|
|
|
|
বনাঞ্চলে মাওবাদী ঠেকাতে মমতার হাতিয়ার উন্নয়নই |
নিজস্ব সংবাদদাতা• কলকাতা |
জঙ্গলমহলে অশান্তির অন্যতম মূল কারণ হিসেবে অনুন্নয়নকেই চিহ্নিত করছে প্রায় সব মহল। এই অবস্থায় জঙ্গলমহলের তিন জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার ২৩টি ব্লকে মাওবাদী তৎপরতার মোকাবিলায় উন্নয়নকে অস্ত্র করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই ২৩টি মাওবাদী প্রভাবিত ব্লকের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে স্বল্প মেয়াদ ও দীর্ঘ মেয়াদের ভিত্তিতে পরবর্তী পাঁচ বছরে টানা উন্নয়নের কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত উন্নয়নের রূপরেখা ঠিক করতে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দফতর। ওই সব ব্লকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে এত দিন উন্নয়নের কাজ কতটা কী হয়েছে, সরেজমিনে তা যাচাই করতে রাজ্য স্তর থেকে বিশেষ তদারকি দল পাঠানো হচ্ছে বলেও শুক্রবার জানান উন্নয়ন ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। রাজ্য সরকারের ব্যুরো অফ অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস-এর আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি ওই দল প্রতিটি ব্লকে যাবে। ওই সব ব্লকে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, করণিক থেকে শুরু করে কোথায় কোন স্তরের কর্মীর ঘাটতি আছে, সেই তালিকাও বানাবে তারা।
এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য মণীশবাবু এ দিন বিধাননগরে নিজের দফতরে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকদের বৈঠকে ডেকে পাঠান। ছিলেন রাজ্যের কৃষি, সেচ, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন প্রভৃতি দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরাও। মহাকরণে ফিরে মণীশবাবু বলেন, প্রথম পর্যায়ে দু’বছরের এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে তিন বছরের মেয়াদে ওই ২৩টি ব্লকের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করে তা রূপায়ণ করা হবে। ওই সব এলাকায় উন্নয়নের কী কী কাজ ইতিমধ্যে হয়েছে এবং আরও কী কী কাজ করা দরকার, সেই বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তিন জেলাশাসককেও রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতের প্রতিটি কাজের জন্য প্রথম এক বছরে কত টাকার দরকার হবে, পরবর্তী বছরগুলিতেই বা কত টাকা লাগবে, রিপোর্টে তা-ও জানাতে হবে।
মন্ত্রী জানান, জঙ্গলমহলের ২৩টি ব্লকে সুষ্ঠু রেশন ব্যবস্থা, দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল সরবরাহ, স্কুলশিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, বিভিন্ন ধরনের পেনশন প্রকল্প, আদিবাসীদের জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প, নারী ও শিশু বিকাশ কর্মসূচি, কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সেচ ব্যবস্থার যথাযথ রূপায়ণ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে খেলাধুলোর সুযোগ-সুবিধা, এমনকী ছোটখাটো স্টেডিয়াম ও ছাত্রাবাস তৈরি করাই হবে প্রস্তাবিত উন্নয়ন কর্মসূচির লক্ষ্য।
এর আগে, চলতি সপ্তাহের গোড়ায় একই উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের গোটা দশেক দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে মহাকরণে আলোচনায় বসেছিলেন মণীশবাবু। তিনি বলেন, সে-দিনের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকেরা না-থাকায় শুক্রবার তাঁদের ডাকা হয়েছিল। |
|
|
|
|
|