পূর্ব কলকাতা
অর্থাভাব
পুল জলেই
খনও পরিবর্তন হল না। কারণ, অর্থাভাব।
আগের বামবোর্ডের আমলেও অর্থের অভাবে বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সুইমিং পুলের কাজ শেষ হয়নি। পুরবোর্ডে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রায় এক বছর কাটল। তার পরেও এ ব্যাপারে কাজ বিশেষ এগোয়নি। কারণ, অর্থাভাব। যদিও ইতিমধ্যেই বহু অর্থ খরচ হয়ে গিয়েছে। কাজ কবে শেষ হবে তা-ও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ।
বছরখানেক আগে বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠে সুইমিং পুলের কাজ শুরু করে তৎকালীন বামপুরবোর্ড। এক বছরে কাজ অনেকটাই এগিয়ে যায়। এর পরে পুরনির্বাচনে জিতে পুরসভার ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। গত বছরের জুন মাস থেকে নতুন পুরবোর্ড কাজ শুরু করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছর পার হতে চললেও কাজ শেষ হল না।

সুইমিং পুলের চার দিকে সিমেন্টের দেওয়াল তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থাই এখনও তৈরি হয়নি। বৃষ্টির জলে পুল ভরে রয়েছে। পুলের চার দিকে আগাছা গজিয়েছে। এক পাশে নির্মাণ-সামগ্রী পড়ে আছে। কর্মসূত্রে বিধাননগরে অসংখ্য মানুষের নিত্য যাতায়াত। অনেকেরই এখানে দোকান বা বিভিন্ন রকমের ব্যবসা রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এঁদের একাংশ এবং ঝুপড়িবাসীরা সেখানে জামাকাপড় ধোয়া ও স্নান সারছিলেন। কিন্তু সুইমিং পুলের গভীরতা অনেক বেশি। তাই সতর্কতামূলক বোর্ড লাগানো হয়েছে। যদিও এতেও আদৌ কোনও কাজ হয়নি বলে এলাকার মানুষের অভিজ্ঞতা।

২০১০-এর মার্চে এই সুইমিং পুলের কাজ শুরু হয়। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৫০ মিটার লম্বা ও ২৫ মিটার চওড়া আন্তর্জাতিক মানের একটি বড় পুল, একটি ছোট পুল, দু’ধারে নিকাশি ও একটি ‘ব্যালান্সিং ট্যাঙ্ক’ তৈরি হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যে বড় পুলের কাজ শেষ হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। নির্মাণকারী সংস্থা ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকার বিল পুরসভার কাছে পেশ করেছে।

এর পরে আর কাজ এগোয়নি। নির্মাণকারী সংস্থার দাবি, বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠে লোহা, রাসায়নিক, বালি, পাথর-সহ ৩০ লক্ষ টাকার মাল পড়ে রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও অর্থ দেননি। যদিও পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, আগের বামপুরবোর্ড কাজ শুরু করিয়ে কোনও অর্থ দিয়ে যায়নি। অর্থাভাবের মধ্য দিয়ে কাজ চলছে। তা-ই কিছুটা সময় লাগছে।
অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিরোধী দল বামফ্রন্ট। তাদের অভিযোগ, নতুন পুরবোর্ড আগের বোর্ডের আমলে শুরু হওয়া কয়েকটি প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। সুইমিং পুল তার মধ্যে একটি। পুরনির্বাচন থাকায় পুরনো বোর্ড অর্থ দিতে পারেনি। নতুন পুরবোর্ডের উপরেই সে দায় বর্তায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার মালিক শুভাশিস মিশ্র বলেন, “আজ পর্যন্ত কোনও টাকা পেলাম না। গত পুরবোর্ডের আমলে ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি। তখন থেকে কাজ চলছে। কিন্তু এখনও অনেক কাজ বাকি। দামী মালপত্র কেনা হয়েছে। অসহায় অবস্থা। এ অবস্থায় কাজ এগনো মুশকিল।”
বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (ক্রীড়া) তৃণমূলের কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “বামপুরবোর্ডের সময় কাজ শুরু হয়েছিল। তারা কোনও অর্থ দেয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের কারণে ওই সংস্থাকে অর্থ দেওয়া যায়নি। তবে ইতিমধ্যেই স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসু তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে কিছু অর্থ দিয়েছেন। ওই সংস্থা আরও টাকা চেয়েছে। আমরা আরও কিছু অর্থ বরাদ্দের চিন্তাভাবনা করছি। ফের কাজ শুরু করতে বলেছি।”

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ
Previous Story

Kolkata

Next Story

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.