|
|
|
|
বন্যা রোধে জোর নদীবাঁধ সংস্কারে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দু’বছর আগের স্মৃতি এখনও ফিরে ফিরে আসে। বর্ষা এলেই আতঙ্ক, উদ্বেগে থাকেন কেশপুর সংলগ্ন মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাথরা, পালজাগুল, রঘুনাথপুর ও তার আশপাশের এলাকার মানুষ। ফের বাঁধ ভেঙে বানভাসি হতে হবে না তো, জমিতে বালি জমে চাষের ক্ষতি হবে না তো! এমনই সব প্রশ্ন উঁকি দেয় মনে।
দু’বছর আগের সেই সঙ্কটের কথা মনে রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করতে ১৪ জুন জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। সেখানেই বন্যা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে। মেদিনীপুর সদরের বিডিও অয়ন নাথ বলেন, “বাঁধ মেরামতের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাব জেলাস্তরে পাঠানো হবে। অর্থ মঞ্জুর হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” তাঁর দাবি, এ বার বন্যা হলেও যাতে মেদিনীপুর সদরের পাথরা, পালজাগুল ও তার আশপাশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না-হন, সেদিকে প্রশাসন নজর রাখছে। কিন্তু বৈঠক ডাকতেই তো ১৪ জুন হয়ে গেল। বাংলায় বর্ষা তো ইতিমধ্যেই সাধারণ ভাবে শুরু হয়ে যায়। সে দিক থেকে এ বারও যে দেরিই! গত দু’বছরের মধ্যে বৈঠক ডেকে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা গেল না কেন, সে প্রশ্ন তো রয়েছেই।
নদীতে জল বাড়লেই জেলার বিস্তীণর্র্ এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। বহু মানুষ বানভাসি হন। অভিযোগ, জমিদারি বাঁধগুলো দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। ফলে সামান্য জলের চাপ থাকলেই সেগুলো ভেঙে যায়। পরে স্থায়ী মেরামতও করা হয় না। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, সেচ দফতরের উদাসীনতার ফলেই জেলার একাংশ বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বহু মানুষ ঘর ছাড়েন। দু’বছর আগের বন্যায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। এমনকী, যে সব এলাকা সাধারণ ভাবে জলমগ্ন হয় না, সেখানেও জল ঢুকে পড়েছিল। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে সদর ব্লকের পালজাগুলের কাছে কংসাবতীর গতিপথই এক সময়ে বদলে যায়। সে বার বন্যার পরে ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। প্রশাসন জানিয়েছিল, এমন পরিস্থিতি এড়াতে জমিদারি বাঁধগুলো সংস্কার করা হবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো সংস্কারের কাজ আর শুরুই হয়নি বলে অভিযোগ।
তবে প্রশাসনের দাবি, এ বার বন্যা নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সদর ব্লকের উদয়পুর, মহাতাবনগর, ধরমপুরে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬টি বাঁধ সংস্কার হবে। সাব ডিভিশনাল রিলিফ ফান্ডের অর্থেই এই সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা। এর জন্য একটি পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। ১৪ তারিখের বৈঠকে এই পরিকল্পনা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হবে। সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন। আপাতত, ভবানীনগর থেকে মহাতাবনগর, উদয়পুর থেকে কাঁকোয়া, কাঁকোয়া থেকে রঘুনাথপুর, ধরমপুর থেকে বালিপোতা, কালীনগর থেকে ধরমপুর ও পালজাগুল থেকে মহাতাবনগর পর্যন্ত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। এরই মধ্যে বিভাগীয় আধিকারিকদের নিয়ে রঘুনাথপুর ও তার আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিডিও। খতিয়ে দেখেছেন সার্বিক পরিস্থিতি। জমিদারি বাঁধগুলোর পাশে বসতি রয়েছে। তবে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও বাসিন্দাদের যাতে সমস্যা না-হয়, সে দিকেও নজর রাখা হবে। বিডিও’র বক্তব্য, “আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি। বাঁধ সংস্কারের পরিকল্পনাও তৈরি হয়েছে। কাজ শেষ হলে মানুষকে আর ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।” |
|
|
|
|
|