের পুকুর থেকে পাওয়া যায় একটি ডিনামাইট। রামপুরহাট থেকে আবার হাজারের বেশি ডিটোনেটর-সহ এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। বর্ধমানে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বন্ধ শাখা অফিস থেকেও মেলে তরোয়াল, রড-লাঠি।
Previous Story Rajya Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.