‘গুরুত্বহীন’ মন্ত্রিত্বে অনীহা মনোজের
ন্ত্রী হওয়ার পরে এক সপ্তাহও কাটেনি, তার মধ্যেই মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চাইলেন রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, যে দফতর তাঁকে দেওয়া হয়েছে, সেটি ‘গুরুত্বহীন’। মনোজবাবুর কথায়, “আমি তো বাচ্চা ছেলে নই যে, মন্ত্রিত্ব নামক ললিপপ চুষব! দরকার কী লোক দেখানো মন্ত্রী সেজে থাকার। বিধায়ক হয়েও তো মানুষের জন্য কাজ করা যায়!”
তাঁর মন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের ‘সম্পর্ক তিক্ত’ হবে কিনা জানতে চাইলে মনোজবাবু বলেন, “তা কেন! আমি কংগ্রেসের বিধায়ক হিসাবে আমাদের জোট সরকার জনস্বার্থে যা যা কর্মসূচি নিয়েছে তা রূপায়ণে কাজ করব। আসলে আমি তো মন্ত্রী হয়েছিলাম কাজ করব বলেই। বহরমপুরের মানুষের কাছে আমার তো একটা দায়বদ্ধতা আছে! কিন্তু বিধানসভার বাইরে তো মন্ত্রী হিসাবে আমার কাজ নেই। আমাকে যদি পরিষদীয় দফতরের সঙ্গে অন্য কোনও দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হত তাহলেও একটা কথা ছিল!” তাঁর এই ‘ক্ষোভে’র কথা তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন জানাননি তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মনোজবাবু বলেন, “আমার দল আমাকে মন্ত্রী করেছে। ফলে, আমি ক্ষোভের কথা দলীয় নেতৃত্বকেই জানাচ্ছি। তা ছাড়া, মমতাদি মুখ্যমন্ত্রী। উনি ব্যস্ত থাকেন। আমার ধরা ছোঁয়ারও বাইরে। ওঁকে বিরক্ত করার দরকার নেই। ”মহাকরণে ‘ক্যাবিনেট রুমে’র পাশেই তাঁর ঘর। গত শুক্রবার শপথ নেওয়ার পরে সাকুল্যে চারদিন দফতরে বসেছেন মনোজবাবু। প্রশ্ন হল, কার্যত ‘তে রাত্তির’ কাটতে না-কাটতেই তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চাইছেন কেন? মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ অধীর চৌধুরীর ‘ঘনিষ্ঠ’ মনোজবাবু বহরমপুরের বিধায়ক। শুক্রবার সন্ধ্যায় বহরমপুর থেকে তিনি ফোনে বলেন, “আমার তো কোনও কাজ নেই! আগামী সোমবার বিধানসভার অধিবেশন! আমি পরিষদীয় দফতরের মন্ত্রী! এখন সন্ধে ৭ টা বাজে। অথচ সরকারি ভাবে আমাকে কেউ এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানানোর প্রয়োজনও বোধ করছেন না। কারণ আমার দফতরেই তো আমার গুরুত্ব নেই!” গত চার দিনেই মনোজবাবু বুঝেছেন, মমতার মন্ত্রিসভায় তাঁর ‘গুরুত্ব’ নেই! বৃহস্পতিবার বহরমপুরে গিয়ে অধীরের কাছে তিনি সেই ‘ক্ষোভে’র কথা জানিয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য ‘অনুমতি’ চেয়েছিলেন। এ দিন অধীর বলেন, “আমি ওঁকে বলেছি, দীর্ঘ ৩৪ বছর পর সিপিএমকে সরিয়ে আমরা জোট গড়ে সরকারে এসেছি। ফলে এখনই কোনও বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে বিতর্ক হোক, তা আমি চাই না। তা ছাড়া আমি তো মনোজ’দাকে মন্ত্রী করিনি। সে জন্য আমি ওঁকে বলেছি বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের প্রদেশ নেতৃত্ব ও সর্বভারতীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে।”আজ, শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা ও জঙ্গিপুরের সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায় জেলায় আসবেন। মনোজবাবু জানিয়েছেন, প্রণববাবু জেলায় এলেই তিনি তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর কাছে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে ‘অনুমতি’ চাইবেন। মনোজবাবুর মতোই প্রদেশ কংগ্রেসের সদ্য ‘প্রাক্তন’ হওয়া সভাপতি মানস ভুঁইয়াও মন্ত্রিত্ব ছাড়ার কথা বলেছিলেন। মানসবাবুর দফতর নিয়ে মনোজবাবুর মতো ‘খুঁতখুতুনি’ নয়, তার চেয়েও ‘বড় কারণ’ ছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে থাকা। তবে মানসবাবুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ব্যাপারে আপাতত যবনিকা পড়েছে বলে কংগ্রেস নেতাদের একাংশের অভিমত। কারণ, মানসবাবুকে প্রদেশ সভাপতির পদ ছাড়তে হচ্ছে। দলের হাইকম্যান্ড প্রদীপ ভট্টাচার্যকে প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেছে।
Previous Story Rajya Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.