ট্রাফিক সিগন্যাল আছে। পুলিশ কর্মীও আছেন। কিন্তু অধিকাংশ গাড়িই তা মানছে না। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বড়িশা সখেরবাজারের মোড়ে প্রতি দিন এই অবস্থা হয়। প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয় তাঁদের। একটু এগিয়ে শীলপাড়া মোড়ের অবস্থাও প্রায় একই।
বড়িশা সখেরবাজার মোড়ে সন্তোষ রায় রোড, কে কে রায়চৌধুরী রোড ও ডায়মন্ড হারবার রোড মিশেছে। মোড়ে রয়েছে অটো ও রিকশা স্ট্যান্ড। কোনও ফুটপাথ নেই। ফলে পথচারীদের রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। অনেক গাড়ি সহজে টালিগঞ্জ যাওয়ার জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করে। একটি সরকারি ও তিনটি বেসরকারি রুটের বাস চলে। এ ছাড়া কয়েকশো অটোও চলে। স্থানীয় বাসিন্দা সৌমেন চক্রবর্তীর মন্তব্য: “হেঁটে পার হতেই ভয় করে।” |
স্থানীয় ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে বলেন, “আটো স্ট্যান্ডটি বেআইনি। ওদের দাঁড়ানোর কথা বেহালা চৌরাস্তায়। কিন্তু দাঁড়ায় এখানে। অটো স্ট্যান্ডটি সিটু নিয়ন্ত্রণ করে। রাস্তাটি খালি করার চেষ্টা করছি।” নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার রোডের গাড়িগুলি সখেরবাজার মোড়ে এসে যাত্রী তোলার জন্য দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। সেই সময় কাছের বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস বেরোলে বা ঢুকলে যানজট শুরু হয়ে যায়। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে অবস্থা চরমে ওঠে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরাও। সিটু নিয়ন্ত্রিত অটোরিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক কিশোর ঘোষ বলেন, “মানুষের প্রয়োজনে এখানে অটো দাঁড়ায়। এখন ওখানে তৃণমূলেরও অটো স্ট্যান্ড রয়েছে।”
বড়িশা শীলপাড়া মোড়ের অবস্থা আরও খারাপ। রাস্তার উপরেই কাঁচা সব্জির বাজার বসে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, দিনে দিনে এই বাজারের আয়তন বাড়ছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে বাজার করেন। প্রায় মাঝ রাস্তা থেকে বাস ধরতে হয়। বাস মাঝ রাস্তাতেই যাত্রী নামিয়ে দেয়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, মাঝ রাস্তা থেকে অটো স্ট্যান্ডে যেতে প্রচণ্ড সমস্যা হয়। নিত্যযাত্রী রুমা মিত্র বললেন, “এখানে প্রতি দিন ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পেরোতে হয়।” |
তপন সাহা এই পথে দীর্ঘ দিন বাস চালাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, “রাস্তার ধার জুড়ে বাজার বসে। ফলে মাঝ রাস্তায় বাস থামাতে হয়।” সুদীপবাবু বলেন, “ওখানে দোকানের সংখ্যা বাড়ছে। বিপদের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়েই বাজার করেন। বাজারটি সরানো দরকার।” ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের মানিক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “শীলপাড়ার মোড়টি আলো দিয়ে সাজানো হবে।” জেলা পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, “যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।”
পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা মেয়র পারিষদ (রাস্তা) তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম বললেন, “ফুটপাথের এক-তৃতীয়াংশে হকার বসবেন। হকাদের জন্য লাল, নীল, হলুদ ও সবুজ রঙের বিশেষ অঞ্চল তৈরি করা হবে। লাল অঞ্চলে কোনও হকার বসতে পারবেন না। হলুদ অঞ্চলে শুধু দিনে হকার বসতে পারবেন। সবুজ অঞ্চলে শুধু রাতে হকাররা বসবেন। নীল অঞ্চলে দিন-রাত উভয় সময়ে হকার বসতে পারবেন। আমরা কারও জীবিকার ক্ষতি করতে চাই না। কিন্তু সাধারণ মানুষের সুবিধাও দেখতে হবে। রাস্তার বেআইনি দখলদারি কোনও মতেই মেনে নেওয়া হবে না।” |