|
|
|
|
স্বাস্থ্যে উন্নতি, পর্যটনে জোর সুদর্শনের |
আরিফ ইকবাল খান • মহিষাদল |
প্রাচীন বর্ধিষ্ণু এক জনপদ মহিষাদল। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর পর্যটন সম্ভাবনায় সমৃদ্ধ মহিষাদলের মানুষ নানা সমস্যার শিকার। জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুরই অভাব মহিষাদলে। আগের বিধায়ক তমালিকা পণ্ডাশেঠ আশা জাগিয়েও অনেক কিছুই করতে পারেননি। তমালিকাকে বিপুল ব্যবধানে পরাস্ত করে এ বার বিধায়ক হয়েছেন সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার। রাজনৈতিক ময়দানে একেবারেই আনকোরা, বিখ্যাত চিকিৎসক সুদর্শন কতটা পারবেন জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে? তমালিকাও ছিলেন না, সুদর্শনও মহিষাদলের বাসিন্দা নন। তবু, অনেক আশা নিয়েই তাঁদের প্রতিনিধি করে বিধানসভায় পাঠিয়েছেন মহিষাদলের মানুষ। নতুন সরকারের আমলে বহু দিনের দাবিগুলি পূরণ হয় কি না, সেটাই এখন দেখার। |
|
মহিষাদল রাজবাড়ি। |
মহিষাদলকে পুরসভা করার দাবি দীর্ঘ দিনের। গেঁওখালির তিনটি নদীর সঙ্গমস্থল, রাজবাড়ি, নাটশাল, হরিখালি ঘিরে পর্যটন-প্রসারও অন্যতম দাবি। আর দাবি ভাল হাসপাতালের। এই মুহূর্তে বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল ছাড়া বলবার মতো স্বাস্থ্য-পরিকাঠামোই নেই বহু মানুষের এই জনপদে। সুশীল ধাড়া, সতীশ সামন্ত-র স্মৃতি বিজড়িত মহিষাদলে দাবির তালিকা দিনে দিনে দীর্ঘতর হয়েছে। পারবেন তো সুদর্শনবাবু?
ভোটের আগে তৃণমূলের তরফে প্রচার ছিল জিতলে সুদর্শনবাবু স্বাস্থ্যমন্ত্রী হবেন। তা অবশ্য হননি। হয়েছেন পরিবেশ মন্ত্রী। ভোটের প্রচারে এবং ফল ঘোষণার পরেও সুদর্শনবাবু নিজে মন্ত্রী হওয়া নিয়ে কিন্তু কোনও দিনই কোনও মন্তব্য করেননি। তবে প্রচারে তো বটেই, ভোটে জেতার পরেও কয়েকটি আশ্বাস দিয়েছেন নিজের মতো করে। এবং গবেষক-চিকিৎসক মানুষটি এলাকাবাসীর প্রধান দাবিটিকে অন্তত ঠিকই চিনেছেন। জানিয়েছেন, বিধায়ক হিসাবে মহিষাদলে আগামী দিনে একটি সুপার মাল্টি-ফেসিলিটি হাসপাতাল গড়তে চান। আর পুরসভার দাবি নিয়েও যে তিনি উপযুক্ত জায়গায় দরবার করবেন, জানিয়েছেন তা-ও। নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময়েই সাংসদ-স্ত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে নিয়ে গেঁওখালির ত্রিবেণী-সঙ্গমের অতিথিশালায় উঠেছিলেন। অপরূপ নিসর্গে মুগ্ধ হয়েছেন দিনের পর দিন। |
মন্ত্রী সুদর্শন
ঘোষ দস্তিদার। |
সাংসদ-বিধায়ক এই দম্পতির কথায়, “বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে গেঁওখালি। ভারতের মানচিত্রে থাকার মতো মনোরম জায়গা।” এই যাঁর নিজেরই অনুভূতি, সেই নতুন বিধায়ককে ঘিরে তাই আশা দেখছে মহিষাদল।
মহিষাদল রাজবাড়ির তরুণ সদস্য শৌর্যপ্রসাদ গর্গ মনে করেন, মহিষাদলের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বাস্থ্য আর শিক্ষা। এত মানুষ থাকেন। |
|
কাছেই ৪১ নং জাতীয় সড়ক। বহু দুর্ঘটনা ঘটে এই সড়কে। কোনও পরিকাঠামো না-থাকায় চিকিৎসার জন্য হয় তমলুক, নয় হলদিয়া যেতে হয়। এ ছাড়া, রাজ হাইস্কুলের মতো স্কুলের মানোন্নয়নও প্রয়োজন।
কৃষ্ণা ভুইঞা, পুতুল ভৌমিক, তপন জানা-রা চান উন্নয়ন। সাংস্কৃতিক চর্চার ঐতিহ্য থাকলেও বড় কোনও অডিটোরিয়াম নেই মহিষাদলে। ক্রীড়াচর্চার পরিবেশ থাকলেও তেমন পরিকাঠামো নেই। ঐতিহাসিক রাজ ময়দানের সংস্কার হয়নি বহু দিন। সুইমিং পুল নেই। টিমটিম করে চলছে এক্তারপুরের মহাত্মা গাঁধীর স্মৃতি বিজড়িত গাঁধী আশ্রম। আর আছে মহিষাদল রাজবাড়ি প্রাঙ্গণ। এ সবের উন্নতি চান তপন, কৃষ্ণা, পুতুলরা। গেঁওখালির শেখ হাবিব আবার চান, প্রস্তাবিত জাহাজ প্রকল্পের রূপায়ণ। কাজ চায় গেঁওখালি। মহিষাদলের সুশীল-সমাজ আবার চায়, দীর্ঘ দিন ধরে রমরমিয়ে চলা যৌন ব্যবসার অবসান।
প্রত্যাশা অনেক। এখন দেখার নতুন বিধায়ক কতটা পূরণ করতে পারেন মানুষের দাবি। |
নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|