বর্গাজমি দখল ঘিরে বিবাদের জেরে প্রাণ হারালেন এক সিপিএম সমর্থক। বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে সংঘর্ষ বাধে গড়বেতার উত্তরবিল সংলগ্ন ন্যাকড়াশোল গ্রামে। অভিযোগ, মাথায় তৃণমূল সমর্থকদের লাঠির আঘাতেই প্রাণ হারান লক্ষ্মীকান্ত সর্দার (৫৫)। ৩ জন গ্রেফতার হয়েছেন। অন্য অভিযুক্তদেরও খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, ২০ বিঘে জমি ৩২ জন বর্গাদার মিলে চাষ করতেন। সবাই সিপিএম সমর্থক। লক্ষ্মীকান্তও অন্যতম। রাজ্যে পালাবদলের পরে গড়বেতাতেও এখন তৃণমূলের প্রভাব বাড়ছে। তৃণমূল সমর্থক স্থানীয় গরিব মানুষজন সেই বর্গাজমি ‘দখল’ করতে যান বলে অভিযোগ। বচসা থেকে মারামারি বাধে। দু’পক্ষই লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সময়েই মাথায় আঘাত পান লক্ষ্মীকান্তবাবু। গুরুতর আহত অবস্থায় গড়বেতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে মারা যান।
বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ বাধে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকাতেও। দু’পক্ষ মিলিয়ে আহত হন ১০ জন। দুই সিপিএম সমর্থকের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের ভর্তি করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় অফিসে বৈঠক সেরে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য কেনারাম সাউ, গোপাল মাইতি-সহ ৪ নেতা-কর্মী। সাওড়াবেড়িয়া গ্রামের কাছে তৃণমূল সমর্থকরা তাঁদের আটকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তখন আবার পাশের বাকুলদা গ্রাম থেকে সিপিএম সমর্থকরা এসে পড়ে। দু’পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। সাওড়াবেড়িয়ায় তৃণমূল সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িও ভাঙচুর হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মারে প্রবীণ কেনারামবাবু গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁর সাইকেল ও টাকাপয়সাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানার পাল্টা অভিযোগ, “বাকুলদা গ্রামে আমাদের কয়েক জন সমর্থককে সিপিএমের লোকজনই প্রথমে মারধর করে।”
এ দিকে, যে কেশপুরে এই সে-দিনও সিপিএমের নিরঙ্কুশ আধিপত্যে কংগ্রেস-তৃণমূলের অস্তিত্বই টের পাওয়া যেত না, সেখানেও এখন ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতি। সিপিএমই কোণঠাসা। এই অবস্থায় কলেজে ভর্তি ঘিরে শুক্রবার কেশপুরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দুই ছাত্র সংগঠন। দু’পক্ষেরই কয়েক জন আহত হন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। |