|
|
|
|
শিক্ষক হতে চায় সোনামণি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
অভাব মেটানোর প্রতিজ্ঞায় মন দিয়ে পড়াশোনা আর তার মাঝে সময় পেলেই কাপড়ে লাল, নীল সুতোর নকশা তুলে মাকে সাহায্য করা। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চৌরাসি হাইস্কুলের ছাত্রী সোনামণি খাতুনের এটাই রোজনামচা। অভাব অনটনের সংসারে লড়াই করতে করতে মাধ্যমিকে এ বার চারটি বিষয়ে লেটার নিয়ে ৬৪৯ নম্বর পেয়েছে সোনামনি। তবে এই ফলেও খুশি নয় একরত্তি মেয়েটা। আরও ভাল ফলের আশা করেছিল সে। দেগঙ্গার শিমুলিয়া গ্রামে এসরাফিল মণ্ডলের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় সোনামণি। স্থানীয় জীবনপুর বাজারে সব্জি বিক্রি করেন এসারাফিল। যা রোজগার করেন তাতে সংসারই চলে না। সংসার টানতে সাহানারা বিবি কাপড়ে নকশা তৈরির কাজ করেন। যাতে অভাবের তাড়নায় দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনায় কোনও ব্যাঘাত না ঘটে। তাই হাজারো কষ্টের মধ্যেও ছেলেমেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতদিন কোনওমতে তা এগিয়ে নিয়ে গেলেও এর পরে কী করবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন মণ্ডল দম্পতি। বাড়িতে আজও বিদ্যুৎ এসে পৌঁছয়নি। হ্যারিকেনের আলোয় কাপড়ে নকশা তোলেন মা সাহানারা বিবি। আর পাশে বসে পড়াশোনা করে দুই ভাইবোন। সোনামণির পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে মাধ্যমিকের আগে বিনা পারিশ্রমিকে তাকে পড়িয়েছেন তিনজন গৃহশিক্ষক। পড়াশোনার বাইরে গল্পের বই পড়া নেশা সোনামণির। নেশা রয়েছে লেখালেখিরও। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার কিছু ছাপাও হয়েছে। কী হতে চায় প্রশ্নে চটজলদি জবাব সোনামণির, “শিক্ষক হয়ে গরিব ছেলেমেয়েদের পড়াতে চাই। আমার পড়াশোনায় স্কুলের শিক্ষকেরা বই-খাতা দিয়ে অনেক সাহায্য করেছেন। না হলে এতদূর এগোতে পারতাম না।’’ |
|
|
|
|
|